পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প চতুর্থ খণ্ড).pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাপণ ১৮১২ জীবন ~ T-soo -- - নাগার বলিল,*ধৰ্ম্মাবতার আমরা কি করিব,আমাদের অপরাধ কি, পরম্পর ক্রমে আমাদের পরমগুরুর এইরূপ আজ্ঞা । নবাব শুনিয়া বলিলেন, ইহারা গরিব লোক ; যেরূপেই ইহার খোদাকে অর্থাৎ পরব্রহ্ম পরমেশ্বর গুরুকে ভজনা উপাসনা করুক না কেন মাড়াই মটের নাম লউক আর নাই লউক তাহাতে তোমাদের হানি কি ? এখন আমি হুকুম দিতেছি যে এখনি যাইয়া যাহা ইহাদের লইয়াছ তাছা ফিরাইয়া দাও এবং ১৫ দিনের মধ্যে গ্ৰীনাড় হইতে বাহির হইয়া যাও ; গ্রীনাড়ে তোমরা থাকিও না । আমি তোমাদের সকল অপরাধ ক্ষমা করিলাম। যাহা বলিলাম তাহা যদি না কর তাহা হইলে তোমাদের কয়েদ করিব । আগে ভাল ভাল মহাত্মা দুই একটা থাকিতেন, এখন যাহাদিগকে দেখিতেছি তাহারা ঠক তৃষ্ণাতুর । নাগা সন্ন্যাসির নবাবকে ছেলাম করিয়া চলিয়া গেল ও উজহার আজ্ঞামত সেই চারিজন সাধুর যাহা কাড়িয়া লইয়াছিল তাঙ্গ ফিরাইয়া দিল কিন্তু গ্রীনাড় হইতে বাহির হইল না । এবং নবাবও তাহার কোন খবর লইলেন না। শিবনারায়ণ তাহার পর গোরক্ষ নাথের (ছাতা) অর্থাৎ সমাধিস্তানে গেলেন। এবং কলির দাসের স্তান দর্শন করিয়া গ্রীনাড়া পাহাড়ের উপর নীচে চতুর্দিক ঘুরিয়া ঘুরিয়া দেখিতে লাগিলেন যে, স্বরূপে নিষ্ঠাবান মহাত্মারা সেখানে আছেন কি না। পাহাড়ের সকল গুহা এবং মন্দিরে ঘুরিলেন কিন্তু পাহাড়ের সকল স্থানে ঘুরিয়া শ্র বৈষ্ণবের মধ্যে ২।১ জন মহাত্মা ভক্তজন দেখিতে পাইলেন যাহাঁদের ঈশ্বরেতে ভক্তি শ্রদ্ধা মিশ্চল হইয়া মনেতে কোন কপটত নাই। এবং একজন আঘোরিকে দেখিলেন। তিনিও শাস্ত ও স্বরূপেতে অচল হইয়াছিলেন । শিবনারায়ণ দেখিয়া মনে মনে বলিলেন, সমস্ত চরাচর স্ত্রী পুরুষ সকল জাতি স্বরূপেতে পরব্রহ্মের স্বরূপ, সকলের মধ্যে পরব্রহ্ম একই পুরুষ বিরাজমান আছেন । সকলই স্বৰূপেতে মহাত্মা সিদ্ধ পুরুষ। কিন্তু যে ব্যক্তির স্বরূপেতে বোধ নাই সে ব্যক্তিকে অবোধ বলা হয়। এবং যে ব্যক্তির স্বরূপেতে নিষ্ঠ হইয়াছে অর্থাৎ আত্মা পরমাত্মাতে অভেদ দেখিতেছেন অর্থাৎ একরূপ সকল চরাচরকে দেখিতেছেন তাহাকেই সিদ্ধ পুরুষ বলে। সেইখানের সাধু সিদ্ধপুরুষেরা গৃহস্থদিগকে নানা প্রকারের মিথ্যা ভয় দেখাইয়া দিত যে সেখানে বড় বড় আঘোরি অাছে ; তাহারা মনুষ্য দিগকে ধরিয়া ধরিয়া খাইয়া ফেলে। তাহাতে গৃহস্থ লোক জিজ্ঞাসা করিত যে—“আপনার রাত্রে এখানে

আছেন। লাগিলেন। | ११ থাকেন কি প্রকারে ? সাধুরা বলিয়া দিতেন “আমরা সিদ্ধ পুরুষ আমাদের খাইবে না । তোমাদের খাইয়া ফেলিবে।” কিন্তু সাধুদের একথা বলা মিথ্য, সেস্থানে এক মাধ জন যে আঘোরি থাকিতেন তাহারা জ্ঞানবান মনুষ্য। যদ্যপি একেবারে খাদা সামগ্ৰী না পাওয়া যায় তাহা হইলেই প্রাণরক্ষার নিমিত্ত কোন স্থানে আঘোবির মরা মানুষ অথবা পশুদিগের মাংস খায় কিন্তু জীবিত মনুষ্যকে তাহারা খায় না। যেরূপে শৃগাল কৃঙ্কর প্রাণরক্ষার নিমিত্ত কোন খানে মরা জীব জন্তু পড়িয়া থাকিলে খায়, সেরূপ তাহারা খায় । তাহাতে তাহীদের কোন ঘৃণা নাই। এবং কতলোক ও সাপনের জন্যও থায় । শিবনারায়ণ মনে মনে ভাবিলেন —যে মনুষ্যরা কত গল্প করেন যে অমুক অমুক স্থানে অনেক সিদ্ধ পুরুষ আছেন। কিন্তু চতুদিক ঘুরিয়া ঘুরিয়া দেখিতেছি যে এখানকার মধ্যে ঐবৈষ্ণবদের মধ্যে ২১ জন ভক্ত নিশ্চল এবং একজন অঘোরিমতে সিদ্ধ পুরুষ স্বরূপেতে নিষ্ঠাবান । এবং দেখা যাইতেছে যে সমুদয় কল্পিত তীর্থের মধ্যে হরিদ্বারের নিকটে হৃষীকেশে ২৪ জন বিদ্বান পণ্ডিত মহাত্মা আছেন । আর যাহা আছেন তাহাতে দেখা যাইতেছে। পৃথিবীর উপবে পূর্ণ পরব্রহ্ম মাত্মাই সিদ্ধ পুরুষ বিরাজমান, সকল স্থানেই পরিপূর্ণ শিবনারায়ণ মনে মনে এই বিচাব করিযা গ্রীনাড় পাহাড়ের উপর কিছু দিন বিশ্রাম করিতে সেইস্তানের নিকট রাওগি নামে এক সম্প্রদায় আছে ও তাহদের সেখানে একটা বৃহৎ ঠাকুরবাড়ি কিল্লার মতন আছে। তাহাব ভিতর হইতে নামিবার সিড়ি ঝুনাগড় অবধি। সেই সিড়িব পথের নিকট সিড়ির কাছ হইতে ১০ । ১২ হাত অন্তরে জঙ্গলের মধ্যে এক পাথবের নীচে গুহার ন্যায় এক স্থান আছে । শিবনারায়ণ তাহার ভিতরে থাকিতেন । সেখানকার সাধু ও গৃহস্থের তাহাকে দেখিয়া তাহার নিকটে গিয়া জিজ্ঞাসা করিত যে তুমি কে ? শিবনারায়ণ বলিতেন—আমি মনুষ্য । তাহাবা শুনিয়) র্তাহাকে রণা করিয়া চলিয়। যাইত । তাহাবা মে ঘৃণা করিত তাহার কারণ এই যে, শিবনারায়ণ তাহাদের নিকট সাধু মহাত্মা অথবা পরমহংস বলিয়া আত্মপরিচয় দিতেন না ও তাহার। তাহাব। গেরুয়া কাপড় বা সাধুর অপর কোন চিহ্ল দেখিতে পাইত না । তিনি ২ । ১ দিন পর্য্যন্ত সেখানে বসিয়াছিলেন কিন্তু র্তাহাকে কোন গৃহস্থ কিম্বা সাধু কেহই জিজ্ঞাসা করিত না যে, আপনি চরিত।