পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৮ ৷ প্রতিদ্বন্দিতা দেখিতে পাই ; ভৌতিক বলের সঙ্গে ভৌতিক বলের যতটা মিল— জীবনের সঙ্গে ভৌতিক বলের ততটা মিল নাই—কিন্তু মিল আছে; যদি দুয়ের মধ্যে আদবেই মিল না থাকিত, তবে উভয়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দিতাও থাকিতে পারিত না। সমস্ত প্রতিদ্বন্দিতার মূলে যে এক ঐক্য ভূমি বর্তমান রহিয়াছে তাহাই মূল প্রকৃতি। সাংখ্যশাস্ত্রে সেই ঐক্য-ভূমিটি সাম্যাবস্থা | নামে সংজ্ঞিত হইয়াছে ; ফলে—সাম্যও যা—ঐক্যও তা—একই; কিসের সাম্যা- ৷ মনে কর ক এবং খ এই দুই শক্তি পর বস্থা ? না প্রতিদ্বন্দী শক্তি-ত্রয়ের সাম্যা বস্থা। কি সে শক্তিত্রয় ? না সত্ত্ব-রজ । সত্ত্ব রজস্তমোগুণের সবিশেষ । বৃত্তান্ত বিবৃত করিয়া বলিবার এ স্থানও । স্তমোগুণ । নহে—এ সময়ও নহে ; সুতরাং এখানে তাহাতে হস্তক্ষেপ করা এক প্রকার “ধান ভানিতে শিবের গীত ।” তবে মোটা মোটি দৃষ্টান্ত চলে এই পৰ্য্যন্ত বলা যাইতে পারে যে, মনে কর ভৌতিক বল তমোগুণ, প্রাণ রজোগুণ, মন সত্ত্বগুণ ; এই তিনের প্রত্যেকের সহিত অপর দুয়ের প্রতিদ্বন্দিত। স্পষ্টই দেদীপ্যমান। প্রাণের সহিত একদিকে ভৌতিক বলের—আর এক দিকে মনের—কোস্তাকুস্তি, মনের সহিত এক দিকে প্রাণের অার একদিকে ভৌতিক বলের কোস্তাকুস্তি, ভৌতিক বলের সহিত একদিকে প্রাণের আর এক দিকে মনের কোস্তাকুস্তি, এ তো আমাদের চক্ষের সমক্ষে প্রত্যহই ঘটিতেছে । এই সমস্ত প্রতিদ্বন্দী শক্তির সাম্যাবস্থাই শাস্ত্রানুসারে (যুক্তি-অনুসারেও বটে) মূল । প্রকৃতি । প্রভাত বাৰু এইস্থানে বলিবেন—সন্দেহ নাই যে, সমস্তই তো দেখিতেছি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা २९ कछ, ७ छत्र সংক্ষেপে ইহার উত্তর এই যে, প্রকৃতির কার্য্য জগৎ চালানো—ঈশ্বরের কার্যা স্বীয় প্রভাব দ্বারা প্রকৃতিকে বঁাচাইয়া রাখা। প্রকৃতি আপেক্ষিক সত্য—সুতরাং আপনাতে আপনি পর্যাপ্ত নহে; কাজেই প্রকৃতি আপনাকে আপনি বঁাচাইয়। রাখিতে অসমর্থ। প্রকৃতি আপেক্ষিক সত্য—-ইহা কে বলিল ? সমস্ত প্রকৃতিই বলিতেছে ! সমস্ত প্রকৃতিই প্রতিদ্বন্দী শক্তি-ত্রয়ের নামান্তর । আমরা দেখাইয়াছি যে, সমস্ত প্রকৃতি প্রতিদ্বন্দিতার উপরে প্রতিষ্ঠিত । স্পরের প্রতিদ্বন্দী ; এমত স্থলে তুমি যদি বল যে, ক-ই সমস্তের মূল ; তবে আমি বলিব যে, খ তবে কি অপরাধ করিল ? তুমি যদি বলে যে, খ-ই সমস্তের মূল তবে আমি বলিব যে, ক তবে কি অপরাধ করিল ? অতএব প্রতিদ্বন্দী শক্তি-দ্বয়ের বা শক্তি-ত্রয়ের কোন-টিই সমস্তের মূল হইতে পারে না ; তবে কি উভয়ের সাম্যাবস্থা সমস্তের মূল ? সাম্যাবস্থা একটা অবস্থা মাত্র-অবস্থা কিছু আর শূন্যে লট্ গনো থাকিতে পারে না,—আপনাতে আপনি ভর করিয়াও স্থিতি করিতে পারে না, বস্তু অবলম্বন করিয়াই অবস্থা সংঘটিত হয় । সত্ত্ব রজ স্তমো গুণের সাম্যাবস্থা সত্ত্ব রজ স্তমো গুণকে অপেক্ষা করে—সুতরাং তাহা আপেক্ষিক সত্য ; কাজেই মূল প্রকৃতিও আপেক্ষিক সত্য। পরিপূর্ণ সত্য মূলে না থাকিলে আপেক্ষিক সত্য থাকিতে পারে না—ইহা আমরা এতবার এত রকমে সপ্রমাণ করিয়াছি যে, এখানে তাহার পুনরুল্লেখের কোনো প্রয়োজনই দেখা যাইতেছে না । তা শুধু নয়, সে কথাটি এমনি সহজ যে—তাহ বলিবামাত্রই প্রকৃতির কার্য্য—ঈশ্বরের কার্য্য তবে কি ? } অপক্ষপাতী পাঠক মাত্রেরই তাহ ধ্রুব- ।