পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y3ण ७४०२ এখন বোধ হয় সকলে বুঝিয়াছেন যে ব্রাহ্মধৰ্ম্মের প্রকৃত মন্তব্য কথা কি ?— ‘ব্রাহ্মধৰ্ম্মের প্রকৃত মন্তব্য কথা এই যে, যে জাষ্টির যেরূপ তজাতীয় প্রথা তাহ। সেইরূপই থাকুক, যে কুলের যেরূপ কৌলিক প্রথা তাহ সেইরূপই থাকুক, তাহার প্রতি হস্তক্ষেপ করিবার কোন প্রয়োজন নাই ; কেবল সেই সকল প্রচলিত অনুষ্ঠানের মধ্য হইতে পরিমিত দেবতাগণের উপাসনা সমূলে উঠিয়া গিয়া তাহার স্থলে বিশুদ্ধ রহ্মোপাসনা অধিরূঢ় হউক, তাহা হইলেই ব্রহ্মোপাসক ভক্তজনগণের বিশুদ্ধ ধৰ্ম্মব্রত অব্যাহত থাকিবে ।” পরিশেষে কৃতবিদ্য হিন্দুসন্তানগণকে জিজ্ঞাসা করি যে র্তাহারা নিরাকার পরব্রহ্মের উপাসনা এবং সুতরাং অপৌত্তলিক হিন্দু অনুষ্ঠান আচরণ করা শ্রেষ্ঠ কৰ্ম্ম জানিয়া ও কেন বৃথা আত্মাকে নিরুদ্যম ও নিরুৎসাহ করিয়া রাখেন ? আলোক দেখিয়া ও আলোকের সাহায্য গ্রহণ করেন না কেন ? এবং ব্রাহ্ম সাধারণকে অনুরোধ করি, তাহারা আর হিন্দুধৰ্ম্মে বিপ্লব আনয়নের চেষ্টা না করিয়া হিন্দুশাস্ত্রের মধ্য দিয়া, হিন্দু অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়া, হিন্দু ব্যবহারের মধ্য দিয়া এবং হিন্দুভাবের মধ্য দিয়া ব্রাহ্মধৰ্ম্ম প্রচার করিতে প্রয়াসবান হউন, অচিরেই তাহার শুভ ফল লাভ করিবেন । সে দিন কি আনন্দের দিন হইবে যেদিন গৃহে গৃহে ওঁএকমেবাদ্বিতীয়ং এর জয়ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হইবে—সে দিন কি অতুল আনন্দের দিন—ভাবিতে হৃদয় পুলকিত হইয়া উঠে । ও শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ হরি ওঁ । ঐচৈতন্য ও তাহার শিষ্যগণ ২৩৩ ঐচৈতন্য ও তাহার শিষ্যগণ । সনাতন গোস্বামী । (পুৰ্ব্ব প্রকাশিতের পর) এইরূপে শ্রীচৈতন্যের সহিত সনাতন গোস্বামীর বিবিধ তত্ত্বালাপ হইতে লাগিল । চৈতন্য বলিলেন, হে সনাতন ! ভগবৎকৃপা তোমাতে পরিপূর্ণ ; তুমি সকল তত্ত্বই অবগত আছ । দৃঢ়তার জন্য প্রশ্ন করা সাধুর স্বভাব । ভক্তি প্রবর্তন করিবার তুমিই যোগ্য পাত্র । তথাপি তোমাকে এই সকল তত্ত্ব বলিতেছি শ্রবণ কর । শ্রীহরির নিত্য দাসত্বই জীরের যথার্থ স্বরূপ । জীব মোহবশে আপন স্বরূপ বিস্মৃত হইয়া মায়ার অধীন হয় এবং নানা প্রকারে সংসার-দুঃখ ভোগ করে । এই বহির্মুখ জীবের অশেষ দুৰ্গতি। অপরাধী ব্যক্তিকে রাজা যেরূপ নদীজলে ডুবায় ও উঠায় ; মোহমায়া সেইরূপ ভগবদ্বিমুখ আত্মবিস্মৃত মানবকে কখনও বা স্বৰ্গভোগে প্রলুব্ধ করে, কখনও বা ভীষণ নরকে নিমগ্ন করে । মায়ামুগ্ধ জীবের উদ্ধারের জন্যই সাধু, শাস্ত্র ও গুরুর আবশ্যকতা । শাস্ত্রের উপদেশ, ভগবদ্ভক্ত সাধু ব্যক্তির কৃপা ও পবিত্র সহবাসে জীব ঈশ্বরোম্মুখ হয় এবং মোহের অবসানে পরমেশ্বরই “প্ৰভু ও পরিত্রাতা”এই জ্ঞান হয়। ভক্তিশাস্ত্রের উপদেশ এই যে, জ্ঞানকৰ্ম্ম যোগ পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র শুদ্ধ ভক্তি যোগে ভজনা করিলেই শ্রীহরিকে লাভ করা যায়। ধন হস্তগত হইলে যেমন পার্থিব সুখ সৌভাগ্য লাভ হয় এবং সুখ লাভ হইলেই দুঃখের নিবৃত্তি হয়; সেইরূপ বিশুদ্ধ অহৈতুকী ভক্তিতে পরমেশ্বরে প্রেম উৎপন্ন হয় ও পরমেশ্বরের প্রেমমাধুর্য্যে