পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృ్స8 বিশ্বাসীর ঈশ্বর কল্পনার পুত্তলিকা অথবা বৈদিক বা পৌরাণিক কালের দেবতা নহেন। তিনি এই স্থানেই, এইক্ষণেই রহিয়াছেন—তিনি সর্বত্র চির- | বর্তমান । তিনি দেশ কালের অতীত। । র্তাহার ঈশ্বর ভূভার হরণের জন্য ভূতকালে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন, বা ভবিষ্যতে হইবেন ভাবিয়া তিনি সুখী হইতে পারেন ==چض= علمی سے তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা না । তাহার হৃদয়-ভার-হরণের জন্য ভগ- । বান সৰ্ব্বদা তাহার প্রাণে অবতীর্ণ। ভূত বা ভবিষ্যতের দেবতা তাহাকে শান্তি দিতে পারে না। র্তাহার পিপাসা এরূপ নহে যে, পূর্বকালে হিমালয়ে শীতল নিৰ্ম্মল বারির উৎস ছিল, বা ভবিষ্যতে থাকিবে ভাবিলেই তাহ নিবৃত্ত হইবে । তিনি এই | দণ্ডে সৰ্ব্বত্র অবতীর্ণ শান্তিদাতার হস্ত হইতে অমৃতবারি লাভ করিয়া প্রাণ ভরিয়া । তৃপ্তিস্থধা পান করিতে চাহেন। তাহার উপাসনা তীর্থে, গুহায়, মন্দিরে, অথবা কোন স্থানে বা কালে নির্দিষ্ট নহে। বিশ্বাসীর পবিত্র শরীরই র্তাহার ভজনালয়। পুষ্পের সুরভি নিশ্বাসের ন্যায় তাহার আত্মাগুহা হইতে অহনিশ উপাসনার স্বাস উথিত হইয়া থাকে । বস্তুতঃ বিশ্বাসীর পক্ষে তাহার আত্মাই প্রকৃত ব্রহ্মমন্দির । ব্ৰহ্মই আত্মার গৃহ । আত্মাই ব্রহ্মের গৃহ । বিশ্বাসীর নিকট তিনিই একমাত্র অদ্বিতীয় শরণ্য, বরেণ্য এবং উপাস্য । তিনিই একমাত্র সখা সুহৃদ, সহায় সম্বল, আত্মীয় বন্ধু, ও জগদগুরু। তিনিই একমাত্র পাতা, পরিত্রাতা, আদ্যন্তরহিত জগৎপ্রসবিতা । বিশ্বাসী তাহার নিকট যাহা চাহেন, তাহাই পাইয়া থাকেন । তিনি নাই নহে? ইহাই বিশ্বাসের প্রারম্ভ। এই অঙ্কুর হইতে বিশ্বাস-বৃক্ষেব উৎপত্তি। এই বৃক্ষ যতই বৃদ্ধি এবং ফৰ্ত্তি २२ कछ, a छtन লাভ করিতে থাকে, ততই পল্লবোদগমের ন্যায় এক একটী ঈশ্বরের স্বরূপ প্রকাশিত হইতে থাকে । o ধৰ্ম্মজীবনের এই বিশ্বাসমূল, যতই শুষ্ক হইতে থাকিবে, ততই ধৰ্ম্মজীবন নীরস নিজীব, এবং বৃদ্ধিতেজোহীন হইতে থাকিবে । উহা বিনষ্ট হইলেই ধৰ্ম্মজীবনের শেষ পরিচ্ছেদ সমাপ্ত হইল । আমরা সামান্য রিপুর তাড়নায় ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়ি, সামান্য বিপদে আপনাকে অসহায় গতিহীন, বিবেচনা করি ; কিন্তু বহু ঝড় ও বর্ষার মধ্যেও বিশ্বাসী হিমালয়ের ন্যায় স্থির, আচল এবং প্রশান্ত ভাবে থাকেন। তিনি নিত্য আশাপূর্ণ এবং অবিচলিতচিত্ত। মুক্তি বিশ্বাসীর করতলন্যস্ত । যিনি প্রাণের প্রাণ ও আত্মার প্রাণবায়ু তিনিই তাহার মুক্তিদাতা । যিনি জগতের আশ্রয়, র্যাহার ইচ্ছাতে অগণ্য রবিতারক শূন্যে দোদুল্যমান রহিয়াছে, যিনি পদদলিত ক্ষুদ্র কীটের সেবার জন্য অশেষ প্রকার আয়োজন, এবং মেঘ, বায়ু, সূৰ্য্যাদি সকলকে নিয়োজিত করিয়াছেন, তিনি কি জীবশ্রেষ্ঠ মনুষ্যের জন্য কোনরূপ মঙ্গল বিধান করেন নাই, বা করিবেন না ? যিনি প্রত্যেক ইন্দ্রিয়ের ভোগের জন্য প্রতি মুহূর্তে অগণ্য বিধান করিতেছেন, তিনি কি মানব আত্মার বিষয়ে উদাসীন থাকিতে পারেন ? যিনি তরুলতাগণকে নিত্য নূতন সাজে সজ্জিত করিতেছেন, পুরাতন জীর্ণবাস ঝরাইয়া দিয়া, মরকত-শ্যামল নব বসন পরাইয়া দিতেছেন, তিনি কি মলিন, অসহায় আত্মাকে পবিত্রতার শুভ্র বসন পরাইয়া দিবেন না ? বিশ্বাসীর ঈশ্বর রোগীকে স্বাস্থ্য, অন্ধকে চক্ষু, বধিরকে শ্রবণ, খঞ্জকে চলিবার শক্তি, এয়ং পাপীকে মুক্তি প্রদান করিয়া থাকেন।