পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

۶۵۰ و ۲۲ م " কাণ্টের দর্শন এবং বেদান্ত দর্শন ১৩৭ হইতে অজ্ঞানকে সমূলে বর্জন করিয়া যখনই আমরা ধ্যানে পাই যে, পরমাত্মা জ্ঞান-স্বরূপ ; তখনই অন্বয়-পদ্ধতি অনুসারে সেই জ্ঞানকে সমস্ত জগতের সহিত সংযুক্ত করিয়া প্রাপ্ত হই যে, পরমাত্মা সৰ্ব্বজ্ঞ । যে, পরমাত্মা অনু হইতেও অণু, অথচ মহৎ হইতেও মচৎ ; তিনি নিগুণ অথচ ধ্যক্ষ, ইত্যাদি । ও-দুটি এমনি একাত্মা যে, পারমার্থিক সত্যের অনুসন্ধান-কালে কান্ট, অন্বয়-পদ্ধতির ভক্ত হইয়াও প্রকারান্তরে ব্যতিরেক পদ্ধতি অবলম্বন করিয়াrছন ; এবং বেদান্ত দর্শন ব্যতিরেক পদ্ধতির ভক্ত হইয়াও প্রকারান্তরে অন্বয়-পদ্ধতি অবলম্বন করিয়াছেন ;—কেননা, পারমার্থিক রাজ্যে । ময় সৰ্ব্বজগতেরই মূলাধার অথচ প্রত্যেক ও-দুইটি পদ্ধতি যমক সহোদর—এ পিট ও পট । পারমার্থিক অনুসন্ধান পদ্ধতির আর-একটি বিশেষ লক্ষণ এই যে, এখানে । অন্বয় এবং ব্যতিরেক উভয়েরই ঐকান্তিক পরাকাষ্ঠী ভিন্ন তাল্প কিছুতেই চলিতে | যেমন | পারে না ;—ব্যতিরেক-পদ্ধতির ও পরাকাষ্ঠী, অন্বয়-পদ্ধতির ও তেমনি পরাকাষ্ঠী; অণুর বেলায় অণু হইতে অণুতম— মহতের বেলায় মহৎ হইতে মহত্তম । এই রূপ ঐকান্তিক অন্বয়-ব্যতিরেক বিশুদ্ধ জ্ঞানের একটি স্বহস্তের কার্য্য, এজন্য তাহার উপরে কাহারা কোন কথা চলিতে পারে না । কেননা, বিশুদ্ধ জ্ঞানের প্রমাণ বিশুদ্ধ জ্ঞান নিজেই – তা ভিন্ন তাহার অন্য কোন প্ৰনাণ সম্ভবে না ; তাই শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য্য বলিয়াছেন যে, "মানং প্রবোধয়ন্তং বোধং যে মানেন বুভুসৎস্তে । এধোভিরেব দহনং দগ্ধ,ং বাঞ্ছন্তি তে মহামুধিয়ঃ।” ইহার অর্থ এই যে, যে জ্ঞান প্রমাণের প্রমাণত্ব সাধন করে, এইরূপ করিয়াই আমরা পাই. তাহাকে যাহারা । প্রমাণ দ্বারা বুঝিতে চান, সেই সকল মহাপণ্ডিতেরা করেন আর কিছু নয়—যে অগ্নি কাষ্ঠকে দহন করে, সেই অগ্নিকে কাষ্ঠ দিয়া দহন করিতে চান। বিশুদ্ধ জ্ঞানের ঐকান্তিক অন্বয়-ব্যতিরেক এমনি স্বতঃসিদ্ধ যে, তাহা বিশুদ্ধ জ্ঞানের নিশ্বাসপ্রশ্বাস বলিলেই হয়। কান্ট ঐকান্তিক অস্বয়-ব্যতিরেক দারা, বস্তু গুণের মূলতত্ত্ব সৰ্ব্বগুণে গুণী ; তিনি নির্লিপ্ত অথচ সর্বা- ৷ শোধন করিয়৷ শইrছন যে, আত্মা নিগুণ বস্তু-স্বরূপ অথচ সমস্ত মানসিক গুণের আধার : কার্য্য-কারণের মূল-তত্ত্বকে ঐরূপে শোধন করিয়া পাইয়াছেন যে, ঈশ্বর কালাতীত স্বয়ন্তু অনাদি, পুরুষ অথচ সমস্ত জগতের আদি-কারণ ; ক্রিয়া-প্রতি- ' ক্রিয়ার মূল-তত্ত্বকে ঐরূপে শোধন করিয়া পাইয়াছেন যে পরমাত্মা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বস্তুর অভ্যন্তরেই অন প্রবিষ্ট । এই তো গেল পথের বৃত্তান্ত—তা ছাড়া, পথের কোন স্থান হইতে যাত্রারম্ভ করিয়া কোন স্থানে পৌছিতে হইবে, কান্ট, তাহারও একটি ধারাবাহিক ক্রম প্রদর্শন করিয়াছেন, যথা,— “There is in the progression from our knowledge of ourselves (the soul) to a knowledge of the world and through it to a knowledge of the supreme being, something so natural that it looks like the logical progression of reason from premisses to a conclusion. ইহার অর্থ ;—আত্মজ্ঞান হইতে বিশ্ব-জ্ঞানে এবং বিশ্ব-জ্ঞান হইতে পরমাত্ম জ্ঞানে উপসঃক্রমণের যে একটি পদ্ধতি, তাহা এমনি স্বাভাবিক যে, দেখিতে দেখায় ঠিক যেন — ন্যায় শাস্ত্রের যুক্তি-পদ্ধতি সাধন হইতে সিদ্ধির দিকে ক্রমে ক্রমে পা বাড়াইতেছে । কিন্তু হইলে হইবে কি—কাণ্ট সংশয়ের ধূলি উড়াইয় তাহার ঐ পথের আ- ,