পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৪ ভাবের তাৎপর্ষ্য । যাহা ইন্দ্রিয়বিকারজনক সে বিশুদ্ধভাব নহে। চৈতন্যচরিতামৃত স্পষ্ট কহিয়াছে, "সহজে গোপীর প্রেম নহে প্রাকত কাম ।” কিন্তু কি পরিতাপের বিষয়। আধুনিক বৈষ্ণব সমাজে এই ভাবের আর লেশমাত্র নাই। বৈষ্ণব শাস্ত্রের এই আধ্যাত্মিক রূপকময় প্রেমসাধনার উপদেশ অর্বাচীন বৈষ্ণবগণ বুঝিতে না পারিয়া বৈষ্ণব দলে নানা প্রকার কুৎসিত ব্যাপার আনয়ন করিয়া প্রেমভক্তিপূর্ণ পবিত্র বৈষ্ণবধৰ্ম্মকে কলুষিত করিয়াছে। অধিকাংশ বৈষ্ণবের বিশ্বাস এই যে পূৰ্ণব্রহ্ম সনাতন মানবীগর্ভে জন্মগ্রহণ করিয়া পরদারাভিমর্ষণাদি দুক্রিয়াতে রত হইয়াছিলেন । শাস্ত্রলিখিত কৃষ্ণের কীর্তি সকল ভগবানের প্রকৃত লীলা মনে করিয়া কতলোকে জীবন্ত কৃষ্ণলীলার অভিনয় করিয়া আপনাকে কৃতাৰ্থ বোধ করিতেছে। গকে ইতিহাসের চক্ষে দেখিতে গিয়াই যত কুসংস্কার ভ্রান্তি উপস্থিত হইয়াছে। বাস্তবিক রাধাকৃষ্ণের প্রেম এমনিই প্রাকুত ভাবে বর্ণিত হইয়াছে যে সাধারণ জন গণ রূপকের আবরণ ভেদ করিয়া প্রকৃত । সত্যে পেচিতে না পারিয়া মহাভ্রমে প- | তিত হইয়াছে। ঈশ্বরকে হৃদয়স্বামী রূপে প্রেমভক্তি দ্বারায় উপাসনা করাই মাধুর্য্যভাবে উপাসনা । রাধিক সাধক, কৃষ্ণ উপাস্য, ইহাই রাধাকৃষ্ণের মূলভাব । কিন্তু শাস্ত্রকারদিগের বর্ণনা বাহুল্যে ও গোস্বামীদিগের ভ্রান্ত উপদেশে সাধারণ বৈঞ্চব সম্প্রদায়ের মহা বিকৃতি ঘটিয়াছে। “চৈতন্য চরিতামৃত” বৈষ্ণব সাধারণের প্রামাণ্য গ্রস্থ, অথচ তল্লিখিত উপরোক্ত রাধা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা .ছেন । রূপকভাবে । কাল্পনিক গল্পের আকারে সত্য-বিশেষ । প্রকাশের জন্য পুরাণের স্বষ্টি, কিন্তু পুরা অপারত পুরুষ অর্থাৎ যাহাকে কেহ আব রণ করিতে পারে না, তাহার প্রকাশ হয় । এইত বাসুদেবের অর্থ। ०२ কল্প, eভাগ কৃষ্ণের প্রেমতত্ত্ব ব্যাখ্যা তাহাদের মধ্যে বিন্দুমাত্রও স্থান প্রাপ্ত হয় না । শ্ৰীকৃষ্ণের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব সম্বন্ধে আমরা কোন কথাই বলিতেছি না । সে সকল আলোচনা পরিত্যাগ করিয়া রামানন্দ ও চৈতন্যের শাস্ত্রপ্রসঙ্গে কৃষ্ণ শব্দ ঈশ্বর অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে, তাহাই ধরিয়া আমরা লিখিলাম। চৈতন্য মহাজ্ঞানী ছিলেন, তিনি যে গোপনন্দন বংশীধারী কৃষ্ণের উপাসনা করিতেন না, রামানন্দের সহিত কথোপকথনেই তাহ প্রকাশ পাইতেছে । যিনি হৃদয়কে কর্ষণ করেন, তিনিই কৃষ্ণ । ভাগবতের ৪র্থ স্কন্ধের একটি শ্লোকের জীব গোস্বামী ব্যাখ্যা করিয়া । শ্লোকটির উৎপত্তি এইরূপ, পাবর্বতি মহাদেবকে একদিন জিজ্ঞাসা করিলেন, শ্ৰীকৃষ্ণ যদি অনন্তই হইলেন, তবে আবার দেবকীর গর্ভে র্তাহার জন্ম হইল, এ কি প্রকার ? মহাদেব বলিলেন, বসুদেব শবেদ আন্তঃকরণ । বিশুদ্ধ অন্তঃকরণে যখন শ্রদ্ধার উদয় হয়, তখন

কৃষ্ণের নন্দালয়ে বাস, একথারও ব্যাখ্যা অন্য প্রকার । গায়ত্রী-চিন্তা । “সৰ্ব্বলোক প্রকাশক সৰ্ব্বব্যাপী সেই পূর্ণ মঙ্গল জগৎ প্রসবিতা পরম দে বা তার বরণীয় জ্ঞান ও শক্তি ধ্যান করি, যিনি আমাদিগকে বুদ্ধিবৃত্তি সকল প্রেরণ করিতেছেন ।’’ যিনি অসীম ব্রহ্মাণ্ডের স্বষ্টিকর্তা, যিনি মহতো মহীয়ান, রাজাধিরাজ, সকলের প্রভু নিয়ন্তা ও অধিপতি, তাহার জ্ঞান শক্তি অনুধ্যান করি। পৃথিবী আকাশ ও · উচ্চতর গগনে যেখানে সুদূর তারক