পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

« د w د qtRtgه মানবীকরণই বটে । פ9\ -a -on পরোক্ষ জ্ঞানের মহাসাগর, দুয়ের মূলে এক অসীম জ্ঞান অবস্থিতি করিতেছে— সৰ্ব্বজ্ঞ পুরুষ অবস্থিতি করিতেছেন। কেননা, যেমন অসীম মহাকাশ গোড়ায় না থাকিলে, নিকটস্থিত আকাশের সহিত দূর-স্থিত আকাশের পরম্পর-সম্বন্ধ থাকিতে পারে না, সেইরূপ মূলে মহাজ্ঞান না থাকিলে আমাদের অপরে ক্ষ জ্ঞানের সহিত পরোক্ষ জ্ঞানের কোন প্রকার সম্বন্ধ থাকিতে পারে না। আদিম কাল হইতে মনুষ্য-সমাজে নানা দিক্ হইতে নানা জ্ঞান উৎসারিত হইয়া এবং দিন দিন ক্রমশই বিস্ফারিত হইয়। একই মহাসত্যের অভিমুখে প্রসারিত হইতেছে ; সেই সমস্ত বহুপ৷ বিচিত্র নানা জ্ঞানের মূলে যদি এক অদ্বিতীয় মহাজ্ঞান বর্তমান না থাকিবে—তবে তাহাদের গোড়ীর বঁধুনি কোথায় ? তাহাদের যদি গোড়ার বাধুনি না থাকে, তবে তাহাদের মূল্য কি ? বাধুনি অবশ্যই আছে ;—কাজেই ইহা না মানিলেই নয় যে, আমাদের পরোক্ষ এবং অপরোক্ষ সমস্ত জ্ঞানই একই মহা-জ্ঞানের উপরে প্রতিষ্ঠিত । সত্য-জ্ঞানের প্রকৃতিই এইরূপ যে,–ভবিষ্যতে আমরা যত কিছু সত্য-জ্ঞান উপাত্তজন করিব, তাহা বৰ্ত্তমান কালের সত্য-জ্ঞানের সহিত সম্পর্ক-বিহীন হইতে পারে না ; মনে কর, প্রথমে আমরা পৃথিবীর পরিক্রমণ পথ অবধারণ করিলাম, তাহার পরে সূর্য্যের পরিক্রমণ পথ অবধারণ করিলাম—দুই সত্যের একটির সহিত আর-একটির কোন-না-কোন সম্পর্কবন্ধন থাকিবেই থাকিবে । সকল সত্যের সঙ্গেই যখন সকল সত্যের সম্পর্ক রহিয়াছে, তখন, এক সত্যজ্ঞান কদাপি আর এক সত্য-জ্ঞানের একান্ত “পর” হইতে পারে না ; কাজেই বলিতে হয় যে, সকল সত্য-জ্ঞান একই অদ্বিতীয় পরম সত্য-জ্ঞানের উপরে প্রতিষ্ঠিত ; কেননা, তাহা যদি না হইত—তবে এক সত্যজ্ঞানের সহিত আর-এক সত্য-জ্ঞানের আদবেই কোন সম্পর্ক থাকিতে পারিত না। সেই এক অদ্বিতীয় পরম সত্যজ্ঞানই সৰ্ব্বজগতের মূলাধর । প্রভাত বাবু বলিতেছেন যে, “...কৗশলের পিছনে কৰ্ম্মকৰ্ত্তাকে সৰ্ব্বদা নিযুক্ত থাকা আবশ্যক নহে” ; আমরা বলি এই যে, অস্তিত্বের পিছনে জ্ঞান সৰ্ব্বদ। নিযুক্ত থাকা আবশ্বক; তার,জগতের অস্তিত্বের মূলে সেই-যে জ্ঞান চির-বর্তমান, সেই জ্ঞান-হইতেই জগতের সমস্ত কল কৌশল আবির্ভত হইয়াছে। কেননা;—“আছে” বলিলেই জ্ঞানের প্রমাণ আবশ্যক—জ্ঞানের প্রমাণ চাহিলেই মূল স্থিত জ্ঞানের অস্তিত্বে বিশ্বাস স্থাপন করা আবশ্যক। আমি যখন হিমালয় ভাবিতেছি তাহাদের গোড়ার | তখন হিমালয়-ভাবনা যে আমার মনের অভ্যন্তরে বর্তমান আছে তাহার প্রমাণ কি ? জ্ঞান; কেননা,আমার অন্তঃকরণে যে,হিমালয় ভাবনা চলিতেছে, ইহা অামি অন্তরে অনুভব করিতেছি ;—অনুভব একপ্রকার সাক্ষাৎ জ্ঞান । হিমালয়-পৰ্ব্বত আছে, ইহার প্রমাণ কি ? জ্ঞান ; কেননা, আমি আপনি অথবা অপর কোন ব্যক্তি হিমালয় পৰ্ব্বত প্রত্যক্ষে অবলোকন করিয়াছে— ইহাই হিমালয়ের অস্তিত্বের প্রমাণ; অনুভব যেমন এক প্রকার সাক্ষাৎ জ্ঞান— প্রত্যক্ষ তেমনি আর এক প্রকার সাক্ষাৎ জ্ঞান । “আমি আছি” ইহার প্রমাণ কি ? জ্ঞান ; কেননা অামি যদি আমার আপনার জ্ঞানে বিদ্যমান না থাকি তবে “আমি আছি” এ কথার কোন অর্থই হয় না । “আমি আছি” এই যে জ্ঞান, ইহা ও এক প্রকার সাক্ষাৎ জ্ঞান—স্বতঃসিদ্ধ জ্ঞান । O