পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দ্বাদশ কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮ তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা । ** on তিনি আপনাকে উপলব্ধি না করিয়া জড় বস্তুর কোন গুণই উপলব্ধি করিতে পারেন না । অতএব জড়বস্তুর স্বতন্ত্র-সত্তার সপক্ষে মনোবিজ্ঞানী যত কিছু যুক্তি প্রদর্শন করেন সমস্তই জ্ঞানের নিয়ম-বিরুদ্ধ ভ্ৰান্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত। এই সব যুক্তি একে তো আপন অভীষ্ট সাধনে অসমর্থ তাহাতে আবার জ্ঞানের অবশ্যম্ভাবী নিয়ম উণ্টাইয়া দিয়া তত্ত্বজ্ঞানের মূল উৎস পৰ্য্যন্ত বিষায়িত করে । দুই জাতীয় গুণের ভেদ-নিরূপণ অকিঞ্চিৎকর ॥ ১১ ॥ মৌলিক এবং বৈকারিক গুণের প্রভেদের বিষয় এই পৰ্য্যন্তই যথেষ্ট । এই প্রভেদটি মনোবিজ্ঞানের বিশেষ একটি নির্ভর-স্থল—ইহা হইতে তিনি বিস্তর ফলপ্রাপ্তির প্রত্যাশা করেন । কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এ প্রভেদটি কোন কার্য্যেরই নহে । ইহার বহারম্ভ, দেখিতে দেখিতে, লঘুক্রিয়ায় ; পরিণত হয়। প্রকৃত মায়াবাদের কথা দূরে থাকুক্‌—মনোবিজ্ঞানী যাহাকে মায়াবাদ বলেন সেই কৃত্রিম মায়াবাদকে খণ্ডন করিতে গিয়াও উহা আপনার অসারতা এবং অকিঞ্চিৎকরতা সপ্রমাণ করে। উহাকে উহার নিজ মূৰ্ত্তিতে দেখিলে স্পষ্টই দেখিতে পাওয়া যায় যে, উহা জ্ঞানের নিয়ম সকলের বিরোধী ও তত্ত্বজ্ঞানকে বিপথে লইয়া যাইবার একটি প্রধান গুরু । তত্ত্বালোচনার সমুদ্র-বক্ষে উহা একটি বুদবুদ বই আর কিছুই নহে— এখন উহাকে চুপে চাপে ভগ্ন এবং বিলীন হইয়। যাইতে দেও। উহার যাহা কৃত্য উহ। তাহ সাধ্যমতে করিয়া চুকিয়াছে— তাহাও ভাল করিয়া নহে । আত্মা ও পরমাত্মTT আত্মা ও পরমাত্মা এক নিগুঢ় সম্বন্ধে আবদ্ধ। এই নিগুঢ় সম্বন্ধের বিষয় যতই , আলোচনা করা যায়, ততই উহারদের নৈকট্য প্রতিভাত হয়। উভয়ে, উভয়ের সখী সয়ুজ না বুঝিলে কেমন করিয়া জীবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে মিলনের গাঢ়তা হইবে । পৃথিবীতে দুইজনের মধ্যে সখ্যভাব স্থাপিত হইবার পূর্বে যেমন পরস্পরের প্রকৃতি ভাব লক্ষ্য অবগত হওয়া চাই, তেমনি জীবাত্মা ও পরমাত্মার অনন্তকালভোগ্য মিলনের পূৰ্ব্বে পরমাত্মার পিতৃভাব, আত্মার অমরত্ব, উহার অনন্ত গতি, অনন্ত উন্নতি, উহার অপূর্ণত পরমাত্মার উপর একান্ত নির্ভরের ভাব অগ্রে পর্য্যালোচনা করিয়া দেখা উচিত । তাত্মা ও পরমাত্মার সম্বন্ধ বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন দিক হইতে আলোচনা করিলে বুঝিতে পারি যখনই জীবাত্মা পরমাত্মা হইতে নিঃস্থত, তিনি আমারদের পিতা ; যখন তাহার স্নেহদৃষ্টি সুখে দুঃখে সম্পদে বিপদে সকল সময়ে সমান রূপে অামারদের উপরে নিপতিত দেখি তিনি আমারদের মাতা ; যখন তিনি আমারদের সঙ্গে সঙ্গে থাকিয়া শুভবুদ্ধি কৰ্ত্তব্যজ্ঞান আমারদের অন্তরে নিয়ত প্রেরণ করিতেছেন ও নানা রূপ বিপদাপদ হইতে আমাদিগকে রক্ষা করিতেছেন তিনি অামারদের বন্ধু, যখন র্তাহার অনুগত ও সেবক হইয়া র্তাহার পূজাৰ্চনা ও ধ্যান ধারণ আমারদের জীবনের লক্ষ্য দেখি তখনই তিনি আমাদের প্রভু, যখন র্তাহাকে গতি মুক্তির নিদানভূত জানিয়া হৃদয়মন্দির হইতে সকল প্রকার নীচকামনা নির্বাসিত করিয়া দিয়া সেই সংমোহন মুক্তিকে সংস্থাপিত