পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 সহজে হয়, সেই প্রকার সহজ জ্ঞান অন্যান্য বিষয়েরও হইয়া থাকে । এই প্রকার সহজ জ্ঞান আমার ও তোমারও নহে, কিন্তু ইহা সকল মনুষেরই সাধারণ সম্পত্তি । আমরা দুই শ্রেণীর লোক সচরাচর দেখিতে পাই । কতকগুলি লোকের অতি তীক্ষ-বুদ্ধি, তাহারা তীক্ষত। সহকারে বস্তু তত্ত্ব সকল নির্ণয় করে, তাছারা এক বিষয়ের সকল দিক দেখিয়া বিচার করে, এবং অতি দুৰঙ্গ বিষয় সকলও খণ্ড খণ্ড করিয়া স্পষ্ট ৰূপে অবধারণ করে । অন্য কতকগুলি লোক ঠিক ইহার বিপরীত । তাহারা যদিও এমন কিছু বলিতে কহিতে পারে না, যদিও ধৈর্য্যাবলম্বন পূর্বক বিচার করিতে পারে না ; তথাপি তাহীদের স্বাভাবিক কেমন এক প্রকার ভাব যে তাহীদের মুখ হইতে সহজে যে সকল কথা বিনির্গত হয়, তাহ দেববাক্য তুল্য । যখন জন-সমাজের চতুদিক অজ্ঞানান্ধকারে আরত থাকে, তখন সেই অন্ধকারের মধ্য স্থইতে যে এক এক প্রখর জ্যোতি স্থান পুরুষ উত্থিত হয়েন : তাহীদের জ্ঞান উক্ত প্রকার সহজ জ্ঞান । তাছাদের অন্ত দুটি অতি উজ্জল । উচ্চার। অনেক ভাবিয়া চিন্তিয় কি বহু বিধ গ্রন্থ পাঠ করিয়া কোন বিযয় শিক্ষা করেন না বটে ; কিন্তু বহিদৃষ্টিতে বাহিরের বিষয় সকল যেমন সঙ্কজে উপলব্ধি হয় । উiহীদের অন্তদৃষ্টিতে সত্যের প্রতিভা তেমণি সহজে পড়ে ! যে সকল সময়ে এই ৰূপ এক এক মহাত্ম উদিত হন, তখনকার জন সমাজের অবস্তু। দেখিয়া আশ্চর্য্য ক ঈতে হয়, ষে এমন অন্ধকারের মধ্য হইতে । এ প্রকার তেজীয়ন পুরুষ কোথা হইতে {ষ্টলেন । ঈমা, নানক,মহম্মদ ; এই সকল লোকের এই প্রকার ভাব । এই প্রকার অন্তৰ্দটিতে আমরা যে সকল জ্ঞান উপলব্ধি করি, তাহ সহজ, সাক্ষাৎ, স্বাভাবিক ; তান মনুষের সাধারণ সম্পত্তি ; তাছ। স্বতঃসিদ্ধ ; তাহাতে বিরোধ নাই, কিন্তু সকলই ঐক্যত। বাঙ্কিরের বস্তু-সকল অমর। যেমন সাক্ষাৎ দেখি, অতীন্দ্রিয় উচ্চতর বিষয়েরও অা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা মাদের সেই ৰূপ সাক্ষাৎ জ্ঞান লাভ হইতে পারে। বিষয়ঙ্গান আমাদের দুই প্রকারে উপলব্ধি হইতে পারে । হয়, আমর কোন বস্তু চক্ষে দেখি ; ময় তাঙ্কণ কোন গ্রন্থ মধ্যে বা অন্যের নিকট হইতে শিক্ষা করি। অামি যদি স্বচক্ষে এই বৃক্ষের শোভা দেখিয়া অামোদিত হই, তবে এই স্থলে আমার প্রত্যক্ষ জ্ঞান হইল । কিন্তু আমি দেখি নাই, এমন এক বৃক্ষের বিষয় যদি কেহ আমার নিকটে বর্ণন করে ; তবে এস্থলে আমার জ্ঞান সাক্ষাৎ জ্ঞান নহে,তাহ পরোক্ষ জ্ঞান । আমি তাই জপনিলাম বটে ; কিন্তু সে জান সাক্ষাৎ দেখার সঙ্গে এত প্রভেদ ষে তাহাতে সংশয় জন্মিলে তাক ভঞ্জন করিবার জন্য প্রত্যক্ষ জ্ঞান আবশ্ব্যক । আমরা জগতের প্রতি झूर्कि করিলে ষে কেবল জড়ীয় গুণ সকল উপলব্ধি করি, তাঙ্কণ নহে । শিশুর মন, যখন সে কথা কহিতেও শিক্ষা করে নাই, তখন তাকাকে নানা প্রকার ভাবে আকৃষ্ট হইতে দেখা যায়। প্রথমে সে যে কেবল আকৃতি বিস্ত:ভি বর্ণ এই সকল দেখিতে পায় তাঙ্কণ নহে, কিন্তু মৃতন ভূতন বস্তুর শোভা দেখিস্নাও আশ্চর্যা ও আমোদিত হইতে থাকে। বিশ্বরাজ্য ঐ ও সৌন্দর্য্যে এ প্রকার বিভূষিত যে তাহাতে আমাদের দৃষ্টি পড়িবা. মাত্র আমাদের মন সৌন্দর্য্য রসে আর্দ্র হয় । সুন্দর বস্তু দেখিবা মাত্র আমরা সহজ জ্ঞানে তাহার সৌন্দর্য্য গ্রহণ করি । আমরা যখন কোন সুরম্য পুষ্প, বা স্পাহণীয় চন্দ্রমণ, বা তারকা সঙ্কল গগনের প্রভি দৃষ্টি করি, তখন আমরা কি দেখি ? তাহাদের আকৃতি বিস্তুতি প্রভৃতি ষে তাছাদের জড়ীয় গুণ কেবল তাহ দেখি না, তাহা অপেক্ষাও অধিক দেখি । সেই সকল জড় পিণ্ডের মধ্যে আমরা শোভা দর্শন করি । এই শোভার জ্ঞান আমাদের পরোক্ষ জ্ঞান নহে, তাহ প্রত্যক্ষ জ্ঞান ; কিন্তু যখনি আমি সেই শোভা অন্যের নিকটে ব্যক্ত করি অথবা তাহ দেখিবার পরে পুনৰ্ব্বার তাছা ভাবিতে যাই, অমনি বুদ্ধি আসিয়।