পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృ్న8 তত্ত্ববোধিনী পত্রিক १२ कछ, ७ छाँग যাহার জন্য যাহা করিতে হয়, তাহার জন্য তাহাই করে—বুদ্ধিমানের ন্যায় কাৰ্য্য করে ; কখনো যদি এরূপ ঘটে যে, একটি বৃক্ষের আশ-পাশের স্মৃত্তিক অত্যন্ত কঠিন কিন্তু তাহার কিয়দুর অন্তরে সরস মৃত্তিকা অবস্থিতি করিতেছে,তবে যত সোজা রাস্তা দিয়া সেই সরস মৃত্তিকায় শিকড় বাড়ানো যাইতে পারে—বৃক্ষটি পারৎপক্ষে তাহার চেষ্টার ক্রটি করে না। কিন্তু তাহা সত্ত্বেও বৃক্ষের সে চেষ্টা অন্ধ চেষ্টা ভিন্ন আর কিছুই না—তাহ সজ্ঞান চেষ্টা নহে। কোনো তার্কিক এখানে বলিতে পারেন— “কেমন করিয়া জানিলে তাহ সজ্ঞান চেষ্টা নহে ?” ইহার সহজ প্রত্যুত্তর এই যে, মনুষ্য ঔদ্ভিদ প্রাণ রাজ্য মাড়াইয়া— পাশবিক সংস্কার-রাজ্য মাড়াইয়া—জ্ঞান- । রাজ্যে উঠিয়াছে ; এই জন্য, প্রাণের ব্যাপারই বা কাহাকে বলে, অন্ধ সংস্কারের ব্যাপারই বা কাহাকে বলে, আর, জাগ্রত জ্ঞানের ব্যাপারই বা কাহাকে বলে— ইহার কিছুই তাহার নিকটে অবিদিত নাই । মনুষ্য আপনার মধ্যেই অচেতন প্রাণের ব্যাপার অনেক গুলি দেখিতে পায়—যেমন নিশ্বাস-প্রশ্বাস, ধমনী স্পনদন, ইত্যাদি ; অন্ধ সংস্কারের ব্যাপারও অনেকগুলি দেখিতে পায়, যেমন, সহাস্য প্রফুল্ল বদন দেখিলে তাহার দিকে নির্বিচারে অগ্রসর হইবার প্রবৃত্তি এবং ক্রর মুখভঙ্গি দেখিলে তাহ হইতে নির্বিচারে পিছাইয়া আসিবার প্রবৃত্তি, ইত্যাদি। একদিকে প্রাণ এবং অন্ধ সংস্কার, আর একদিকে জাগ্ৰত জ্ঞান, এ দুয়ের বিভিন্নতা মনুষ্য প্রথমতঃ আপনার অভ্যন্তরে সুস্পষ্ট রূপে বুঝিতে পারে ; দ্বিতীয়তঃ, অন্যের বাহ্য-লক্ষণ দৃষ্টে তাহার কোন কাৰ্য্যটি কোন শ্রেণীস্থ—প্রাণ শ্রেণীস্থ সংস্কার-শ্রেণীস্থ অথবা জ্ঞানশ্রেণীস্থ—তাহা বুঝিতে পারে। এইরূপ । প্রণালী অনুসারেই আমরা বুঝিতে পারি— যে,লক্ষ্য সাধনের চেষ্টা যাহা উদ্ভিদ রাজ্যে দেখিতে পাওয়া যায়—তাহ অন্ধ-চেষ্টা মাত্র ; তেতালার উপর-হইতে কোনো মনুষ্য ভূতলে পড়িয়া যাইবার সময়, সে এরূপ-ভাবে হস্ত প্রসারণ করে যাহাতে তাহার মস্তক আঘাত হইতে রক্ষা পাইতে পারে ; এরূপ কাৰ্য্য বিশেষ-একটি লক্ষের সাধন তাহাতে আর সন্দেহ নাই—কিন্তু তাহা বলিয়া তাহ সজ্ঞান কাৰ্য্য নহে, কেন না তাহ কর্তার অজ্ঞাতসারে কৃত হয় । বৈজ্ঞানিক ভাষায় এরূপ কাৰ্য্যকে প্রাতিক্ষেপিক কাৰ্য্য (reflex action) বলে । অৰ্দ্ধ স্থপ্ত ব্যক্তির পায়ে সুড়সুড়ি দিলে, সে যেমন অজ্ঞাতসারে তাহার প্রতিবিধানের চেষ্টা করে—সেই রকমের অন্ধ চেষ্টাই বিজ্ঞান-শাস্ত্রে প্রাতিক্ষেপিক কাৰ্য্য বলিয়া উক্ত হয় । উদ্ভিদের মূল-প্রসারণ কার্য্য এইরূপ প্রাতিক্ষেপিক রকমের কাৰ্য্য ; সুতরাং তাহা লক্ষ্য বিশেষের সাধন-স্বরূপ হইলেও, তাহ সজ্ঞান-শব্দের বাচ্য হইতে পারে না । উদ্ভিদ-রাজ্য হইতে একধাপ উচ্চে পা বাড়াইয়া যখন আমরা জীব-রাজ্যে উপনীত হই, তখনই আমরা দেখিতে পাই যে, প্রাণের অচেতন লক্ষ্যসাধন-প্রবৃত্তির চক্ষু ফুটিয়া তাহা সচেতন ভাব ধারণ করিয়াছে; কাৰ্য্য পূর্বেও যে প্রণালীতে চলিতেছিল এখনো সেই প্রণালীতে চলিতেছে—কেবল পূর্বে যেখানে জ্ঞান-চক্ষু ছিল না এখন সেইখানে জ্ঞানচক্ষু পরিস্ফুট হইয়াছে। প্রাণই মুখ্যরূপে জ্ঞান-দ্বারা চেতিত হয় এবং প্রাণের মধ্য দিয়াই শরীর ও বহির্বস্তু-সকল জ্ঞা- . নের আয়ত্তাভ্যন্তরে আনীত হয়। এই