পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রুণৰ্ত্তিক ১৮১০ ـســطلص গত কি না সে বিষয়ের আলোচনা করা যাউক । ... বিজ্ঞান শব্দের অর্থ বিশিষ্ট জ্ঞান । এই কথা হইতে দুইট প্রশ্ন হইতে পারে। > || বিশিষ্ট জ্ঞান কাহাকে বলে ? এবং •২ । কি বিষয়ের জ্ঞান ? হাৰ্ব্বার্ট স্পেন্সরের মতে “সামান্য জ্ঞানের উচ্চতর বিকাশের নাম পিজ্ঞান ।” এই সংজ্ঞা ও পরিস্কার রূপে বুঝিতে হইলে “সামান্য জ্ঞান” এবং “উচ্চতর বিকাশ” এই দুই শব্দের ব্যাখ্যা জানা অবিশ্ব্যক । সামান্য জ্ঞান বলিতে এমত জ্ঞান বুঝা যায়, যাহা কোন বস্তু দর্শনে সহসাই উদিত হয় । যথা, সূর্যোদয় ও সর্য্যাস্ত দর্শন করিলে সহসা এই প্রতীতি জন্মে যে, সূৰ্য্যই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে । ইহাই সামান্য জ্ঞান, কিন্তু বিজ্ঞান নহে । ও পরীক্ষা দ্বারা পরিশোধিত হইয়া উচ্চতর বিকাশ প্রাপ্ত না হইলে বিজ্ঞানে উন্নীত হইতে পারে না । কিন্তু পৃথিবী মানবীকরণই বটে কারণ ইহা প্রমাণ ! এত বৃহৎ এবং সূৰ্য্য এত দূরবর্তী যে উহা- ৷ দিগকে পরীক্ষার অধীন করিয়া উক্ত সামান্য জ্ঞানকে বিকসিত করা সহজ কাৰ্য্য নহে । এজন্য এস্থলে কেবল প্রমাণ প্রয়োগ করিয়াই পরিতুষ্ট থাকিতে হইবে। প্রাচীন পণ্ডিতগণ সৰ্ব্বপ্রথমে কেবল প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়াই এই সামান্য জ্ঞানকে বিজ্ঞানে উন্নীত করিয়াছিলেন । সেই প্রমাণ এই ঃ—গ্রহ ও নক্ষত্রগণও সূর্য্যের ন্যায় প্রত্যহ উদিত এবং অস্তগত হয়। এই হেতু গ্রহ ও নক্ষত্রগণের পরিভ্রমণ সূর্য্যের পর্য্যটনের প্রমাণ মধ্যে গণ্য হওয়া উচিত। যদি গ্রহ ও নক্ষত্রগণের পরিভ্রমণ আলোচনা করিয়া দেখা যায় তবে স্পষ্ট প্রতীত হইবে যে, গ্রহ ও নক্ষত্রগণ যে, কেবল পৃথিবীকে দৈনিক তের কোন ১২৭ প্রদক্ষিণ করে এমত নহে উহারা বাস্তবিক বার্ষিকও পরিবেষ্টন এবং তদতিরিক্ত গ্ৰহগণ আবার স্থির নক্ষত্র মধ্যে নানা রূপ বিশৃঙ্খল ভাবে পর্যটন করিয়া থাকে। গ্রহ ও নক্ষত্রগণের এতদ্রুপ গতির সহিত সূর্য্যের পরিভ্রমণের তুলনা করিলে আর পৃথিবীকে সূর্য্যের দৈনিক প্রদক্ষিণ করিবার সিদ্ধান্ত স্থির থাকিতে পারে না । তখন ইহা পরিশোধিত হইয়া” এইরূপে বিকাশ প্রাপ্ত হয় যে, পৃথিবীই ঘুরিতে ঘুরিতে সূৰ্য্যকে পরিবেষ্টন করে। ইহারই নাম বিশিষ্ট অর্থাৎ উচ্চতর বিকাশ প্রাপ্ত জ্ঞান, সুতরাং তখন উহা বিজ্ঞান | নামে অভিহিত হইয়া দাড়ায় । এখন দ্বিতীয় প্রশ্নটীর আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া যাউক । কোন বিষয়ের জ্ঞানের নাম বিজ্ঞান ? যখন সীমান্য জ্ঞান পরীক্ষা ও প্রমাণ দ্বারা পরিশোধিত হইলে বিজ্ঞানে উন্নীত হয়, তখন তাহা এমত বিৰ্ময়ের হওয়া চাই, যাহার উপর পরীক্ষা ও প্রমাণ প্রয়োগ করা যাইতে পারে। কিন্তু জড় পদার্থই পরীক্ষণীয় ও প্রমেয় বস্তু । অতএব জড় পদার্থের জ্ঞানই বিজ্ঞন মধ্যে গণ্য । বাস্তবিক এক মাত্র জড় পদার্থই জগতে দেখিতে পাওয়া যায় এবং যাহা কিছু জ্ঞান আমরা উপলব্ধ করি তাহা জড় পদার্থের মাত্র । এজন্য আমরা কোন ও কথাই চিন্তা বা কল্পনা করিতে পারি না যাহা এ জড় জগতে কদাপি দশন আদি করিতে পারি নাই । [আমি স্বচ্ছন্দে চিন্তা করিতে পারি যে, প্রভাত বাবু আমার লিখিত এই কথাটি বুঝিতেছেন ; অথচ, জড় জগস্থানেই আমি বোধক্রিয়ার চিহ্ন মাত্রও দেখি নাই—চেতন, রাজ্যেই আমি বুদ্ধি ক্রিয়া উপলব্ধি