পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(te তত্ত্ববোধিনী ३२ कन्न, ७ खांनं পত্রিকা সত্তা-সাগরে ডুবিতেছেন। ডাকিলে সাড়া নাই, মুখে কথাটা নাই, ভাব ভঙ্গীতে চিত্তবিকারের চিহ্ন মাত্র নাই, মুখমণ্ডলে শাস্তির প্রতিকৃতি, দৃষ্টিতে প্রেম ভক্তির জীবন্ত চিত্র, পদবিক্ষেপে বিশ্বাস বিনয় ও ব্যাকুলতা-মিশ্রিত অমিয় সুধা ঢালিতে ঢালিতে সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্মের স্বরূপসাগরে ডুবিলেন, আর উঠিলেন না। কিন্তু জীবন-বৃন্তের কোরকে “তপসা ব্ৰহ্ম বি জিজ্ঞাসস্ব” দ্বৈতের প্রস্ফুটিত অবস্থার প্রাণস্য প্রাণের সৌরভ ঢালিতে ঢালিতে র্তাহারা নীরব হইয়াছেন। সেই জীবন-ফুল এখনও জীবন্ত অৰ্দ্ধবিকশিতাবস্থায় একাত্ম- ! প্রত্যয়-সারম্ প্রপঞ্চোপশমমৃ শান্তং শিবম- | শোভার তাধার, সৌরভের ভাণ্ড, দেখ । আনন্দিত হইবে, ত্ৰাণ কর তৃপ্ত হইবে। - "অথীতে। ব্রহ্মজিজ্ঞাসা’ এই প্রশ্নটী যেমন আর্য্য জীবনের জীবন বৃন্তের অভ্যন্তরে থাকিয়া জীবন-ফুলকে ফুটাইয়া দিত, এমন আর কুত্ৰাপিও দৃষ্টিগোচর হয় না । ব্রহ্ম উপাসনাই বল আর ব্ৰহ্মপূজাই বল, যোগ তপস্যা বা ধ্যানই বল, এই সকলেরই ভিত্তিভূমি ব্রহ্মজিজ্ঞাসা । আর্য্য-হৃদয়ে আদৌ যদি ব্রহ্মজিজ্ঞাসা অভু্যদি ত না হইত, তবে আর শান্ত দান্ত উপরত, শান্তিময়, প্রেমময়ও ভক্তিপূর্ণ অাৰ্য্য জীবন দেখিয়া আমরা মোহিত হইতে পারিতাম না । অবশ্যই সকলের হৃদয়ে ব্রহ্ম-জিজ্ঞাসা উপস্থিত নাও হটতে পারে, কিন্তু জিজ্ঞাসা মানবমনের মূল প্রকৃতি । বালক বল, বৃদ্ধ বল আর যুবাই বল, সকলেরই প্রাণ জিজ্ঞাসাময় । বালকের প্রশ্নের চোটে পিত। মাতা অস্থির, যুবকের প্রশ্নতরঙ্গে শিক্ষক আকুল, বৃদ্ধের হৃদয়-ভেদী প্রশ্ন-বাণে নিজে অনুবিদ্ধ। কি পাপী কি পুণ্যবান, কি থাতো জ্ঞানী কি মূখ, কি আস্তিক কি নাস্তিক, সকলেরই প্রাণরূপ ধমনীতে জিজ্ঞাসাশোণিত নিরন্তর প্রবাহিত হইতেছে । মানবের গুরু জিজ্ঞাসা, উপগুরু জগৎ ; উন্নতির আদিমূল জিজ্ঞাসা, উপমূল জ্ঞান বিজ্ঞানাদি ; পথ জিজ্ঞাসা, উপপথ ধাৰ্ম্মিক জ্ঞানী মহাজন প্রভৃতি । কাহার হৃদয় কি চায়, তাহা তাহাদিগের জিজ্ঞাসা দ্বারাই বোঝা যাইতে পারে। কেহ জ্ঞান চায়, কেহ ভক্তি চায়, কেহ নীতি চায়, কেহ ধৰ্ম্ম চায়, কেহ প্রেম চায়, কেহ পবিত্রতা চায়, পৃথিবীর মধ্যে এইরূপ চাওয়ার ভাব প্রায় প্রত্যেক ধৰ্ম্ম-সমাজে, প্রত্যেক লোক সমাজে বিদ্যমান আছে। আবার ইহার মধ্যে এক একটী চাওয়া এক একটী জাতির বিশেষ ভাব। সে যাহা হউক, আমাদের আর্য্য ঋষিদের বিশেষ ভাব ব্রহ্মকে চাওয়া । তাহার জন্যই আর্য্যেরা জ্ঞান জি জ্ঞাসা ভক্তি বা প্রেম জিজ্ঞাসা না করিয়া মুখপত্তনেই আরম্ভ করিলেন, ‘অব্রহ্মজিজ্ঞাসা । একমাত্র ব্রহ্মজিজ্ঞাসার সঞ্জীবনী শক্তিতে রাজা সিদ্ধার্থ ভিক্ষুক বুদ্ধ হইলেন, নবদ্বীপের নিমাই প্রেমিক চৈতন্য হইলেন, রূপ ও সনাতন উচ্চপদ ও বিষয়-বাসনা তুচ্ছ করিয়া ফকির হইলেন । র্যাহার হৃদয়ের জিজ্ঞাসা যত গভীর ও ওজস্বী, তাহার হৃদয়ের বেগ তত প্রখর ও সজীব । মনের-প্রকৃতি সমালোচনা করিয়া দেখিলে প্রতীতি হইবে যে, এক এক শ্রেণীর হৃদয়ে এক একটা জিজ্ঞাসা প্রপল । কিন্তু তাহ বলিয়া এমন কথা বলা যাইতে পারে না যে, ইহার হৃদয় কেবল মাত্র জ্ঞানজিজ্ঞাসার আধার আর উহার হৃদয় এক মাত্র ধৰ্ম্ম-জিজ্ঞাসার আশ্রয়-ভূমি । বিশেষ ভাবে দেখিতে গেলে অল্পাধিক পরিমাণে প্রত্যেক হৃদয়