পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\9o জগতে আছে, আমরা তো তাহা জানি না। বিপিন বাবু নিজে কি বলিতেছেন ? তিনি বলিতেছেন “আমরা ভরসা করি যে, সকলে তর্কের জঞ্জালময় পথ পরিত্যাগ পূর্বক শ্রীতি ও অনুভবাত্মক মীমাংসা মাত্র গ্রহণ করিবেন;” তাহাকে আমরা জিজ্ঞাসা করি —জ্ঞানে যাহা উপলব্ধি হয় তাহাই তো অনুভবাত্মক ? না আর কিছু ? যাহা জ্ঞানে উপলব্ধি হয় না তাহাকে অবশ্য তিনি অনুভবাত্মক বলিতে পারেন না । ইহা সত্ত্বে ও বিপিন বাবু বলিতেছেন যে “অহং । বৃত্তি লোপ হয় হউক, এরূপ বাদ দিলে যে অজ্ঞেয় শূন্যাকার অথচ সভামাত্র পদার্থ অবশিষ্ট থাকে, তাহাই দ্রষ্টা সাক্ষী চৈতন্য বা আত্মা ।” অজ্ঞেয়’ অর্থাৎ কেহই তাহাকে জানে না—জানিবে না—জানিতে পারে না; সুতরাং সেরূপ আত্মাকে বিপিন বাবু ও জানেন না এবং তান্য কাহারও তাহ। জানিবার সম্ভাবনা ও নাই। এরূপ না জানা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা | | | १२ कन्न, • डांग = কিন্তু বিপিন বাবু র্তাহার স্বপক্ষের প্রমাণার্থে একজন সুপ্রসিদ্ধ মহাত্মাকে— ভগবান শঙ্করাচার্য্যকে—সহায় ডাকিতেছেন ; তিনি শঙ্করাচার্য্যের নিম্নলিখিত বচনটি উদ্ধৃত করিয়াছেন, আত্মন: সচ্চিদংশশচ বুদ্ধেবৃত্তিরিতিদ্বয়ং সংযোজ্য চাবিবেকেন জানামীতি প্ৰবৰ্ত্ততে । এবং তিনি ইহার অর্থ করিতেছেন “আত্মার সচ্চিদংশ ও বুদ্ধিবৃত্তি এই দুই পদার্থকে জীব অবিবেক হেতু সংযোগ করিয়া ‘অামি জানি’ এই বাক্য কহিতে প্রবৃত্ত হয়” । ইহার প্রতি আমাদের বক্তব্য এই যে, এখানকার এই যে ‘আমি জানি’ ইহা স্বতন্ত্র, এবং আমরা যাহার কথা ইতিপূৰ্ব্বে উল্লেখ করিয়াছি তাহা স্বতন্ত্র । ‘আমি জানি’ বলিতে দুই প্রকার ‘আমি জানি বুঝায়,—প্রথম, লৌকিক ব্যবহারের “আমি জানি” এবং, দ্বিতীয়, তত্ত্বজ্ঞানের “আমি জানি” । কথার ঘিনি উপদেশ দেন তিনিই বা কি ৷ রূপ উপদেষ্ট, এবং ঘিনি তাহা গ্রহণ ক- । রেন তিনিই বা কিরূপ শিম্য, তাহা বুঝিয়া ওঠা ভার । গুরু মদ-ছাগল দোহন করিতেছেন এবং শিম্য দুগ্ধ গ্রহণ করিবার জন্য চালুনা ধরিয়াছেন ; –কৌতুকের চড়ান্ত ! মান। যথাক্ষাং”—এক অন্ধ তার এক আন্ধের পথ-প্রদর্শক । যিনি তাত্মাকে জানেন তিনি কখনই আত্মাকে তাঙ্গেয় বলিতে পারেন না, কেননা জ্ঞাত বিষয় কখনই অজ্ঞেয় শব্দের বাচ্য হইতে পারে না ; তবেই হইতেছে যে, তাঙ্গেয়-বাদী অাকাকে জানেন না ; যদি তিনি আত্মাকে না জানেন, তবে তিনি আত্মার সম্বন্ধে যতই বড় বড় শব্দ প্রয়োগ করুন না কেন, সমস্তই অদন রে ঢেল নিক্ষেপ । ইহারই নাম “অন্ধেনৈব মীয়- , লৌকিক ব্যবহারকালে অামি যখন বলি যে, আমি গৌরবর্ণ বা শু্যামবর্ণ, তখন তামার শরীরকে লক্ষ্য করিয়াই “আমি” শব্দ প্রয়োগ করি, তেরাং তখন আমি তামার শরীরকে “তামি’ বলিয়া জানি ; শঙ্করাচাস্য বলিতেছেন যে এইরূপ তালিলে কাত্মক “আমি জানি”ই সচরাচর লোকে প্রচলিত— “সংযোজ্য চাবিলেকেন জানামাতি প্রবভঁতে ।” লৌকিক ব্যবহার কালে আমরা এরূপ করি বটে কিন্তু তত্ত্বজ্ঞানের তালোচনা-কালে আমরা তাত্মাকেই “আমি” বলিয়া জানি—শরীরাদিকে নহে । পুর্বের্ণাক্ত লৌকিক “আমি জানি” অবিবেকজনিত ; শেষোক্ত আধ্যাত্মিক “আমি জানি” বিবেক-জনিত । শঙ্করাচার্য্যের মতে অবিবেক-জনিত লৌকিক “আমি জানি”ই দৃশ্য ; বিবেক-জনিত আধ্যাত্মিক