পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০৩ তত্ত্ববোধিনী পত্রিক

  • २ रूझ, a छौन

করিয়া এই নামরূপে প্রবিষ্ট হইয়াছেন। তিনি স্বয়ং সংস্কারধৰ্ম্মবর্জিত। তিনি এই শরীরে কিন্তু স্বয়ং অশরীর। এখন অবশুই বুঝিলে এই জন্মাদি সংস্কার, ইহা, আত্মা যে তুমি তোমার নয়, কেবল এই শরীরের । E. পরে শিষ্য যদি বলে, দেখুন, আমি অজ্ঞ স্থখী দুঃখী বদ্ধ ও সংসারী, আমি এক পদার্থ অার পরমাত্মা অসংসারী এবং আমি হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র, সুতরাং তিনি অন্য পদার্থ। আমি কেবল ভঁহাকে উপহার নমস্কার ও বর্ণাশ্রমনির্দিষ্ট কৰ্ম্ম দ্বারা আরাধনা করিয়া সংসারসাগর পার হইবার ইচ্ছা করিতেছি। এক্ষণে তিনিই যে আমি ইহা কিরূপে সঙ্গত হয়। তখন আচার্য্য কহিবেন,সৌম্য, না এরূপ বুঝিও না । করিতেছে এমন নয় কিন্তু ভেদদশাঁর অনর্থ প্রাপ্তির কথা ও পুনঃপুনঃ কহিয়াছে। যে আয়ৈকত্বে বিশ্বাস না করে সে মৃত্যু হইতেও মৃত্যুকে প্রাপ্ত হয়। ফলত । ভেদদশাঁর তত্ত্বজ্ঞান হয় না । লোককে শ্রীতি দেবপশু বলিয়া নিন্দ করিয়াছে। অতএব বৎস, তুমি ব্রাহ্মণপুত্র অমুক বংশীয় প্রভৃতি আত্মপরিচয়ে যাহা কিছু কহিয়াছ তোমার সেই অভিমান মিথ্যাদৃষ্টি বলিয়া জানিও। আর তুমি বর্ণাশ্রমনির্দিষ্ট কৰ্ম্মাদি দ্বারা আরাধনার কথা ধাহা উল্লেখ করিলে তাহাও ভেদদর্শন হইতে উত্থিত, সুতরাং তাহা ও সম্যকদৃষ্টি নয়। আমি ইহা তোমাকে স্পষ্ট করিয়া বলিতেছি শুন । দেখ, ক্রিয়া, কারক ও ফলভেদের আশ্রয় এই তিন ব্যতীত কৰ্ম্মের স্বরূপসিদ্ধি হয় না । কৰ্ম্মের এই তিনটি উপাদান ভেদজ্ঞান এইরূপ । ভেদজ্ঞানে প্রত্যব্যয় ঘটে। ৷ শ্ৰুেতিতে কেবল যে ভেদদর্শন মাত্র নিষেধ । ভিমানীর পক্ষেই ব্যবস্থেয় । হইতে ভিন্ন । হইতে প্রসূত হইয়াছে। যাহা ভেদজ্ঞানমূলক তাহার অনুষ্ঠানে কোনও ফল নাই । আর উপবীত ধারণ না করিলে কোন কৰ্ম্ম সিদ্ধ হয় না, সুতরাং উপবীত ধারণ অবশ্যই কৰ্ম্মসাধন বলিয়া স্বীকার করিতে হইবে । এখন কথ। এই, সাধ্য কৰ্ম্মই যখন নিস্ফল তখন তৎসাধন উপবীতাদি ধারণও নিরর্থক হইয়া পড়িল। ফল দ্য এই জন্য পরমাত্মার অভেদজ্ঞানে এই কৰ্ম্ম ও তৎসাধন যজ্ঞোপবীতাদি ধারণ প্রতিষিদ্ধ হইয়াছে। কারণ কৰ্ম্ম ও তৎসাধন যজ্ঞোপবীতাদি ধারণ অভেদ-জ্ঞান-বিরোধী। ইহা সংসারীর পক্ষেই অর্থাৎ জাত্যাদ্যআর যিনি অভেদদশী তাহার কৰ্ম্ম ও উপবীতাদিতে কোনও প্রয়োজন নাই । কারণ অভেদ জ্ঞানে স্বাতন্ত্র ও কর্তৃত্ববুদ্ধি থাকে না । আত্মলোপের সহিত কর্তৃত্ব কিরূপে অম্বিত হইবে । এখন যদি বল সংসারী – জাত্যভিমানীও তো পরমাত্মা হইতে অস্বতন্ত্র, তবে তাহার পক্ষেই বা কিরূপে কৰ্ম্মবিধি ব্যবস্থেয় হইতে পারে। ইহার উত্তর এই যে, ঐ জাত্যভিমানী সংসারীর যত দিন ভেদবুদ্ধি থাকিবে তাবৎ কাল সে পরমাত্মা ভেদজ্ঞানে কর্তৃত্ব থাকে। সুতরাং কৰ্ত্ত যে, সে, কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান করিবে ইহাতে আর বক্তব্য কি । কিন্তু দেখ, যদি কৰ্ম্ম অপরিত্যাজ্য ও অনুষ্ঠেয় হইত তাহা হইলে শ্রীতি কৰ্ম্মসাধনের সহিত সম্বন্ধশুন্য এবং এই কৰ্ম্মের হেতু জাতি ও আশ্রমাদির সহিত সম্বন্ধশুন্য পরমাত্মার সহিত আত্মার তত্ত্বমসি ইত্যাদি বাক্যে অ ভেদ জ্ঞানের উপদেশ কখন করিত না এবং তাহাতে ভেদজ্ঞানের নিন্দাও থাকিত না । অতএব যিনি মুমুক্ষু সৰ্ব্বতোভাবে তাহার । জাতি ও কৰ্ম্ম পরিত্যাগ করা আবশ্যক ।