পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ ১৮১ e উপদেশ 'న)(t অামারদের অন্তরে জাগ্রত হইয়া উঠিল ! অজস্ৰ কামনার বিষয়ের মধ্যে ডুবিয়া ও কেন বা ট্রপনেয় গভীর শূন্য, হৃদয়-মধ্যে উদভাসিত হইয়া পড়িল । আজন্মকাল বিষয়মদিরা পানে যে দিশাহারা হইয়া পড়িয়া ছিলাম, অতি সন্তপণে আপনাকে ধৰ্ম্ম ঈশ্বর হইতে বহুদূরে রক্ষা করিয়াছিলাম, কে হৃদয়দেশ অালোড়িত করিয়া মোহ-যবনিকা আমারদের সম্মুখ হইতে অপসারিত করিয়া দি ল ! কে হৃদয়ের ভত বিদূরিত করিয়া দিয়া বিময় ভোগের চিরপরিচিত বত্ম হইতে আমাদিগকে প্রতিনিরক্ত করিল, পথহারা দেখিয়া কল্যাণের পথে কে আমাদিগকে আহবান ক রিল! কে বলিয়া দিল যে ধরাপৃষ্ঠকে সর্বস্ব । জানিয়া জীবনের অৰ্দ্ধাঙ্ক সমাপিত করিলাম, । উহা অামারদের তাবৎ নহে ! সকল মনুম্যেরই ক্ষুদ্র জীবনে এমন একটি সময় উপস্থিত হয়, যখন বিষয়ের চির অভ্যস্ত আমোদ প্রমোদ তাহাকে আর | আকৃষ্ট করিয়া রাখিতে পারে না। যখন । হইয়া উহাকেই তাবৎ জানিয়া পরিশেষে ঘোরতর ঝটিকা প্রবল বেগে উত্থিত হইয়া পৃথিবীর উচ্ছেদদশা আনয়ন করে, মৃত্যুর করাল মুথব্যাদনে আত্মীয় স্বজন আমারদের নিকট হইতে চিরবিদায় গ্রহণ করেন, যখন আপনার বলিয়া কাহাকে ও গাঢ় আলিঙ্গনে সংবদ্ধ করিতে পারি না, যখন আপনাকে নিতান্ত অসহায় ও নিরাশ্রয় জানিয়া ইতস্ততঃ পরিভ্রমণ করিতে থাকি, তখন বুঝিতে পারি যে পৃথিবী আমারদের সৰ্ব্বস্ব নহে, এখানকার সুখশান্তি আমোদ প্রমোদ তামারদের অন্তরের পিপাসা শান্ত করিতে সক্ষম নহে। সাংসারিক সুখের এই চির অতৃপ্তিই মনুষ্যের মনুষ্যত্ব লাভের একমাত্ৰ হেতু । মনুষ্য ধ্রুব সত্যের ভিখারী। সংসার তাহার হৃদয়কে পূর্ণ ধারণ করে । করিতে পারে না বলিয়াই সে উৰ্দ্ধশ্বাসে পরিপূর্ণ আনন্দের দিকে ধাপমান হয়। যে আনন্দের ক্ষয় নাই, যে আনন্দ-সাগরে নিমজ্জিত হইলে আর তাহা হইতে কোন কালে বিচ্যতি ঘটিবার সম্ভাবনা নাই, দেবতারা যে আনন্দের ভিখারী সেই দেবউপভোগ্য আনন্দ লাভ করিবার জন্য মৰ্ত্তোর কাট ক্ষুদ্র মনুষ্যের আন্তরক পিপাসা। সেই জনই আমরা পরিদৃশ্যমান অনায় সে-লব্ধ পার্থিব-সুখে বিসর্জন দিয়া সাধন-লব্ধ কুচ্ছ সাধ্য ভবিষ্যৎ-গৰ্ব-নিহিত সুখের আশায় ইহকালের আমোদ প্রমোদকে আহুতি দিয়া অনন্তের দিকে ধাবমান , হইতেছি,অবিদ্যার বিনাশে ধ্রুব অমৃতত্বকে জানিতে দৃঢ়ব্রত হইয়াছি। যে জ্ঞান ঈশ্বরের পথের নিয়ামক তাহ। লাভ করিবার জন্য প্রবৃত্ত হইয়াছি । পার্থিব ও অপার্থিব উপাদানে মনুষ্য শরীর নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । রক্তমাংস অস্থিসমন্বিত স্থূলদেহ ধূলিকণিকায় পরিনির্মিত, পৃথিবীর রসে পরিপুষ্ট ও পরিবদ্ধিত জলবুদু দের ন্যায় উহাতেই লীন হইয়। যাইতেছে। অপার্থিব উপাদান সমুদ্ধত জীবাত্ম। ক্ষুদ্র হইয়া ও অপরিসীম ক্ষমতা চন্দ্রসূৰ্য্যগ্রহনক্ষত্রসমন্বিত বিশাল পৃথিবী যেমন জড়শরীরস্থ ক্ষুদ্র চক্ষুর একমাত্র লক্ষ্যস্থল, সেইরূপ যিনি চন্দ্র সূৰ্য্য গ্ৰহ নক্ষত্রের অন্তরাত্মা, যিনি চন্দ্র সূৰ্য্য গ্ৰহ নক্ষত্রের নিয়ন্তা, চন্দ্র সূৰ্য্য গ্রহ নক্ষত্র যাহাকে জানে না তিনিই জীবাত্মার একমাত্র গ্রাহ । চক্ষু আবশ্যক বল লাভ করিলে যেরূপ জড় পৃথিবীকে আপনার সম্মুখে দর্শন করে ; জীবাত্মার অসাড়ত। বিদূরিত হইলে—সংসারের নশ্বরতা তাহার নিকট প্রতিভাত হইলে উহা সাধন