পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ V )● ২৩ mis „ZEME বাক্যে ব্রাহ্মাপাসনার শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপন্ন করিতেছে । “সৰ্ব্বে বেদা যং পদমামনস্তি । তপাংসি সৰ্ব্বাণিচ যদ্বদন্তি ॥ যদিচ্চন্তে ব্রহ্মচর্য্যঞ্চরস্তি” সকল বেদ যাহাকে কীৰ্ত্তন করিতেছে, র্যাছাকে লাভ করিবার জন্য সকল তপস্যা, র্যাহার প্রাপ্তিকামনায় লোক সকল ব্রহ্মচর্য্য ব্রত ধারণ করিতেছে, তাহার উপাসনা বাতীত মানবের আর মুক্তি নাই, ইহাই হিন্দুশাস্ত্রের সার উপদেশ এবং হিন্দুধৰ্ম্মের মুখ্য ভাব । আমাদের দেশের সাধারণ লোকের অার এক সংস্কার এই যে, ব্রহ্মোপাসনা সংসারী গৃহস্থ লোকের ধৰ্ম্ম নয়, এবং ত্রহ্মোপাসক ব্যক্তির শীত | উত্তাপ স্থগন্ধ দুৰ্গন্ধ ক্ষুধা পিপাসাদি শারীরিক ধৰ্ম্ম থাকিবে না । ইহা নিতান্ত অযৌক্তিক ও অশাস্ত্রীয় কথা । জনক বশিষ্ঠ নারদ সনৎকুমার ভৃগু বরুণ ব্রহ্মজ্ঞানী ও ব্রহ্মোপাসক ছিলেন । তাহারা শরীর ধারণ করিতেন এবং শরীরধারণোপযোগী লেীকিক ব্যাপারও সম্পন্ন করিতেন । ব্রহ্মবাদী যাজ্ঞবল্ক্য ঋষির কাত্যায়নী ও মৈ ত্ৰেয়ী নাম্নী দুই পত্নী ছিলেন । তিনি । র্তাহাদিগকে ব্রহ্মবিদ্যার উপদেশ করিয়া- | ছিলেন । মহাগৃহস্থ শৌনক আঙ্গিরসের । ব্যাপী দশ পৌর্ণমাস, অশ্বমেধ গোমেধ রাজর্ষি জনক ব্রহ্মোপাসক হইয়াও রাজ্য- | নিকট ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করিয়াছিলেন । পালন করিতেন। শ্ৰীকৃষ্ণ গৃহস্থ অৰ্জ্জুনকে গীতা দ্বারা ব্ৰহ্মজ্ঞান শিক্ষা দিয়াছিলেন, অৰ্জ্জুন ব্রহ্মোপদেশ লাভ করিয়া কেবল গৃহস্থ ছিলেন না, শৃঙ্খলার সহিত রাজ্য পরিচালন করিয়াছিলেন । প্রাচীন কালে বেদোক্ত যজ্ঞাদিক্রিয়াত্যাগী একদল যে ব্রহ্মনিষ্ঠ গৃহস্থ ছিলেন,মনুসংহিতার টীকাকার কুলুকভট্ট "ব্রহ্মনিষ্ঠানাং বেদসন্ন্যা হিন্দুধৰ্ম্ম ও ব্রহ্মপূজা छाँठेएलन । সিনাং গৃহস্থানাং” এই বাক্যে তাহ স্বীকার করিয়াছেন । এবং মনু এই সকল কৰ্ম্মত্যাগী ব্রহ্মনিষ্ঠ গৃহস্থের প্রতি যাগযজ্ঞের পরিবর্তে কেবল ব্রহ্মজ্ঞান ও শমদমাদি সাধনের যে বিধি দিয়াছেন, তাহাই উল্লেখ করিয়াছেন। আর্য্য শাস্ত্রে গৃহস্থ ব্রহ্ম চারী সন্ন্যাসী সমুদায় আশ্রমীর প্রতি ব্রহ্মোপাসনার প্রচুর উপদেশ রহিয়াছে। প্রাচীন ভারতবর্ষে জ্ঞানোন্নত অাৰ্য্যসমাজে সজীব ব্রহ্মোপাসনাই প্রচলিত ছিল । কিন্তু কালের পরিবর্তনে লোকসমাজের অজ্ঞানতাবশতঃ নানাবিধ ধৰ্ম্মবিপ্লব উপস্থিত হইয়া, ভারতসমাজ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হইল। সাধারণ জনসমাজ যাহাতে উন্নত জ্ঞানের অধিকারী না হইয়াও নিয়ম পূৰ্ব্বক নিত্য নৈমিত্তিক শ্রোত গুহ্য অনুষ্ঠান সকল পালন করিয়া ধৰ্ম্মরক্ষা করিতে পারে এই জন্য লোকহিতকামনায় বেদব্যাসশিষ্য মহর্ষি জৈমিনি ও স্মৃতিকারগণ কৰ্ম্মকাণ্ডীয় শ্রুতি সকল অবলম্বন করিয়া যাগ যজ্ঞাদি ক্রিয়া কলাপের বিধি ব্যবস্থা ও কৰ্ম্মমীমাংসা দর্শন প্রণয়ন করিলেন। জৈমিনি বলিলেন, বেদ কেবল ক্রিয়ার শাস্ত্র । “আহ্মায়স্য ক্রিয়ার্থত্বাৎ” কেবল ক্রিয়ার জন্যই বেদের প্রতিষ্ঠা। এই সময়ে দীর্ঘকাল প্রভূতি যজ্ঞক্রিয়া অনুষ্ঠিত হইতে আরম্ভ হইল, যাজ্ঞিক পুরোহিতগণ প্রবল হইয়া জনসমাজ হইতে তত্ত্বজ্ঞানের আলোচনা অন্তৰ্হিত হওয়াতে ভারতাকাশ আবার যজ্ঞধূমে সমাবৃত হইল, ধৰ্ম্মের নামে বহুবিধ নৃশংস ব্যাপার সঙ্ঘটিত হইতে লাগিল । বৌদ্ধ ও নাস্তিকদিগের বুদ্ধিবিপ্লব হইতে সনাতন আর্য্যধৰ্ম্মকে রক্ষা করিবার জন্য বেদকে মূল করিয়া