পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/২১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইন্দ্রের অমরাবতীতেও নহে; কেবল যিনি সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম—যিনি আত্মার অন্তরাত্মা তাহাতেই আত্মার চিরস্থায়ী আনন্দ প্রতিষ্ঠিত রহিয়াছে । আত্মা এবং পরমাত্মার মধ্যে এরূপ ঘনিষ্ট এবং নিগুঢ় প্ৰেম-সম্বন্ধ যে,যদি জিজ্ঞাসা কর “জীবাত্মা কাহাকে চায়” তবে তাহার এক উত্তর এই যে, পরমাত্মাকে । যদি জিজ্ঞাসা কর যে, পরমাত্মা কি উদ্দেশে জগৎ স্বষ্টি করিলেন তবে তাহার এক উত্তর এই যে, জীবাত্মার উন্নতির উদ্দেশে । ফলেও এষ্টরূপ দেখা যায় যে, গভীর রোমন্থন করিয়াই সন্তুষ্ট ; পক্ষীরা নীড় নিৰ্ম্মাণ করিয়াই সন্তুষ্ট ; মধুমক্ষিক মধু চয়ন করিয়াই সন্তুষ্ট কিন্তু মনুষ্যের আত্মা সেরূপ কিছুতেই সন্তুষ্ট হইতে পারে না ; অতীব উপাদেয় সামগ্ৰী ভোজন করিয়া ও সন্তুষ্ট হইতে পারে না— বৃহদায়তন অট্টালিকায় বাস করিয়াও সন্তুষ্ট হইতে পারে না, প্রভুত ধন রত্ন সঞ্চয় করিয়াও সন্তুষ্ট হইতে পারে না । মনুষ্যের সম্মুখ দিয়া দৃশ্যের পর দৃশ্য স্রোতের ন্যায় চলিয়া যাইতেছে—যাহা যাইতেছে তাহা আর ফিরিতেছে না ; তাহার মধ্যে এক বস্তুকে ছাড়িয়া অার এক বস্তুকে ধরা, দ্বিতীয় বস্তুকে ছাড়িয়া তৃতীয় বস্তুকে ধরা, এরূপ করিয়া রাশি রাশি পরিমিত বস্তুর মধ্যে যুগযুগান্তর কাল ঘুরিয়া বেড়াইলেও মনুষ্যের আত্মা শান্তি ও তৃপ্তির দিকে একপদও অগ্রসর হইতে পারে না ; চলাচল সমস্তের মধ্যে ধ্রুব সত্য পরমাত্মাকে উপলব্ধি করিয়া তাহাকে চাওয়াই মনুষ্যের একমাত্র শান্তি-সোপান । পরমাত্মাকে চাওয়া স্বষ্টির আর কুত্ৰাপি সম্ভবে না – কেবল জীবাত্মাতেই সম্ভবে এবং তাহারই জন্য জীবাত্মা স্থষ্টির সর্বোচ্চ শিখরে অধি s२, कन्न s कोत्र ళొsూe=ఆకాశః =ణితాత* ষ্ঠিত । আর এক দিকে দেখা যায় যে, জীবাত্মা যেমন পরমাত্মার জন্য ব্যাকুল, পরমাত্মা তেমনি জীবাত্মাকে প্রেমদান করিবার জন্য এই বিচিত্র ব্রহ্মাণ্ড স্থজন করিয়াছেন ;—শরীরের উপাদান্ত-স্বরূপে পঞ্চভুত স্বজন করিয়াছেন, প্রাণের উপজীবিকা-স্বরূপে প্রাণ-পূর্ণ উদ্ভিদ রাজ্য স্বজন করিয়াছেন, মনের প্রতিকৃতি-স্বরূপে পশু পক্ষী স্বজন করিয়াছেন ; প্রথমের উপরে দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন, দ্বিতীয়ের উপরে তৃতীয় প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন এবং সকলের উপরে চিরোন্নতি-শীল জীবাত্মাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়া স্বষ্টির প্রকৃত অর্থ এবং তাৎপর্য্য অকথিত ভাষায় ব্যক্ত করিয়াছেন । এইরূপ পরমাশ্চর্য্য যেখানে সোপানের ব্যবস্থা সেখানে উপবেশনশালা আরো কি না জানি অত্যাশচর্য্য ব্যাপার । জ্ঞানই জীবাত্মার উপবেশনশালা এবং নিষ্কাম পবিত্র প্রেমই জীবাত্মার অন্তঃপুর-নিকেতন। স্বষ্টির মধ্যে জ্ঞানের নায় উৎকৃষ্ট পবিত্র সামগ্ৰী আর নাই— “নহি জ্ঞানেন সদৃশং পবিত্ৰমিছ বিদ্যতে" ইতি ভগবদগীতা । এবং জ্ঞানের মধ্যে ঈশ্বরপ্রীতির ন্যায় উৎকৃষ্ট পবিত্র সামগ্রী আর নাই। জীবাত্মা উপরি-উক্ত ঐ সকল সোপান দিয়া জ্ঞান-মন্দিরে অধিরূঢ় হইয়া প্রেমের নিভূত অন্তঃপুরে পরমাত্মার সহিত ভূমানন্দ উপভোগ করিবে এবং সেই আনন্দামৃতে পরিপুষ্ট হইয়া উন্নতি হইতে উন্নতিতে পদার্পণ করিবে—ইহাই স্বষ্টির চরম উদ্দেশ্য । জীবাত্মা যতক্ষণ না পরমাত্মাকে দেখিতে পায়, ততক্ষণই তাহার মোহ, ততক্ষণই তাহার শোক , পরমাত্মাকে দে খিতে পাইলে জীবাত্মার সকল মোহের তিরোধান হয়—সকল শোকের অব