পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ তত্ত্ববোধিনী পত্রিক ०२ कछ, ० छ।" ப்யகாயல் রায় বলিলেন, মহাভাব প্রেমলীলা সাধনার চরম । ইহা হইতে আর শ্রেষ্ঠ সাধন নাই । চৈতন্য বলিলেন, তোমার মুখে অপূর্ব অমৃত স্রোত প্রবাহিত হইতেছে । আমি যে নিমিত্ত তোমার নিকট আসিয়াছিলাম, তাহ সফল হইল, আরও কিছু বল আমি শুনি । রাধাকৃষ্ণের স্বরূপ কি, এবং কাহাকে কোন রস কোন প্রেম | বলে, এই সব তত্ত্ব তুমি বিস্তারিত রূপে বল আমি শুনিয়া সুখী হই । “প্ৰভু কছে আগে কহ শুনিতে পাই মুখে । অপূৰ্ব্বামৃত নদী বহে তোমার মুখে ॥ প্রভু কহে যে লাগি আইলাম তোম। স্থানে । সেই সব তত্ত্ব বস্ত হইল মোর জ্ঞানে ॥ এবে জানিল সেবা সাধন নির্ণয় । আগে আর অাছে কিছু শুনিতে মন হয় ॥ কৃষ্ণের স্বরূপ কহ রাধার স্বরূপ। রস কোন তত্ব প্রেম কোন তত্ত্বরূপ ॥ কৃপা করি এই তত্ত্ব কহত আমারে । তোমা বিনা কেহ ইহা নিরূপিতে নারে ॥” রায় বলিলেন, সৎ চিৎ আনন্দ ইহাই কৃষ্ণের স্বরূপ । তিনি সকল কারণের মূল কারণ, অনাদি পুরুষ, সৰ্ব্বৈশ্বৰ্য্যপরিপূর্ণ, সৰ্ব্বশক্তিমান, এবং সর্ববরসস্বরূপ । “লচ্চিদানন্দ তনু ব্রজেন্দ্র নন্দন । সৰ্ব্বৈশ্বৰ্য্য সৰ্ব্বশক্তি সৰ্ব্ব রসপুর্ণ ॥ সচিৎ অনিন্দ ময় কৃষ্ণের স্বরূপ । অতএব স্বরূপ শক্তি হয় তিনরূপ ॥” সচ্চিদানন্দ কৃষ্ণের স্বরূপ, তাহার স্বরূপশক্তিও তিন প্রকার। হলদিনী, সন্ধিনী ও সম্বিৎ । “আনন্দাংশে হলাদিনী সদংশে সন্ধিনী । চিদংশে সম্বিং যারে জ্ঞান করি মানি ॥” যে শক্তিতে ভক্তচিত্তে আনন্দবিধান করেন, তাহার নাম হলাদিনী শক্তি । এই হলাদিনীর নাম প্রেম, প্রেমের সার মহা “কৃষ্ণকে আহলাদে তাতে নাম আহলাদিনী । সেইশক্তি দ্বারে মুখ আস্বাদে আপনি ॥ মুখরাপ কৃষ্ণ করে সুখ আস্বাদন । ভক্তগণে সুখ দিতে হলাদিনী কারণ ॥ হলাদিনীর সার অংশ তার প্রেম নাম । আনন্দ চিন্ময়রূপ রসের অাখ্যান ॥ প্রেমের পরম সার মহাভাব জানি । সেই মহাভাবরূপ রাধা ঠাকুরাণী ॥” এই মহাভাবময়ী রাধিকার প্রতি ভগবানের স্নেহ হুগন্ধি দ্রব্যের ন্যায়। এই ভগবৎ স্নেহুরূপ হুগন্ধি দ্রব্যের স্বস্ত্ৰাণ রাধিকার অঙ্গের উজ্জ্বল বর্ণ। এই সুগন্ধিপূর্ণ উজ্জ্বল-দেহ ভগবৎকৃপারূপ অমৃতরসে স্নাত হয়, পরে হরির লাবণ্যামৃত রস তদুপরি বর্ষিত হয় । এই প্রকারে মহা ভাবরূপ রাধিকা সচিদানন্দময় রূপ রসে যখন অভিষিক্ত হইল, অর্থাৎ পরস্পরের দর্শনে প্রেম উচ্ছসিত হইলে লজ্জা অা | সিয়া মহাভাবকে আচ্ছাদিত করিল, এই লজ্জাই রাধিকার পট্টবসন । সৌন্দর্য্য কুঙ্কুম চন্দনাদি প্রণয়, স্মিতকান্তি অঙ্গের বিলেপন, হরিপ্রেমরস মৃগমদ, প্রচ্ছন্ন মান ধম্মিল্ল, প্রণয়মান বক্ষ আচ্ছাদিনী কপুলিকা। অনুরাগ অধরের তাম্বুলরাগ, হর্ষ পুলকাদি সাত্বিক ও সঞ্চারী গুণ সকল দেহের ভূষণ। এই ভাবভূষণে ভূষিতা, গুণশ্রেণিরূপ পুষ্পমালা ও সৌভাগ্যরূপ তিলক ধারিণী প্রেমের সার মহাভাবরূপ রাধিকা হরিলীলার অনুকূল মনোবৃত্তিরূপী সখীগণ পরিবেষ্টিত হইয়া নিজ অঙ্গের সৌরভালয়ে গর্বের পর্য্যঙ্কে উপবিষ্ট হইয়া সৰ্ব্বদা - হরিসঙ্গ লাভ চিন্তাতে মগ্ন আছেন। প্রাণ নাথের নাম গুণ যশ মহিমা শ্রবণ কীৰ্ত্তনই র্তাহার কার্য্য । তিনি বিশুদ্ধ প্রেম রত্নাকর হৃদয়েশ্বরকে প্রেমরূপ সোমরস পান করাইয়। র্তাহার সকল কামনা পূর্ণ । ভাব, এই মহাভাবই শ্রীরাধিকার স্বরূপ করেন ।