পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5 נשג הוואי বিশ্বাসী কক্ষচ্যুত হয়েন না, তাহার बखक রাখিবার স্থান অটুট রহিয়া যায়, তাহার মস্তকের একটী কেশও নষ্ট হয় না। যখনি মানব আত্মা বিশ্বাসরূপ কক্ষ্য হইতে ভ্ৰষ্ট হয়, তখনি তাহার পক্ষে প্রলয় উপস্থিত হয় । বিশ্বাসী কল্পনা বা বাক্যরচিত তন্তুগৃহের ছায়াতে আশ্রয় লইয়া আপনাকে নিরাপদ মনে করেন না । তিনি অনন্তপ্রেমরূপিণী জননীর স্নেহ-ক্রোড়ে শায়িত হইয়া সর্বপ্রকার বিপদাপদকে উপহাস করেন । কিন্তু অবিশ্বাসী এবং অল্পবিশ্বাসী সামান্য ঘটনাবায়ু দ্বারা শুষ্ক তৃণখণ্ডের ন্যায় ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত হয়েন । বিশ্বাসীর নামরূপ ব্রহ্মাস্ত্রের সম্মুখে স্বয়ং স্বয়ন্তুও পরাস্ত। বিশ্বাসের আগ্নেয় শক্তির আবর্তের মধ্যে পড়িলে জগৎও দগ্ধ হইয়া যাইবে । বিশ্বাসীর সম্মুখে এরূপ হিমালয় উপস্থিত হইতে পারে না,যাহাকে বিশ্বাসের বজ-প্রতিজ্ঞ৷ ভেদপূর্বক অতিক্রম করিতে অসমর্থ। স্বয়ং বঞ্জীর ও সিংহাসন বিশ্বাসীর ভয়ে কম্পিত হয় । বিশ্বাসীর ক্ষীণ কণ্ঠস্বর ধনঞ্জয়ের শঙ্খনাদের ন্যায় অমিত্রবর্গকে ভীত ও সংজ্ঞাশূন্য করে । মহাত্মা লুথারের প্রত্যেক বাক্য জৰ্ম্মাণীদেশের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত অশনি-নির্ঘোষে সমরভেরীর ন্যায় নিনাদিত হইয়া বিপক্ষদলের হৃৎকম্প উৎপাদন করিত। র্তাহার সেই ভীম গর্জনের প্রতিধ্বনি দেশ বিদেশে শ্রত হইয়া পোপ-পদানত সমগ্র ক্যাথলিক্‌ সম্প্রদায়কে ভয়দ্বেষে পরিপূর্ণ করিত। Richter রিকটার, লুথারের বিষয় বলিয়াছেন যে, অর্থাৎ, লুথারের কথাগুলি অৰ্দ্ধ-যুদ্ধের তুল্য ছিল। “His words were half-battles.” Sb్సు க_. বিশ্বাসীর মস্তক কখনও ভয়াবনত হয় না। কেবল বিনয়ই র্তাহার উচ্চ মস্তককে নম্র করিয়া থাকে । তাহার চরণ জগতের মস্তকে । তাহার মস্তক জগতের চরণে । তাহার মধ্যে ধৰ্ম্মধ্বজিত্বের লেশ মাত্র থাকিতে পারে না । একটা ইংরাজি প্রবচন আছে যে, মহামান্য সাম্রাজ্ঞ। বিক্টোরীয়ার সাম্রাজ্যে সূৰ্য্য কখনও অস্তমিত হয় না । সেইরূপ, বিশ্বাসীর অন্তরাজ্যে জ্ঞানারুণ চিরবিরাজিত। বরং অনসূয়ার ন্যায় বিশ্বাসীর প্রয়োজন হইলে, সূৰ্য্যও উদিত হইতে পরিবে না । অন্তর্জগৎ ও বহির্জগৎ উভয়ই বিশ্বাসীর সাম্রাজ্য । সমুদ্রের তরঙ্গ সিংহাসনস্থিত সম্রাটের আদেশকে অবজ্ঞা করিতে পারে, কিন্তু বিশ্বাসীর অনুজ্ঞা অগ্রাহ্য করে এমন কাহার সাধ্য ? বিশ্বাসী মৃত্যুভয়কে উপহাস করেন। আত্মার আবিনশ্বরত্বে বিশ্বাস ধৰ্ম্মবিশ্বাসের অঙ্গীভূত। র্তাহার চক্ষে মৃত্যু জন্মেরই নামান্তর ও অবস্থান্তর, এবং উচ্চতর নবজীবন প্রবেশের দ্বার স্বরূপ। সমগ্র পৃথিবীর উপর তাহার সিংহাসন । তিনি একচ্ছত্র রাজচক্রবর্তী। কাহার সাধ্য যে র্তাহার বিশ্বাসরূপ যজ্ঞাশ্বের গতিরোধ করে ? বিশ্বাসী দরিদ্র ছিন্ন কন্থাধারী চিচ্ছন্নবাস। হইলেও রাজগণের সেব্য এবং পূজ্য । স্বয়ং ভক্তাধীন হরি বিশ্বাসীর জয়পতাকা ধারণ করেন। বিশ্বাসী নেলশনের ন্যায় বলিতে পারেন “ভয় ! ভয় কি ? তাহাকে ত আমি কখনও দেখি নাই ।” ইন্দ্রিয়গণ বিশ্বাসকুশল সারথীর হস্তে সংযত ও নীরব । মনোরাজ্যের ভাবরূপ প্রজাকুল স্বভাবতই বিশ্বাসের অধীনতা স্বীকার করে ।