পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कगंडन $v*९ কলাপ যাহাতে অষ্টাদশ-প্রকার অকিঞ্চিংকর কৰ্ম্ম অন্তভূত, এই সমস্তকে র্যাহার শ্রেয়-বোধে অভিনন্দন করেন, সেই সকল মূঢ় ব্যক্তিরা জর মৃত্যুর বশতাপন্ন হন ।” ইহা সত্ত্বেও লোকালয়ে হোম যাগ যজ্ঞাদি প্রভূত ক্রিয়া-কাণ্ড যেমন চলিতেছিল সেইরূপই চলিতে লাগিল—এবং অদ্যাপি তাহা জনসমাজে বিবাহাদি সকল শুভকার্যেরই সঙ্গের সঙ্গী ; ব্রহ্মজ্ঞান লোকা লয়ের বহির্ভাগে অরণ্যে নির্বাসিত হইল। কিন্তু যাহাই হউক্‌, অতি পুরাতন কাল হইতে ব্রহ্মজ্ঞান আমাদের দেশের গিরিগুহা অরণ্যের গভীর প্রদেশে প্রাণপণ যত্নে পরিপালিত হইয়া আসিতেছে। সেই পুরাতন ঋষিতপস্বীদিগের জ্ঞান-গোচর সত্য সুন্দর মঙ্গল পুরুম পরব্রহ্মের উপাসনা অরণ্য হইতে ফিরাইয়া অানিয়া নগরে নগরে, পল্লীতে পল্লীতে, গৃহে গৃহে, প্রতিষ্ঠিত করিয়া--ভারত-ভূমির ভাগ্যে কখন যাহা ঘটে নাই এইরূপ একটি মহত্তম কল্যাণ সাধন করিবার জন্য ব্রাহ্মধৰ্ম্ম আমাদের দেশে আবিভূত হইয়াছে। ইতিপূর্বে বলিয়াছি যে, ব্রাহ্মধৰ্ম্মের দুইটি চিরাভিলষিত ফল এবং তাহার প্রথমটি পরব্রহ্মের প্রতি প্রীতি। বর্তমান জনসমাজে বিশুদ্ধ ঈশ্বর-প্রীতি ফলিত করিয়া তোলাই ব্রাহ্মধৰ্ম্মের প্রথম সংকল্প। সাধারণতঃ সকল দেশেরই শ্রদ্ধাবান জ্ঞানী ব্যক্তিরা এৰং বিশেষতঃ আমাদের দেশের প্রাচীন আরণ্যক ঋষির এই কথাটি ভূয়োভুয় লোকের মনে নিবিষ্ট করিয়া দিবার জন্য চেষ্টা পাইয়। আসিতেছেন যে, আত্মার অভ্যন্তরে পরমাত্মাকে উপলব্ধি করিয়া তাহাকে প্রীতি ভক্তি সমর্পণ করাই মনুষ্যের প্রধান পুরুষাৰ্থ ; আর র্তাহাদের এই কথাটি শুদ্ধ কেবল জন-শ্রুতি সাম্বৎসরিক ব্রাহ্মসমাজ । ২১৩ o-o-o মাত্র নহে–কথার কথা মাত্র নহে ; উহ যে কেমন সত্য—সকলেই তাহ পরীক্ষাদ্বারা স্ব স্ব অন্তঃকরণে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে উপলব্ধি করিতে পারেন। ঈশ্বরের মূৰ্ত্তিকল্পনা কেবল কল্পনা-মাত্র কিন্তু জীবাত্মা এবং পরমাত্মা উভয়েই কল্পনার অতীত অথচ শুদ্ধ-চিত্ত সাধকের নিৰ্ম্মল-জ্ঞানে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে – তীয়মান । বেদে আছে “জ্ঞান-প্রসাদেন বিশুদ্ধসত্ত্বস্ততস্তু তং পশ্যতে নিষ্কলং ধ্যায়মানঃ” জ্ঞানের প্রসন্নতায় যখন বুদ্ধি পরিশুদ্ধ হয় তখন সাধক ধ্যানযুক্ত হইয়া সেই নিরবয়ব পরব্রহ্মকে দর্শন করেন ; ইহার তাৎপৰ্য্য এই যে, সাধক অন্তঃকরণকে নিষ্পাপ এবং পরিশুদ্ধ করিলেই পরমাত্মাকে ধ্রুব সত্যরূপে সাক্ষাৎ জ্ঞানে উপলব্ধি করিতে পারেন। জ্ঞানবান মনুষ্যকে এ কথা শিখাইয়া দিতে হয় না যে, তাহার অন্তরে জ্ঞান জাগিতেছে ; অতএব আপন অন্তরস্থিত সাক্ষাৎ জ্ঞান মনুষ্যের প্রত্যয়-ভাজন না হইবার কোনো কারণ নাই। সেই সাক্ষাৎ জ্ঞানে আপনা-হইতেই প্রকাশ পায় যে, সকল কারণের অভ্যন্তরে একমাত্র মূল কারণ, সকল আধারের অভ্যন্তরে একমাত্র মূলাধার, সকল আত্মার অভ্যন্তরে একমাত্র অদ্বিতীয় অন্তরাত্মা অবস্থিতি করিতেছেন। এই জন্য এ কথা বুঝিতে কাহারো ক্ষণমাত্রও বিলম্ব হয় না যে, কোনো পরিমিত বস্তুই পরিমিত বস্তুর মূল কারণ হইতে পারে না—বীজ বৃক্ষের মূল কারণ হইতে পারে না ; কোনো পরিমিত বস্তুই পরিমিত বস্তুর মূলাধার হইতে পারে না—পৃথিবী বৃক্ষের মূলাধার হইতে পারে না ; কোনো পরিমিত বস্তুতেই আত্মার তৃপ্তি হুইতে পারে না ; সসাগর। পৃথিবীর ঐশ্বৰ্য্যেও নহে—