পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कांडन'** ०३ B. LE করিয়া ছয় সাত হয়—ইহা বলা বাহুল্য। এক হইতে কেমন করিয়া দুই তিন হয় তাহার একটি দৃষ্টান্ত দেখাইতেছি, তাহা হইলেই এক হইতে কেমন করিয়া শত সহস্র হয় তাহ বুঝিতে পারা যাইবে । পৃথিবীতে প্রথম আগমনের সময় শিশু- ! বালক যখন জ্ঞানেও কিছু জানেন এবং স্বাধীন চেষ্টাতেও কোনো-রূপ কার্যা করে না, তখন সে শুদ্ধ কেবল প্রাণের হাত ধরিয়া চলিয়া ভাষা শিক্ষা করে । মাতা পিতা ধাত্রী প্রভূতির কথাবার্তা আকার প্রকার ভাব-ভঙ্গী তাহার কোমল মনে চিরকালের মতে বদ্ধমূল হইয়া যায়—এইরূপ করিয়া তাহার মনোমধ্যে মাতৃভাষার একটা দুরপণেয় সংস্কার দাড়াইয়া যায়; আর, এই আজন্ম-সংস্কারটিই মাতৃভাষার প্রাণ-স্বরূপ। পরে সেই বালক বাড়িয়া উঠিয়া উপযুক্ত বয়সে ব্যাকরণাদি শাস্ত্ৰ পড়িয়া সহস্ৰ পণ্ডিত হউন না কেন— ভাষার সেই গোড়ার সংস্কারটিকে ছাড়িয়া, প্রাণটিকে ছাড়িয়া, তিনি একপদও সম্মুখে অগ্রসর হইতে পারিবেন না। বাঙ্গালির মনের অভ্যন্তরে বাঙ্গলা ভাষার সেই মৰ্ম্মগত প্রাণ সৰ্ব্বক্ষণ জাগিতেছে বলিয়৷ সেই প্রাণের সঙ্গে যখন ব্যাকরণ-জ্ঞানের সংযোগ হয়, তখন সেই জ্ঞান এবং প্রাণ দুয়ের সমবেত সাহায্যে বক্তৃভাষার ব্যবহার সৰ্ব্বাঙ্গস্বন্দর হইয়া উঠে। একজন বিদেশী ব্যক্তি বঙ্গভাষার ব্যাকরণ এবং অভিধান খুবই জ্ঞানে আয়ত্ত করিতে পারে, কিন্তু তবুও সে বঙ্গভাষার প্রাণটিকে—পৈতৃক সংস্কারটিকে —নাগাল না পাওয়াতে, একছত্র বাঙ্গল লিখিতে দশগগু ভুল করিয়া বসে। শিশু ধাত্রীর হস্ত ধরিয়া যেমন করিয়া চলিতে শেখে—তেমনি করিয়া সংস্কারের হস্ত ধরিয়া ইতয় ভাষা অবলীলা ক্রমে শিখিয়া ফেলে ; এই বৃত্তাম্ভটিকে “এক” বলিয়া ধর ; দুই ষষ্টিতম সান্ধৎসরিক ব্রাহ্মসমাজ । ২০১ কি ? না শিশু যখন পঠদ্দশায় উপনীত হয় তখন সেই প্রাণের শিক্ষাকে জ্ঞানের নিয়মামুসারে নূতন করিয়া শিক্ষা করে; মৃতন ভাষা শিক্ষা করে না, কিন্তু শিক্ষিত ভাষাকে নূতন করিয়া শিক্ষা করে। ইতিপূৰ্ব্বে সে কথা কহিতে শিখিয়াছে এখন সে কথা কহিবার নিয়ম শিখিতেছে । এই দ্বিতীয় বৃত্তান্তটিকে দুই বলিয়া ধর । তিন কি ? ন। কৃতবিদ্য ছাত্র পূর্ব-শিক্ষিত প্রাণের ভাষাকে নূতন-শিক্ষিত জ্ঞানের নিয়মে নিয়মিত করিয়া তাহাকে নূতন করিয়া গড়িয়া তোলে ; এই তৃতীয় বৃত্তান্তটিকে তিন বলিয়া ধর। প্রথম, মাতৃক্রোড়ে ইতর ভাষার শিক্ষা লাভ—ইহাতেই ভাষার প্রাণ-স্ফূর্তি হয় ; দ্বিতীয়, বিদ্যালয়ে ব্যাকরণাদি শিক্ষা—ইহাতে ভাষার জ্ঞান জন্মে ; তৃতীয়, সেই জ্ঞান এবং প্রাণের সমবেত সাহায্যে সাধু-ভাষার ব্যবহার—ইহাতে ভাষার কার্য্য স্বচারুরূপে । সম্পন্ন হয়। এইরূপে আমরা এক দুই তিন পাইলাম। চার পাচ ছয় ইহারই ধারাবাহিক অনুবৃত্তি। সাধুভাষা যখন আপামর সাধারণের প্রাণে মিশিয়া নিশ্বাস প্রশ্বাসের ন্যায় সহজ হইয়া যাইবে—তখন, এখনকার বাহা সাধু-ভাষা তখনকার তাহা ইতর ভাষা হইয়। দাড়াইবে ; এখন যাঙ্গা জ্ঞানের ফল, তখন তাহা প্রাণের স্ফৰ্ত্তি হইয়া দাড়াইবে; এখন যাহা স্কোপার্জিত তখন তাহ পৈতৃক হইয়া দাড়াইবে । তিনের পরে চার কি ? না এখনকার সাধু ভাষা তিন ; এবং এখনকার সাধুভাষা যখন ভবিষ্যতের প্রাণের সঙ্গে মিশিয়া ভবিষ্যতের ইতর ভাষা হইয়া দাড়াইবে—তখনকার সেই বৃত্তান্ত-টিকে চার বলিয়া ধরা যাইতে পারে ; তাহার পরে যখন উচ্চতর ব্যাকরণের নিয়ম আবিষ্কৃত হইবে— তাহাই পাচ ; এবং তাহার সাহায্যে যখন উচ্চতর সাধুভাষা পরিগঠিত হইবে—তাহাই