পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(t.8 তত্ত্ববোধিনী পত্রিক। কলিকাত ব্রাহ্মসমাজের বক্ততা । ১১ চৈত্র বুধবার ১৭৮০ শক পরমেশ্বরের উপাসনা আমাদের মনের প্রকৃতির বিশেষ অনুযায়ী । যিনি আমাদের ইন্দ্রিয়ের অতীত –যাহাতে মনের ধৰ্ম্ম কিছুই নাই—যিনি সত্যং শিবং সুন্দরং—অনন্ত অসীম অপরিমেয় পূর্ণ পদার্থ উহার উপাসনায় যে আমরা অধিকারী হইয়াছি,তাহ। অপেক্ষ আমাদের আর শ্রেষ্ঠতর মহত্তর অধিকার কি আছে । আমাদের পক্ষে তাহাই পবিত্র ধৰ্ম্ম, যাহতে আমরা ঈশ্বরের সুখাবহ সন্নিধানে উপনীত হইতে পারি। সেই পবিত্র জ্ঞান, যাহাতে পবিত্র ব্রহ্মজ্ঞান আমাদের মনে দীপ্তি পাইতে পারে। সেই পবিত্র কার্যা, যাহা ঈশ্বরের প্রিয়কার্য্য মনে করিয়া অনুষ্ঠান করা হয় । র্তাহার উপাসনার জন্য কি প্রকার নিয়ম অবলম্বন করা উচিত— কি প্র কণর মনের অবস্থাতে র্তাহার উপাসনা হয় ; ইহা মনুষ্যকে বুঝাইবার জন্য তাধিক আয়াসের আণপশুক করে না। মনের সহিত ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি, কৃতজ্ঞ তা প্রকাশ করাই তাহার উপাসনা করা | যিনি নিরবদ্য নিরঞ্জন-- যিনি নিষ্কলঙ্ক পবিত্র স্বৰূপ –ৰ্তাতার প্রতি শ্রদ্ধ। আপন হইতেই উদয় হয় । যিনি !প গুণ মা চার মনে স্নেহ দিয়া অপার স্নেহ প্রকাশ করিয়াছেন—যিনি গুরুর মনে জ্ঞান দিয়! অর্মা জ্ঞান বিস্তার করিয়াছেন—তাহার প্রতি আমাদের প্রগাঢ় ভক্তি স্বভাবগুই ধাবিত হয়। যিনি আমাদের সমস্ত সুখ মেী ভাগ্যের মূল কারণ-র্যাহার প্রমাদে আমরা অন্নপামে পুষ্ট হইয় এবং জ্ঞান ধৰ্ম্ম লাভ করিয়া জীবন যাত্র নির্বাহ করিতেছি ; তাহাতেই আমাদের কৃতজ্ঞতা চরিত{ৰ্থ হয়। আমরা ষে কোন পবিত্র-চরিত্র পুণ্যশালী পুরুষের সাক্ষাৎ লাভ করি, তাহার উপরেই যখন আমাদের শ্রদ্ধা হয় ; তখন সেই নিষ্কলঙ্ক পরিশুদ্ধ অপাপবিদ্ধ পরমেশ্বরকে জ্ঞানচক্ষে দেখিতে পাইলে র্তােহর প্রতি কীৰ্দশ শ্রদ্ধা হইবে । পিত। মাত গুরুর প্রতি ভক্তি হওয়া যখন আ মাদের প্রকৃতি-মুলক ; তখন যিনি পিতার পরম পিতা এবং গুরুর পরম গুরু, তাহা হইতে আমাদের আর ভক্তি ভাজন কে আছে ? পরোপকারী সৰ্ব্বহিতৈষী মহাত্মার প্রতি যখন আমাদের কৃতজ্ঞতা আপনা হইতেই প্রবাহিত হয়, তখন প্রতি নিমেষে— প্রতি নিঃশ্বাসে যাহার উদার প্রসাদ এবং অপার করুণ উপভোগ করিতেছি, তাহার প্রতি কতজ্ঞতা কেন না একেবারে उखु * লিত হইবে ? উচ্চার মহিমা-ৰ্তাহার পবিত্রত – তাহার গুরুত্ব— তাহার অপার প্রেম মনে হইলেই আমাদের হৃদয়ে শ্রদ্ধা ভক্তি. কৃতজ্ঞ তার উৎস উৎসারিত হইতে থাকে । তাহার প্রতি শ্রদ্ধ ভক্তি বিরাজমান থাকিলে তাঙ্কণর সঙ্গে সঙ্গে আপনাকেও পবিত্র বোধ হয় । যেমন সাধুর সহবাসে অ৷ পনাকে পুণাত্মা মনে হয়, সেই প্রকার যখন আমাদের আত্মাতে সেই পৰিত্ৰ স্বৰূপের বিশুদ্ধ ভাব অনুভূত হয় ; তখন আমর কি পবিত্রতাই লাভ করি । তাছার উপাসনাতে আমাদের মনের শ্রেয়সী প্রবৃত্তি সমুদায় চরিতার্থ হইয়া আমাদের প্রকৃত গেীরল বৰ্দ্ধম করে । কিন্তু কি আক্ষেপের বিষয় ! ঈশ্বরের এই প্রকার পবিত্র উপাসনা এই হতভাগ্য পাপ-দূষিত বঙ্গদেশে বদ্ধ মুল হয় না । নিরাকার নিৰ্ব্বিকার নিৰ্ম্মল সত্য স্বৰূপ পরমেশ্বরের অপরাধনার নিমিত্তে শত কি দশ ব্যক্তি একত্র হয়, এমন স্থান অতি দুল্ল ভ। যদিও এই সমাজ মন্দিরে ঈশ্বরারাধনার নিমিত্তে এক এক সময়ে সহস্ৰ ব্যক্তি মিলিত হইতেছেন, কিন্তু তাহাতেই বা কি ? যে পরিমাণে বিদ্যালয় সকল সংস্থাপিত হইতেছে—যে পরিমাণে জ্ঞানের উন্নতি হইছে, সেই পরিমাণে কি ধর্মের ৰিস্তার হইতেছে ?—সেই পরিমাণে কি ঈশ্বর প্রেম ব্যাপ্ত হইতেছে ? যাহাদের সত্যের প্রতি কিছুমাত্র আস্থা আছে—স্বদেশের প্রতি কিছুমাত্র অনুরাগ আছে, তাহাদের ভ্ৰাতৃ স্বৰূপ দেশস্থ ব্যক্তি দিগের ধৰ্ম্মোন্নতির প্রতি প্রধান লক্ষ্য থাকা উচিত। বাহ শোভায় ভারত ভূমির কি হইবে ? যতদিন পর্য্যন্ত এদেশে ধর্মের ভাব এবং ধর্মের মু