পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ددvد m۹: নষ্ট করিবার চেষ্টা করিতেছেন, অধ্যাত্মবিৎ পণ্ডিতদিগের বিজ্ঞান-চক্ষে তাহা নিতান্ত ভ্ৰমাত্মক । আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার যোগাকর্ষণ-শক্তি বৃদ্ধি করিবার জন্য অধ্যাত্ববিৎ পণ্ডিতেরা যেরূপ সাধনসম্পন্ন, উল্লিখিত বিজ্ঞানবিং পণ্ডিতেরা যদি সেইরূপ সাধনসম্পন্ন হইতেন, তাহা হইলে তঁtহারা এই ভ্রান্তি ইষ্টতে মুক্তিলাভ করিয়া আধ্যাত্মিক স্বখভোগে কখনই বঞ্চিত হইতেন না। শরীর মন সম্বন্ধে এই যে যোগাকর্ষণ-শক্তি, তাহা আত্মা এবং পরমাত্মার মধ্যস্থিত যোগাকর্ষণ-শক্তির আশ্রিত রাখিয়া কোথায় ঐ বিজ্ঞানবিং পণ্ডিতেরা বিজ্ঞান গৌরব রক্ষা বলুছাট সাম্বৎসরিক ব্রাহ্মসমাজ । | | ১৭৫ ৷ মৃত্যুর পরবর্তী কাল ব্যতীত আর কোন কাল নির্দিষ্ট হইতে পারে ? সত্য সকল জানি বার জন্য জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা করিতে হয়, সুখ-শাস্তি বিস্তারের জন্য সমুদয় নরনারীর প্রতি বিশুদ্ধ প্রেম প্রকাশ করিতে হয়, কিন্তু । যে বিজ্ঞানময় পরমাত্মা পরম সত্য ধ্রুব সত্য, যিনি মুখ-শান্তির ত্বনন্ত উৎস, র্যাহার এক বিন্দু জ্ঞান ও প্রেম পাইয়া মনুষ্য মহত্ত্ব লাভ করিয়াছেন, সেই পরম সত্য, সেই প্রেমা ম্পদ স্বর্থ-স্বরূপ জ্যোতিৰ্ম্ময় মহান পুরুষ ঈশ্বরকে সৰ্ব্বক্ষণ আত্মস্থ করিয়া রাখিবার জন্য যদি কালের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে করিবেন, না তাহাদের রচিত বিজ্ঞানের । মূলে এই কুঠারাঘাত প্রদান করিয়াছেন, যে পরমাত্মাকে জানা একেবারেই অসাধ্য বলিয়। র্তাহার সাধন অপ্রয়োজন | আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মধ্যস্থিত যোগাকর্ষণ-শক্তি যদি অপ্রয়োজন হইল তবে ইন্দ্রিয়গণের এবং মনোবৃত্তি সকলের সম্বন্ধে যোগাকর্ষণশক্তি কি তদপেক্ষা অধিকতর অপ্রয়োজন নয় ? কেন না শরীর মন বিনষ্ট হইবার সঙ্গে সঙ্গে তন্তং সম্বন্ধীয় যোগাকর্ষণ-শক্তি একেবারে নষ্ট হইবে। আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার ষে যোগাকর্ষণ শক্তি তাহার ক্ষয় নাই, ধ্বংস নাই। মনুষ্য যতই সাধন সম্পন্ন হইবে, ততই তাহার উন্নতি। পাপপুণ্যের দণ্ড পুরস্কার ভোগ করিয়া মোক্ষাবস্থা প্রাপ্ত হইবার জন্য যদি কালের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে হয়, তবে মৃত্যুর পরবর্তী কাল ভিন্ন আর কোন কাল অবধারিত হইতে পারে ? আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার যে স্বাভাবিক যোগাকর্ষণ-শক্তি আছে, তপস্যা প্রভাবে সেই যোগাকর্ষণ-শক্তির উৎকর্ষ সাধন করিয়৷ যদি চির যোগ নিবদ্ধ করিবার জন্য কালের প্রতি দৃষ্টিপাত করিতে হয়, তবে হয়, তবে মৃত্যুর পরবর্তী কাল ব্যতীত আর কোন কাল অবধারিত হইতে পারে ? জ্ঞানধৰ্ম্মসমন্বিত অবিনশ্বর আত্মা পার্থিব ক্ষুদ্র সুখের অনিত্য উপকরণ সকলে কখনই প্রকৃতরূপে স্বর্থী হইতে পারে না। অতএব মোক্ষলাভার্থী হইবার জন্য এই ত্রিবিধ যোগাকর্ষণ-শক্তির সাম্যভাব রক্ষা করিয়া সুখ অন্বেষণ কর, তাহ হইলেই জানিতে পারিবে, যে একমাত্র পরমাত্মাই সুখ-স্বরূপ । তাছাকে পরিত্যাগ করিয়া সুখ অন্বেষণ ক ত রিলে এই শরীর মন আত্মা সম্বন্ধে ত্রিবিধ যোগাকর্ষণ-শক্তির বৈষম্যভাব উপস্থিত ছইয়া মনুষ্য কখনই প্রকৃতরূপে মুখী হইতে পারে না। এই জন্যই মহর্ষির উল্লিখিত জ্ঞানগৰ্ব শ্লোকে উক্ত হইয়াছে— “ষোবৈ ভূম তৎমুখং নামে মুখমস্তি ।” “যিনি ভূম, যিনি মহান, তিনি স্বধ স্বরূপ ; ক্ষুদ্র পদার্থে সুখ নাই।” এই পরিদৃশ্যমান বাছা জগতে— এবং জ্ঞানগোচর আধ্যাত্মিক জগতে সুখের উপকরণ সকলের অভাব নাই। মঙ্গলময় স্থখস্বরূপ ঈশ্বর বহুবিধ উপকরণ দ্বার। তাছার অসীম সুখ-ভাণ্ডার এমনি পরিপূর্ণ করিয়া রাখিয়াছেন, যে মনুষ্য শরীর-মন-আত্মা ।