পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫৩ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা

  • ९ या अ, २ उ॥१॥
  • ==ी

পায় তাহ বাস্তবিক সত্য নহে—বিশুদ্ধ জ্ঞানে যাহা প্রকাশ পায় তাহাই বাস্তবিক সত্য । আমরা বলি যে, তাহার এই কথাই ঠিক্‌ ৷ কিন্তু এখন তিনি বলিতেছেন যে, যাহা বিশুদ্ধ জ্ঞানে প্রকাশ পায় তাহা জ্ঞানগত-সত্য মাত্র ;–তাহ বস্তুগত সত্য নহে—বাস্তবিক সত্য নহে ; ঐন্দ্রিয়ক । অবভাসই বাস্তবিকতার মূল ; এইখানে । র্তাহার দার্শনিক নৌকা একেবারেই বিপর্য্যস্ত হইল--নৌকার মাস্তুর নীচে চলিয়া গেল ও নৌকার তলদেশ উপরে উঠিল । কাণ্ট বলেন যে, বিশুদ্ধ জ্ঞান ঐন্দ্রিয়ক অবভাসের মূলে বস্তু যাহা অবধারণ করে তাহা ব্যবহারিক সত্য মাত্র, ত৷ ভিন্ন তাহ পারমার্থিক সত্য নহে ; – অর্থাৎ তাহা প্রকৃত পক্ষে বস্তু নহে ; তবে কিনা— তাহাকে বস্তু বলিয়া বিশ্বাস না করিলে লোক-যাত্রা নির্বাহ হইতে পারে না, এমন কি—বিজ্ঞান একপদ ও চলিতে পারে না ; এই জন্য তাহাকে বস্তু বলিয়া স্বীকার না করিলেই নয় । কাণ্টের এই কথার বিরুদ্ধে বেদান্ত দর্শন বলেন – তুমি আপনিই তো বলিয়াছ যে, ঐন্দ্রিয়ক আবভাস—অবিদ্যা – আমাদিগকে বা স্তবিক সত্য দিতে পারে না, বিশুদ্ধ জ্ঞানই কেবল আমাদিগকে বা স্তবিক সত্য দিতে পারে ; আবার তবে তুমি বাকিয়া দাড়াইয়। এ কথা বল কিরূপে—যে, বিশুদ্ধ জ্ঞানের সত্য শুদ্ধ কেবল জ্ঞান-গত সত্য, তা ভিন্ন তাহা বস্তু-গত নহে—বস্তবিক নহে ? কাণ্ট ইহার এইরূপ প্রত্যুত্তর দে’ন যে, বিশুদ্ধ জ্ঞানের সত্য (যেমন বিশুদ্ধ বস্তু-তত্ত্ব) ঐন্দ্রিয়ক অবভাসের সহিত জড়িত ভাবেই তামাদের জ্ঞানে প্রতিভাত হয়, কাজেই—সে যাহা প্রতিভাত হয় তাহাতে বিশুদ্ধ জ্ঞান এবং ঐন্দ্রিয়ক অবভাস দুয়ে কা রই কাৰ্য্য-কারিত সমান মাত্রায় বিদ্যমান; তাই বলি যে, তাহা মিশ্র . সত্য—বিশুদ্ধ সত্য নহে ; ব্যবহারিক সত্য—পারমার্থিক সত্য নহে। ইহার উত্তরে বেদান্ত দর্শন এইরূপ বলেন যে, সেই মিশ্র সত্যের মধ্য হইতে যদি ঐন্দ্রিয়ক অংশটি (অবিদ্যাত্মক অংশটি) বর্জিত করিয়া অব-” শিষ্ট অংশটি অর্থাৎ - জ্ঞানাত্মক অংশটি গ্রহণ করা যায়—তবে তাহাই তে। অমিশ্র বাস্তবিক সত্য—পারমার্থিক সত্য ; তাহা কি তাহাই তুমি আমাকে বল— বাজে কথা ছাড়িয়৷ দে ও ; কেননা অমিশ্র . সত্য পাইলে কেহ আর তাহাকে ছাড়িয়া মিশ্র সত্যের আকাঙ্ক্ষা হয় না ;—এক ভর থাটি ভুবর্ণের বিনিময়ে এক ভরি তাম্র মিশ্রিত সুবর্ণ ক্রয় করিতে যায়— এমন নিৰ্ব্বোধ কে আছে ? ইহার উত্তরে কাণ্ট বলেন যে, খাটি সত্য আমাদের জ্ঞানে ধরা দেয় না— যদি বা ধরা দেয় তাছা হইলে ও তাহ আমাদের কোন ব্যবহারে আসে না । বেদান্ত বলেন, ব্যবহারে আসা না আসা পরের কথা— আপাততঃ তাহা জ্ঞানে ধরা দেয় কি না, তাহাই স্থির করা হউক ৷ খনি হইতে যে সুবর্ণ পাওয়া যায়, তাহ তে। তার তাত্ৰ-মিশ্রিত নহে ; খাটি স্বর্ণকে তাম্রমিশ্রিত করিলেই তাম্র-মিশ্রিত হয় ; তাহা না করিলে তাহা—যেমন বিশুদ্ধ তেমনি বিশুদ্ধ থাকে । বিশুদ্ধ জ্ঞানের খাটি সত্যকে অবিদ্যার সহিত মিশ্রিত করিলেই তাহা মিশ্র সত্য হইয়া দাড়ায়,—তাহা না করিলেই তাহ যেমন তেমনি অবিকৃতভাবে জ্ঞানে প্রতীয়মান হয় । আমরা আপনারাই খাটি সত্যকে অবিদ্যার সহিত মিশ্রিত করি, আবার, আপনারাই বলি যে, তাহ আমাদের জ্ঞানে ধরা দেয় না ;