পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృషిణ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ३२ कब्र, ७ छt१ी

  • or on- m -

পরায়ণ সাধুর ব্রহ্মের অস্তিত্বে আস্থা স্থাপন করিয়৷ ‘ব্রহ্ম কি ? তিনি কোথায় ? ইহা জানিবার জন্য আকুল হৃদয়ে ব্রহ্মনির্ণয় করিতে প্রবৃত্ত হইতেন । যাহা অসত্য যাহা আসার, যাহা কাল্পনিক, আর যাহা জড় বা জড়ীয় গুণসম্পন্ন, তাহাকে নেতি নেতি বলিয়া দূরে বিদায় করিয়া দিতেন, এবং সার-সত্য ও সার-তত্ত্বে উপনীত হইতেন। নেতির মূল-ভূমি আস্থা । এই আস্থার প্রকৃত অর্থ ঈশ্বর আছেন।” ইহা ঈশ্বর নয়, ইহা ঈশ্বর নয়, এইরূপ চিন্তা, আলোচনা, পরীক্ষা ও গবেষণা দ্বারা “ইহা ঈশ্বর’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার নাম ব্রহ্মজ্ঞান। নেতি নেতি করিয়া ইতিতে উপস্থিত হওয়া যায়, অর্থাৎ অনী- । শ্বরত্ব গুণের শেষ ও ঈশ্বরত্ব গুণের প্রারম্ভে উপনীত হওয়া যায় । ঈশ্বরত্ব গুণের প্রারম্ভে উপস্থিত হইলেই ঈশ্বরের স্বরূপ সম্বন্ধে চিন্তার উদয় হইয়া থাকে। ঈশ্বর ইহা নয়, ঈশ্বর উহা নয়, ঈশ্বর তাহ নয়, তবে ঈশ্বর কি ? এই প্রশ্নের উত্তরই স্বরূপ-লক্ষণের লক্ষ্য । সুতরাং প্রাচীন ঋষিগণ ব্রহ্মের তটস্থ লক্ষণের পরেই স্বরূপ লক্ষণের অবতারণা করিয়া গিয়াছেন । ব্রহ্মের স্বরূপ-লক্ষণ “সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্মেতি” । এই স্বরূপ-লক্ষণে উপনীত হইতে হইলে সাধনার প্রয়োজন । জলে অবতরণ না করিলে যেমন সন্তরণ শিক্ষা করা যায় না, ব্রহ্ম-স্বরূপে নিষ্ঠাবান ন হইলে সেইরূপ ব্রহ্ম-স্বরূপ উপলব্ধি করা যায় না। ব্রহ্ম-স্বরূপ উপলব্ধি করি বার জন্য ব্রহ্ম-উপাসনার প্রয়োজন । প্রা- . চীন ব্রহ্মপরায়ণ ব্রহ্মোপাসকেরা ব্রহ্মস্বরূপে নিমগ্ন হইয়া ব্রহ্মকে সার ও তাঁদতর বস্তুকে অসার মনে করিয়া ‘সত্যং’ এই মহা বাক্য উচ্চারণ করিলেন । জল

ع--------

সঙ্গন্ধে কোন ব্যক্তির জ্ঞান না থাকিলে সেই ব্যক্তি যেমন জলে নিমগ্ন হইয়াই উচ্চৈঃস্বরে বলে “জল শীতল, জল শীতল” সেইরূপ প্রাচীন ব্রহ্মপরায়ণ ব্ৰহ্ম-স্বরূপে । দণ্ডায়মান হইয়া বলিলেন “সতাং” । পিপাসু ব্যক্তি পিপাসার প্রবল আক্রমণে অধীর হইয়া জলের অন্বেষণ করিতেছিলেন, হঠাৎ তিনি জল পাইয়। পিপাসা নিবারণ পূর্বক বলিলেন “ওগো ! জলে পিপাসা নিবারণ হয়, জল পানকর, জল পানকর ।” ব্ৰহ্মপরায়ণ সাধুও একাকী অরণ্যে বাস করিয়া নির্জনতার মধ্যে নানা প্রকার ভয় ও বিভীষিকা দেখিতেছিলেন, প্রাণের ব্যথা বলিবার জন্য হৃদয় ফাটিয়া যাইতেছিল, মন বিয়ঃ হইতেছিল, ত্রিজগৎ অন্ধকারময় দেখিতেছিলেন, হৃদয়ের হৃদ্য বস্তু পাইবার জন্য হৃদয় হাহাকার করিতেছিল, তখন অা হ্রার মধ্যে সেই জ্ঞানের আলোক পাইলেন, আঁধারে আলোক দেখিলেন, নির্জনে বন্ধু পাইলেন । প্রাণের ব্যথা জানাইতে, মনের কথা বলিতে; প্রাণের মধ্যে জ্ঞানময় পুরুষকে দেখয়। বলিলেন “জ্ঞানং ।” তার পর একে একে জল স্থল অন্তরীক্ষ পৰ্ব্বত গিরি নদী ও সমুদ্র, ভু. লোক দু্যলোক প্রভৃতি ব্রহ্মের সভা ও জ্ঞানসাগরে ডুবিয়া গেল, তখন আমনি উচ্চৈঃস্বরে বলিলেন ৪ – “ অনন্তম রহ্ম’’ সত্যং জ্ঞানমনস্তং ব্রহ্মেতি । অনেকের মুখেই এই কথা শুনিতে পাওয়া যায় যে, প্রাচীন ঋষিরা ব্রহ্মজ্ঞানী ছিলেন, তাহারা ব্রহ্মকে অগম্য অপার ও অসীম মনে করিয়াই নিশ্চিন্ত থাকিতেন কিন্তু ব্ৰহ্ম-উপাসনা করিতেন না। এই ৷ কথাটা সম্পূর্ণ ভ্ৰম ।