পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

O } י"ד Ꮌb~☾ ভূত। সাংখ্য ভাষায়—প্রাকৃতিক সত্তা ত্ৰিগুণাত্মক ; বৈদান্তিক ভাষায়—প্রাকৃতিক সত্তা সদসদাত্মক ; আধুনিক ভাষায়—প্রাকৃতিক সত্তা আপেক্ষিক সত্য । কিন্তু জীবাত্মার অন্তরে সমগ্ৰ সত্যের ভাব রহিয়াছে—পরিপূর্ণ সত্যের ভাব রহিয়াছে, এই জন্য কোন আপেক্ষিক সত্যেই তাহার সত্য-জিজ্ঞাসার আকাঙক্ষ মিটিতে পারে না ; আধ পেটা সন্নে কাহারে কাণ্টের দর্শন এবং বেদান্ত দর্শন 顧 পেট ভরে না । জীবাত্মা তাই তৃষিত নয়নে । ত্ৰিগুণাত্মক প্রকৃতির যবনিকা ভেদ করিয়া পরমাত্মার মুখবলোকন করতে সচেষ্ট হয় ; ইহারই জন্য জীবান্সার তপ জপাদি যত কিছু সাধন। অতঃপর সাধন কিরূপ এবং মুক্তিই বা কিরূপ তাহা একবার আলোচনা করিয়া দেখা যা’ক । সাধনের প্রথম সংকল্প চিত্ত-শুদ্ধি ; এবং চরম সংকল্প ঈশ্বরের সহিত আনন্দ উপভোগ। প্রকৃতিকে সঙ্গ মে পরাস্ত করাই সাধনের প্রথম সংকল্প। প্রকৃতির সহিত সঙ্গ (মে প্রবৃত্ত হইবার পূর্বে প্রকৃতিকে ভাল করিয়া চেনা আবশ্যক । অণমাদের স্বদেশীয় শাস্ত্ৰ-মতে শুদ্ধ যে কেবল পঞ্চভূতই প্রকৃতি, তাহা নহে ; তামাদের আন্তরস্থিত মন বুদ্ধি এবং অহঙ্কার ও প্রকৃতিরই অন্তঃপাতা। সংখ্য-দর্শনের মতে মূল-প্রকৃতি হইতে সৰ্ব্ব প্রথমে ‘মহৎ’ উৎপন্ন হয়। মহৎ এই শব্দটি শুনিবা-মাত্রই অপরিচিছন্ন আনিরুদ্ধ সৰ্ব্বগত সত্তার ভাব মনে উদিত হয় ; কিন্তু প্রকৃতির অভ্যন্তরে সেরূপ সত্তা কোথায় ? প্রকৃতির সকল সত্তাই তো পরিচিচ্ছন্ন সত্তা । এমন কি সমস্ত জগতের মূলে যে এক সৰ্ব্বময়ী প্রাকৃত সত্তা বর্তমান রহিয়াছে, সংখ্য-শাস্ত্রে যাহার নাম মূল প্রকৃতি, বেদান্ত-মতে তাহা ও সদসদাত্মিক । আপেক্ষিক সভা—এই জন্য তাহাও সৎশব্দের বাচ্য নহে । বেদান্ত-শাস্ত্রে প্রকৃতি রূপকচ্ছলে পরমাত্মার চতুর্থাংশের একাংশ বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে, যথা,— “একাংশেন স্থিতো জগৎ;” ইহার তাৎপর্য্য এই যে, পরমাত্মার অসীম শক্তির কণাংশ মাত্র জগৎ কার্য্যে ব্যয়িত হয় । অতএব প্রকৃতি হইতে ‘মহৎ’ যাহা উৎপন্ন হয়, ত , সম্পূৰ্বতোভাবে অপরিচ্ছিন্ন সত্তা নহে—তবে কি ? না তাহ অপেক্ষাকৃত অপরিচ্ছিন্ন সত্তা অর্থাৎ তাহ প্রকৃতিজাত আর আর সভা অপেক্ষ অপরিচ্ছিন্ন ; যেমন—সুত্তিকা অপেক্ষা জলের সভা অপরিচ্ছিন্ন, জল অপেক্ষা বায়ুর সভা অপরিচ্ছিন্ন, সেইরূপ প্রকৃতি-জাত আর আর সকল বস্তু অপেক্ষা মহতের সভা অপরিচ্ছিন্ন, এই পৰ্য্যন্ত । মহৎ সত্ত্ব-গুণ প্রধান— অর্থাৎ তাহাতে সভার ভাগই অধিক ; কিন্তু সে যে তাহার সত্ত্বগুণ--তাহাও রজস্তমোগুণের সহিত কতক না কতক অংশে জড়িত। এই মহত্তত্ত্বটির আর এক নাম বুদ্ধি । পাঠক হয় তো বলিবেন যে, এ আবার কিরূপ কথা ! পাঠক একজন কৃতবিদ ব্যক্তি-সন্দেহ নাই ; তিনি অ বশ্য লাপ্লাসের অভ্রি ক-সিদ্ধান্ত (Nebular theory অবগত অাছেন ; তিনি নিশ্চয়ই বলিবেন যে, “প্রথমে অপরিচ্ছিন্ন সর্বময় সত্তা—মোট মুটি ধর যেন একটা ধূমাকার সত্তা—এটা বেস্ বুঝিতে পারা যায় ; কিন্তু তাহা যে, বুদ্ধি, এ কথার তো কোন অর্থই খুজিয়া পাওয়া যায় না !”, র্তাহার এ বোধ নাই যে, তিনি র্তাহার আপনার প্রশ্নের আপনিই উত্তর দিয়া বসিয়া আছেন । তিনি বলিয়াছেন “প্রথমেই অপরিচ্ছিন্ন সত্তা—এটা বেস্ বুঝিতে পারা যায়” তবেই হইল যে, অপরিচ্ছিন্ন