পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ১৮১২ ηρα বিশ্বাস ృఏృ কাশ, পুষ্পলতাবিভূষিত মরকত-শ্যামল ধরণী, দিব্য মানব মুখমণ্ডলের আনন্দজ্যোৎস্না, অভ্ৰভেদী গিরিশুঙ্গ এবং উত্তালতরঙ্গসস্কুল সাগরের ভীম সৌন্দর্য্য যেমন “অসৎ, তেমনি বিশ্বাস-নয়ন-বিহীন লোকের পক্ষে চিদাকাশের অপূৰ্ব্ব সত্যসূর্য্যের অতুল জ্যোতি, এবং আধ্যাত্মিক জগতের অনন্ত রহস্য সকলি মিথ্যা । ধৰ্ম্মবীর অগষ্টাইনকে কোন এক পৌত্তলিক বলিয়াছিল, “এই সব দেখ আমার ঠাকুর ! তোমার ঠাকুর কই, দেখাইতে পার ?” মহাত্মা উত্তর করিয়াছিলেন, “আমি যে দেখাইতে পারি না তাহা নহে, তবে তোমার সে চক্ষু কই যে দেখিবে ?” বস্তুতঃ প্রকৃত বিশ্বাসের অভাবে,হয় আমরা পরমাত্মাকে অসৎ বলি, না হয় অন্ধের হস্তি দর্শনের ন্যায়, তাহাকে খণ্ডাকারে দর্শন করিয়া, তিনি যে অখণ্ডসচ্চিদানন্দস্বরূপ তাহা বুঝিতে পারি না । স্থসজ্জিত, সহস্ৰ-বৰ্ত্তিকাদ্বারা উদ্ভাষিত দেবরাজবাঞ্ছিত রাজপ্রাসাদ ও অন্ধকারময় ক্ষুদ্র পর্ণকুটার অন্ধের নিকট সমতুল্য। বক্ৰদূষ্টি ব্যক্তি যেমন সরল পথকে অসরল জ্ঞান করে, প্রত্যক্ষ বিষয় ও প্রকৃত রূপে দেখিতে পায় না, অবিশ্বাসীর চক্ষুও তেমনি । যাহা বিশ্বাসীর নয়নে সরল ও প্রত্যক্ষ তাহা অবিশ্বাসীর নিকট অসরল ও অপ্রত্যক্ষ,এবং যাহা অসরল তাহাই সরল। অবিশ্বাসীর নিকট যে দেশ গভীর অন্ধকারাচ্ছন্ন, বিশ্বাসীর নিকট তাহ দিব্যা লোকময় । প্রতি পদে পদে অবিশ্বাসী ভয়ে জড়সড়, ও রজুকে সর্প জ্ঞান করিয়া ভীতি কর্তৃক অভিভূত হয়েন । বিশ্বাসী কাল সপকেও ভয় না করিয়া নিশ্চিন্ত চিত্তে । স্থির লক্ষ্যের প্রতি অগ্রসর হয়েন । বিশ্বাস ভীরু কোমলপ্রাণ নারীর হৃদয়ে সিংহের তেজ আনিয়া দেয়, ক্ষুদ্র দুর্বল বাহুতে মত্ত মাতঙ্গের বল সঞ্চার করিয়া দেয় । কেবল শয়নাগারে, ও শান্তির সময়েই বিশ্বাসীর বীরত্ব প্রকাশিত হয় না। বিপদকালে, অশান্তির সময়েই বিশ্বাসের প্রকৃত বলবীৰ্য্য পরীক্ষিত হয়। এমন অগ্নি-পরীক্ষা নাই যাহাতে বিশ্বাসী পশ্চাৎপদ । যুদ্ধ সময়ে, বিপদকালে তিনিই অগ্রণী । অবিশ্বাসী সভয়ে বলিতেছে “লুথার ! কদাচ এমন কার্য্য করিও না, প্রাণ হারাইবে।” “তথায় যাইও না । সেখানে ডিউক জর্জ আছে, যাইও না।” বিশ্বাসী নিভীকচিত্তে উত্তর করিতেছেন, “না, আমি যাইবই যাইব । তথায ছাদোপরি যতগুলি ইষ্টক আছে, তাহার তিনগুণ শয়তান থাকিলেও যাইব ।” “ক্রমাগত নয় দিবস ডিউক জর্জ বর্ষিত হইলেও আমি যাইব ।’ অবিশ্বাস কম্পিতওষ্ঠে ধৰ্ম্মবীরকে বলিতেছে, “এরূপ কাৰ্য্য করিও না ; তুমি নিশ্চয় প্রাণ হারাইবে।” বীরদপে দশ সহস্র প্রতিপক্ষের সম্মুখে অচল বিশ্বাস-ভূমির উপর দণ্ডায়মান হইয়া সমুদ্রনির্ঘোষে “এই পার্কার এই স্থানে উপস্থিত। কে তাহাকে নাশ করিবে কর’ বলিয়া বিশ্বাসী বক্ষ পাতিয়া দিলেন। র্তাহার বজরবে ধরণী কম্পিত হইল, সকলের প্রাণ দমিয়া গেল। পার্কারের একটী কেশও নষ্ট হইল না । বিশ্বাসী বলেন, “প্রভু আমার পালক ; আমার অভাব হইবে না। বস্তুতঃ যদিও আমি মৃত্যু-ছায়ার উপত্যকার মধ্যে দিয়া চলিয়া যাই, তথাচ আমি কোন অমঙ্গল আশঙ্কা করিব না ; কারণ তুমি আমার