পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধি سواده S নী পত্রিকা s२, कछ a छान ইহঁাকে লাভ করা যায় ॥ র্যাহারা পাপমুক্ত যতি, তঁাচারাই শরীরের অন্তরে অাতুাতে সেই জ্যোতিৰ্ম্ময় সত্যদেবতাকে দেখিতে পান । এই সত্য স্বরূপ পরব্রহ্মই সকলকে জয় প্রদান করেন । এই মর্ত্য বিষয়ভোগে কখন জয় লাভ হয় না । অমরত্বে যাইবার যে পথ, তাহা সত্যের দ্বারা, জ্ঞানের দ্বারা বিতত রহিয়াছে—ইহাকেই ব্রহ্ম-পথ বলে । ব্রহ্মকৃপাবলে মুক্তি লাভে নিঃসন্দেহ হইয়। ঋষিরা ব্রহ্মোৎসব করিতে লাগিলেন। এই ব্রহ্মোৎসবকে যোগোৎসবও বলা যাইতে পারে। কারণ ইহা তাহারা নির্জনে একাকী সম্পন্ন করিতেন—ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রহ্মধ্যান দ্বারা হৃদয়ের অন্তস্তলে ঋষিদি গের যে প্রেমানন্দের উচ্ছাস উঠিত তাহা । র্তাহার হৃদয়েই গুঢ় রূপে সম্ভোগ করিতেন। সেই উচ্ছাসের কণামাত্র মুখশ্ৰী দিয়া ব্রহ্মবৰ্চস নামে বাহির হইত। যে পৰ্ব্বত গুহায় থাকিয়া তাহারা এই উৎসব ভোগ করিতেন সে গুহা দীপ্তিধারণ করিত, যে অরণ্যে থাকিয়া তাহারা এই উৎসব ভোগ করিতেন সে অরণ্য ফুল ফলে অবনত হইয়া গম্ভীর ঐ ধারণ করিত। এবং যে প্রান্তরে বসিয়া ইহা ভোগ করিতেন সে প্রান্তর রসোল্লাসে হাস্য করিতে থাকিত । এই যে অমৃত লাভ ও ব্রহ্মীনন্দ উপ ভোগের কথা বলা হইল, ইহা উপনিষৎ । প্রতিপাদিত সনাতন সত্য । অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, এই সনাতন সত্য লাভ ও সম্ভোগের জন্য এবং জীব নের পরম মঙ্গল সাধনের জন্য গৃহদ্বার উন্মুক্ত ছিল না। এমন যে উৎকৃষ্ট ংসারাশ্রম, যাহা হৃদয়-কুসুম-সোরভ পুত্র কন্যা জায়, মূর্তিমান প্রেমানুরাগ স্বরূপ ভ্রাতা ভগিনী বন্ধু, জাগ্রৎ শ্রদ্ধা ভক্তির আস্পদ পূজনীয় পিতা মাতা অাচাৰ্য্য এপং কল্যাণবিধাতৃ অতিথি অভ্যা গত জনের বসতিস্থল ; যেখানে মনুষ্য জন্ম গ্রহণ করে, প্রজাকাম পরমেশ্বরের শুভ ইচ্ছা সাধনের জন্য পবিত্র উদ্বাহবন্ধনে স্ত্রী পুরুষ সম্মিলিত হয়,যেখানে পরলোকগত জনের প্রতি শ্রদ্ধা ও অনুরাগ প্রদর্শনের জন্য শান্তিকর শ্রাদ্ধকার্য্যের অনুষ্ঠান হয় এবং যেখানে শরীর ধারণের জন্য কৃষি বাণিজ্য সম্পন্ন হয়, সেই কল্যাণ ক্ষেত্র । গৃহে সকলে সমবেত হইয়া সেই মুক্তিদাতা পরব্রহ্মের উপাসনা করিবার বিধি প্রচলিত ছিল না । যে ব্রহ্মোপাসনায় কণ্টকময় অরণ্য ও পুলকিত হয় সেই ব্রহ্মোপাসনা গৃহে হইলে সে গৃহ কত অধিক শ্ৰীসম্পন্ন হয় তাহা ভাবিয়া দেখ । কিন্তু সত্যং শিবং সুন্দরং পরাৎপর ব্রহ্মের অপার করুণ ও আশ্চৰ্য্য মহিমা । তিনি উপযুক্ত সময় দেখিলেই উন্নতির পথ খুলিয়া দেন। পূর্বকার ঋষির বনে গিয়া অমৃত লাভের জন্য ব্রহ্মজ্ঞান ও ব্রহ্মধ্যান অনুশীলন করিতেন। ব্রহ্মজ্ঞান পূর্বে অরণ্যেই আবদ্ধ ছিল, এখন তাহা পরিবারের মধ্যে প্রচারের জন্য তিনি আর এক শান্ত সমাহিতচিত্ত ঋষিকে প্রেরণ করিলেন। সেই বৃদ্ধ ঋষি এখনো জীবিত অাদর্শে মনুষ্য-আত্মার গতি নির্ণয় করিতেছেন । তিনিই পরিবারে ব্রহ্মোপাসনার বিধি প্রচার করিয়াছেন। অরণ্য হইতে উপনিষদের ব্রহ্মজ্ঞানকে গৃহে আনিয়া স্থাপন করিয়াছেন; একাধারে বিষয় মুখ ও ব্রহ্মানন্দ উপভোগের ব্যবস্থা করিয়া দিয়া, জ্ঞানী অজ্ঞান, সাধু অসাধু এবং গৃহী ও সন্ন্যাসী সকলের সমান কল্যাণ সাধন করিয়াছেন । এই মহর্ষিই আমার পরম পূজ্যপাদ গুরু শ্ৰীমন্মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ।