পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ ১৮১২ manamivićnωπαπα জাতির সমস্ত লোক বড়ই অসুখে ও অশান্তিতে কালাতিপাত করে । মনুষ্য মন স্বভাবতঃ রক্ষণশীল । কোন বিসম পরিবর্তন হইলে চাঞ্চল্য ও অস্থিরতা মনুষ্য মনের ন্যায় জাতীয় মনকেও আকুল করিয়া তুলে । যতদিন সেই জাতি পূৰ্ব্বসংস্কার ও নুতন সংস্কারের মিশ্রণ দ্বারা কতকগুলি সংস্কার ও আদর্শ পুনরায় স্বীয় হৃদয়ে বদ্ধমূল করিয়া লইতে না পারে তত দিন সে জাতির আকুলত উদ্বিগ্নতা ও অশান্তি যায় না । পুরাতনে বিশ্বাস যায় কিন্তু বহু দিনের মমতায় তাহা ত্যাগ করা যায় না, নূতন ভাল লাগে বটে অথচ তাহ গ্রহণ করিতে যেন কেমন কেমন বোধ হয় । পুরাতন সংস্কার মন্দ জানিয়াও ছাড়িতে পারা যায় না, নূতন সংস্কার ভাল জানিয়া ও তাহা গ্রহণ করিতে পারা যায় না ; অথচ সংস্কার স্থির না হইলে ও সংস্কারানুযায়ী কাৰ্য্য করিতে না পারিলে প্রাণের উদ্বিগ্নতা দূর হয় না ; হৃদয়ে শান্তি পাওয়া যায় না । জাতীয় জীবনের পরিবর্তনকালে লোক এইরূপ সংশয় সঙ্কটে পতিত হয়, কাজেই অসুখ ও আশান্তির ছায় তাহাদের হৃদয় জুড়িয়া লয়। আমাদের জাতীয় স্রোত অনেক দিবস হইতে প্রবাহিত দিনেও তাছার নিবৃত্তি হয় নাই । ক্ষারমিশ্রিত জলে আমু মিশাইলে সেই মিশ্রিত জল যেরূপ ফেনার সহিত কঁাপিয়া উঠে ও বিশেষরূপে আলোড়িত হয় সেইরূপ ইংরেজী শিক্ষার সহিত প্রথম মিশ্রণে আমাদের পূর্ব সংস্কারাদি সমূলে বিলোড়িত হইয়াছে। কিন্তু ফাঁপা ও ফেন৷ মিশিয়া গেলে সেই জল যেমন স্থির ভাব ধারণ করে আমাদের সংস্কারাদি পরি শিক্ষিত সম্প্রদায়ের আশা ও দুঃখের কথা રેતેો বর্তিত হইয়া এখনও সেরূপ স্থিরভাব ধারণ করিতে পারে নাই । এই পরিবর্তনাবৰ্ত্ত শেষ হইয়া সমাজ-সমুদ্রের সংস্কার-বারি স্থায়ী স্থির ভাব ধারণ করিতে যে কত দিন লাগিবে তাছা ঠিক বলা যায় না । ঘে পৰ্য্যন্ত কোন জাতির সমস্ত লোকের ংস্কার রুচি রাতি নীতি সুখ ও স্বাধীনতার অাদর্শ অনেকটা একরূপ না হয় সে পর্যন্ত সেই জাতির লোকে আশানুযায়ী সুখ ও শান্তি পাইতে পারে না । আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকেই যে অস্থখে ও অশান্তিতে জীবন কাটাইতেছেন তাহার ইহাই প্রধান কারণ বলিয়া অনুমিত হয় । এখনকার কুত বিদ্য সম্প্রদায় সম্পূর্ণরূপে ইংরাজী ধরণে শিক্ষিত ও দীক্ষিত হইতেছেন । র্তাহাদের রুচি আকাঙ্ক্ষা ও জীবনের লক্ষ্যও ইংরে জদের রুচি আকাঙক্ষ ও জীবনের লক্ষ্যের অনুরূপ হইতেছে । সমাজে ইংরেজী ধরণের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের ভাগ বেশী নয় । সমাজের অধিকাংশ লোকের রুচি আকাঙ্ক্ষা জীবনের লক্ষ্য ও শিক্ষা স্বতন্ত্র প্রকারের । শিক্ষিত সম্প্রদায়ের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের পরিবর্তন- | সমাজের পরিবর্তন হয় নাই। আমরা যাহাকে বঙ্গসমাজ বলি সে সমাজ কৃত বিদ্য বাঙ্গালীর পক্ষে উপযুক্ত নহে । আজি হইতে আরম্ভ হইয়াছে বটে, কিন্তু এত বা ব্রাহ্মণ ও কায়স্থ আর কতকগুলি মুখ কালি কতকগুলি সংস্কৃতানভিজ্ঞ মুণ্ডিতমুণ্ড ব্রাহ্মণ পণ্ডিত, কতকগুলি অশিক্ষিত অৰ্দ্ধশিক্ষিত সংস্কারবিরোধী গ্রাম্য অদ্ধহস্তপরিমিতাবগুণ্ঠনবতী স্ত্রী লইয়া আমাদের সমাজ । সমাজেও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের স্বভাবে সামঞ্জস্য নাই অথচ শিক্ষিত সম্প্রদায়ের নিজেরও কোন সমাজ নাই । কাজেই সামাজিকতারূপ প্রধান সুখ হইতে শিক্ষিত সম্প্রদায