পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০২৩ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ०२ कक, १.छान ধৰ্ম্মকে আশ্রয় করিয়া চলিতেছে ততক্ষণই তাহার গতি উৰ্দ্ধ দিকে হইতেছে—এ বিষয়ে তিল মাত্রও সংশয় নাই । সমস্ত প্রকৃতিরাজ্যের যেমন এক অদ্বিতীয় মূল নিয়ম এই যে, যেমন ঘাত তেমনি প্রতিঘাত, সমস্ত ধৰ্ম্ম-রাজ্যের তেমনি এক অদ্বিতীয় মূল নিয়ম এই যে, যেমন কৰ্ম্ম তেমনি ফল ; উভয়-রাজ্যেই ঘাত-প্রতিঘাতের নিয়ম আবার্থ এবং অব্যভিচারী ; তবুও যে লোকে অনেক সময়ে তাহার প্রতি সংশয়ান্বিত হয়, তাহার কারণ আর কিছু না—নদীর কিনারা অঞ্চলে বাপ-নৌকার প্রতিঘাত যেমন বিলম্বে উপস্থিত হয়, ধৰ্ম্মরাজ্যে অনেক সময়ে স্বকৃত কৰ্ম্মের প্রতিঘাত তাহা অপেক্ষাও অনেক বিলম্বে উপস্থিত হয় । এই জন্য সাধক প্রবল অনুতাপ-সহকৃত ধৰ্ম্মসাধন দ্বারা পূৰ্ব্বকৃত অধৰ্ম্মের ফল প্রতিহত করিবার জন্য অনেক-টা অবসর হস্তে পাইতে পারেন । কিন্তু ধৰ্ম্ম-দ্বারা অধৰ্ম্মের ফল এইরূপ যে প্রতিহত হয়, তাহাও ঘাত-প্রতিঘাতের নিয়মানুসারেই হয়—তাহার জন্য নূতন কোনো নিয়ম আবশ্যক হয় না । যেমন ঘাত তেমনি প্রতিঘাত—এই নিয়মটি—কি জড় জগৎ, কি জ্ঞান-জগৎ, সৰ্ব্ব জগতেরই একাধিপতি ; কোথাও ইহার এক চুলও অন্যথা সম্ভবে না । মনে কর একজন রাজা একগুণ অপরাধের দশগুণ দণ্ড দিলেন ; এমত স্থলে, সেই দশগুণ দণ্ডের মধ্যে একগুণ দণ্ডই ন্যায়সঙ্গত, অবশিষ্ট্র নয়গুণ দও ন্যায়-বিরুদ্ধ । ন্যায়ের অতিরিক্ত সেই যে নয়গুণ দও তাহ অপরাধী ব্যক্তির সহ্য হইতে পারে, কিন্তু ন্যায়বান্‌ ঈশ্বরের তাছ। সহ্য হইতে পারে না—বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের তাহা সহ্য হইতে পারে না ;–সেই অতিরিক্ত নয়গুণ দণ্ডের ভার অপরাধী ব্যক্তির স্কন্ধ হইতে হরণ করিয়৷ দণ্ডদাতা’র স্কন্ধে ফেলি বার জন্য সমস্ত প্রকৃতিই ভিতরে ভিতরে চেষ্টা করিতে থাকে;—সে চেষ্টা কেহই চক্ষে দেখিতে পায় না, কিন্তু তাহার ফল এক না এক সময়ে ফলিবেই ফলিলে – ইহা অভ্রান্ত বেদ-বাক্য । আমরা দেখিতে পাই ব| না পাই, বুঝিতে পারি বা না পারি,.ঈশ্বরের অব্যর্থ মিরম কোন স্থানেই তিল-মাত্রও নিষ্ফল হইবার নহে । অনেকে মনে করেন যে, ঈশ্বর যেমন ন্যায়বান রাজা, তেমনি করুণাময় পিতা, অতএব করুণার নিয়ম ন্যায়ের নিয়ম হইতে স্বতন্ত্র । কিন্তু বাস্তবিক দুয়ের মধ্যে কোনো প্রভেদ নাই । সাধারণতঃ সকল মনুষ্যই ঈশ্বরের করুণার পাত্র—তাহার মধ্যে যাহাদের হৃদয় ঈশ্বরের চরণে অনুতাপাশ্র বর্ষণ করিয়া ক্রন্দন করিতেছে, তাহারা বিশেষতঃ র্তাহার করুণার পাত্র । সাধারণতঃ আমরা লোককে উপদেশ দিবার সময় বলিতে পারি যে, বর্ষার বারিধারা ভিন্ন পৃথিবীর গতি নাই, ঈশ্বরের করুণা ভিন্ন মনুষ্যের গতি নাই ; কিন্তু তাহার সঙ্গে এই বিশেষ বৃত্তান্তটিও বলিয়| দেওয়া আবশ্যক যে, মেদিনী যখন গ্রীষ্ম-তাপে উত্তপ্ত হয়, তখনই বর্ষার বারিধার। নিপতিত হয় ; পাপী ব্যক্তি যখন অনুতাপানলে দগ্ধ হইয়। ধৰ্ম্ম-পথে ফিরিয়৷ আইসে, তখনই তাহার সাস্বনার জনা ঈশ্বরের অব্যৰ্থ করুণাবারি নিপতিত হয় ;– এইরূপে করুণার পাত্ৰ-নিৰ্ব্বাচন ন্যায়ের নিয়মানুসারেই হইয়া থাকে । সমানে সমানে সম্ভাবের বিনিময়, দীনের প্রতি ক্ষমতাবানের করুণা, উপকারী ব্যক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা, সমস্তই ন্যায়ের অন্তর্গত। মৈত্রীর নিয়ম (কি না সম্ভাব-বিনিময়ের নিয়ম), করুণার নিয়ম, এবং কৃতজ্ঞতার নিয়ম—সমস্তই একই ন্যায়ের নিয়ম, সে নিয়ম এই যে, ছোটো'র নিকট হইতে যেরূপ ব্যবহার প্র