পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩৮ তত্ত্ববোধিনী পত্রিক து_ற २२ कन्न, 8 डार्ण محيسمح যেমন তরঙ্গের উপর তরঙ্গ উত্তোলন করিয়া নৃত্য করিতে করিতে মহাসমুদ্রের দিকে ধাবমান হয়, তেমনই আমাদের পরমার্থ জ্ঞান যখন বৈরাগ্য ও উপরতির সহিত মিলিত হয়, তখন তাহার উচ্ছাসের সীমা থাকে না, সে সতেজে জ্ঞানসমুদ্র প্রেমসমুদ্রের দিকে সতেজে বহমান হইতে থাকে ও শীঘ্রই তাহাতে মিলিত হয় । মনুষ্য জ্ঞানের অপ্রচুরতানিবন্ধন প্রথমে সংসারকেই সৰ্ব্বস্ব জানিয়া জ্ঞানকে তাহাতেই নিবদ্ধ করে। জ্ঞানের শাখা প্রশাখা অনিত্য সুখ সম্পদের মধ্যে বিস্তারিত হইয়া যায়, এবং মনুষ্য আপনাকে মায়া মমতার সামগ্রীর সহিত বিজড়িত করিয়া তোলে । ক্রমে যখন জ্ঞান প্রসারতা লাভ করে এবং বৈরাগ্য ও উপরতির সহিত মিলিত হয়, তখন জ্ঞানকাণ্ডের পৃথিবীর অভিমুখীন শাখা প্রশাখা মান হইয়া যায় । কিন্তু স্বগের দিকে সরল ও সতেজ শাখাপল্লব বদ্ধিত হইতে থাকে। এ অবস্থা অনাসক্ত ভাবে বিষয়ভোগের অবস্থা । জ্ঞানের এই নূতন শাখাপল্লব উদ্ভিন্ন হইয়া শ্রদ্ধা, ভক্তি, প্রীতি, নিষ্ঠা, নির্ভর, তাত্মপ্রসাদ রূপ লিবিধ ফল প্রসব করিতে থাকে। সাধক তাহারই আস্বাদনে অমৃতভোজী দেবতাগণের ন্যায় ঈশ্বরের দিকে ক্রমাগত অগ্রসর হইতে থাকে । বেদান্তে এই জ্ঞান, বৈরাগ্য ও উপ- | রতি এই তিনেরই পরিসমাপ্তি কথিত আছে । শ্রবণ মনন নিদিধ্যাসন যেমন জ্ঞানের কারণ, আত্মতত্ত্ব বিচার যেমন জ্ঞানের স্বভাব, নিৰ্বভ হৃদয় গস্থির অনুদয় যেমন জ্ঞানের কার্য্য তেমনই “দেহাত্মনৎ পরাত্মত্ব দাঢ়ে বোধঃ” জ্ঞানের পরিসমাপ্তি, অর্থাৎ আপনার ন্যায় সৰ্ব্বজীবে সমান প্রীতির দৃঢ়তার নাম জ্ঞানের অবধি বা পূর্ণমাত্রা । বিষয়েতে দোষদৃষ্টি যেমন বৈরাগ্যের কারণ, বিষয় পরিত্যাগের ইচ্ছ। যেমন বৈরাগ্যের স্বভাব, এবং পরিত্যক্ত বিষয়েতে ভোগেচ্ছার অমুদয় যেমন বৈরাগ্যের কার্য্য, তেমনি “ব্রহ্মলোকতৃণীকারে বৈরাগ্যস্যাবধির্মত?”সম্পূর্ণরূপে ফলাকাঙক্ষণ পরিত্যাগ এমন কি ব্রহ্মলোক রূপ ফলপ্রাপ্তিতে তৃণজ্ঞান হওয়া বৈরাগ্যের পূর্ণবিকাশ বা পরিসমাপ্তি। যম নিয়ম ধ্যান ধারণ সমাধি প্রভূতি যেমন উপরতির কারণ, ঈশ্বরেতে বুদ্ধির একাগ্রতা যেমন উপরতির স্বভাব, লৌকিক ব্যবহারে শৈথিল্য যেমন উপরতির কার্য্য, তেমনই “সুপ্তিবৎ বিস্মৃতিঃ সীমা ভবেদুপরমস্য হি” (পঞ্চদশী, চিত্রদীপ ২৮৬ শ্লোক) স্থযুপ্তি কালে যেমন বাহ বিষয় বিস্মৃত হওয়া যায়, তদ্রুপ জাগ্রৎকালেও যখন বিষয় ভোগের বিস্মৃতি ঘটিবে তখনই জানিবে ঘে উপরতির শেষ মঞ্চে উঠিয়াছ । ইহাই পঞ্চদশী নামক বেদান্ত গ্রন্থের জ্ঞান, বৈরাগ্য ও উপরতির তাৎপৰ্য্য । অামাদের ব্রাহ্মধৰ্ম্মেও রহিয়াছে “আত্ম। বা অরে দ্রষ্টব্যঃ শ্রে। তব্যে মন্তব্যে নিদিধ্যাসিতব্যঃ,” পরমাত্মার দর্শন শ্রবণ মনন ও নিদিধ্যাসন করিবে ; “শান্তে দান্ত উপরতস্তিতিক্ষুঃ সমাহিতো ভূত্বা আত্মন্যে বাত্মানং পশ্যতি, ইন্দ্রিয় সংযমী, যুক্তমনা, উপরত,তিতিক্ষুও একাগ্রচিত্ত হইয়া আত্মার মধ্যেই পরমাত্মাকে দেখ । পূৰ্ব্বপিতৃপিতামহগণ ঈশ্বরলাভের যে রূপ প্রকৃষ্ট পথ সকল উদ্ভাবন করিয়া গিয়াছেন, তাহ আমরা এই স্থদুরবর্তী কালেও সন্দর্শন করিয়া বিস্মিত ও স্তম্ভিত হুইয়। যাইতেছি । কিন্তু শুদ্ধ আর স্তম্ভিত হইলে চলিবে না। সমুদ্রগর্ভে মণি মুক্ত