পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ ৷ বিজ্ঞান এ যাবৎকাল স্বীয় অভীষ্ট পথে দিব্য নিরাপদে অগ্রসর হইয়া আসিতেছে; বিজ্ঞানের ভিতর পারমার্থিক সত্যকে প্রবেশ করাইলে তাহাতে তাহার লাভ কিছুই হয় না,বরং দোহাতে তাহার কার্যের ব্যাঘাত হয় । কিন্তু ধৰ্ম্মের বেলায় এই রূপ দেখা যায় যে, পারমার্থিক সত্যে বিশ্বাস-ব্যতিরেকে ধৰ্ম্মজ্ঞান নিলান্তই অঙ্গহীন হয় । কাণ্টের এ কথাটি মিথ্য। নহে ; তাহার সাক্ষী—কমৃটির নিরীশ্বর বিজ্ঞান-তন্ত্র বিজ্ঞানের পক্ষে সবিশেষ উপমোগী ; কিন্তু তাহার নিরীশ্বর ধৰ্ম্ম-তন্ত্র ধৰ্ম্মের পক্ষে এমনি অনুপযোগী যে, নাহ৷ সহৃদয় বিজ্ঞ সমাজে ভক্তি রসের পরিবর্ভে শুধু কেবল হাস্য রসেরই উদ্দীপন করে । প্রথম দৃষ্টিতেই সহৃদয় পাঠকের মনে হইতে পারে সে, কাণ্ট দুই নৌকায় প৷ দিয়াছেন ; বিজ্ঞানের ভিতরে পারমার্থিক সত্যের দর্শন-লাভে পরাভব মানিয়া তিনি প্রথমে বলিয়াড়েন যে, পারমার্থিক সত্যের প্রমাণাভাব ; তাহার পরে বলিয়াছেন যে, ধৰ্ম্ম-জ্ঞানের মধ্যে আমরা পারমার্থিক সত্যর অব্যর্থ পরিচয় পাই । এখানে কাণ্টের সপক্ষে এই একটি কথা বলিবার আছে যে, দুই নৌকা যদি তাবিচ্ছেদ্য ভাবে গায়ে গায়ে জোড়া লাগানো থাকে, তবে তাহাকে বড়ে শীঘ্ৰ কাবু করিতে পারে না ; তাই সিংহলবাসার। সমুদ্রদিচরণের সময় ঐ রূপ জোড়া নৌকা ব, বহার করিয়৷ থাকে । দুই দিক্ যেখানে বিবেচ্য, সেখানে একদিকে বোক দে ওয়া ময়-বিশেসে তাপশু্যক হইতে পারে, কিন্তু সকল সময়ে নহে ; সজোরে যখন পূবে বাতাস বহিতেছে, তখন নৌকার পূর্ব পার্শ্ব ঘেঁসিয়া বসা যাত্ৰাদিগের কর্তব্য তাহাতে আর ভুল নাই ; কিন্তু অন্য সময়ে নহে । ধৰ্ম্ম-সাধন-কালে প্রবৃত্তির বায়ু বহির্বিময়ের অভিমুখে সজোরে বহিতে থাকে, এই জন্য তখন তাহার বিপরীত দিকে সর্বপ্রযত্নে ঝু কিয়া পড়া সাধকের কন্তব্য ; কিন্তু বিজ্ঞানের আলোচনা-কালে এবৃত্তির বায়ু প্রশান্ত ভাব ধারণ করে, 높 তত্ত্ববোধিনী পত্রিক १२ कहा, २ डाका এজন্য তখন দুই দিকের কোন দিকে বোক না দিয়া মধ্য পথ অবলম্বন করাই শ্রেয় । কিন্তু কাণ্টের সপক্ষে এই যাহা বলা হইল—এস্থলে তাহা খাটে না ; কারণ, কাণ্টের দুই নৌকার মধ্যে যোগবন্ধন এমনি শিথিল যে, এক নৌকা পশ্চিমে— আর এক নৌকা পূর্বে—দুই নৌকা দৃষ্ট দিকে ধাবমান। এক স্থানে যাহাকে অপ্রামাণিক বলিয়া উড়াইয় দেওয়া হইয়াছে, আর এক স্থানে তাহাকে প্রামাণিক বলিয়া সংস্থাপন করা হইয়াড়ে ; ধৰ্ম্মজ্ঞানের সিদ্ধান্ত এবং বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত দুইকে পরস্পরের প্রতিকূলে দাড় করানো . হইয়াছে । তিনি যদি বিজ্ঞানের মূলতত্ত্বসকলকে অন্ধ “বস্তু-স্বরূপের” উপরে প্রতিষ্ঠিত না করিয়া জ্ঞান-স্বরূপের উপরে প্রতিঠত করিতেন —তাহা হইলে তাঙ্গার দুষ্ট নৌকা অতীব দৃঢ় বন্ধনে এক সঙ্গে বাধা পড়িয়া যাইত। তাহা চইলে এইরূপ দাড়াইত যে, বিজ্ঞানের এই মে আধিভৌতিক মূলতত্ত্ব—যেমন ক্রিয়া তেমনি প্রতিক্রিয়া, এবং ধৰ্ম্মের এই যে আধ্যাত্মিক মূলতত্ত্ব—যেমন কৰ্ম্ম তেমনি ফল, এ দুইটি মূলতত্ত্ব একই মূলতত্ত্বের এ-পিট ও-পিট । জ্ঞান-স্বরূপ পরমাত্মা উভয়েরই ভিত্তি-মূল । সর্য্য যেমন আলোকের এবং উত্তাপের উভয়েরই কেন্দ্রস্থল ; পরমাত্মা সেইরূপ বিজ্ঞানের এবং ধৰ্ম্ম-জ্ঞানের— ভৌতিক জগতের এবং আধ্যাত্মিক জগতের—উভয়েরই কেন্দ্র-স্থল। অতঃপর বেদান্ত-দর্শনের সহিত কাণ্টের দর্শনের কিরূপ ঐক্যানৈক্য তাহার আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া যাক । বেদান্ত-দর্শন যে “ সময়ে জন্ম গ্রহণ করিয়াছিল, সে সময়ে বিজ্ঞানের এখনকার মতো এরূপ হাক ডাক ছিল না ; গুটি দুই তিন বিজ্ঞান যাহা লোকযাত্রা নির্বাঙ্গের জন্য নিতান্তই অবিশ্বকে—যেমন পৰ্ব্বাহ প্রভৃতি নিরূপণের জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞান, রোগপ্রতীকারের জন্য চিকিৎসা-বিজ্ঞান (তাহাও আবার ঠিক্‌ fogts, science নহে—বিদ্যা turt, মাত্র)