পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা আছে কি না ? শ্ৰুতমাত্রেই অনায়াসে সকলেই একজন অতি ভদ্র প্রধান লোকের স্বভাব-বিরুদ্ধ কথায় বিশ্বাস করিয়া তাহা লইয়া আমোদিত হইতে লাগিলেন । সম্বাদ দাতার কথায় আমার বিশ্বাস গা হওয়াতে আমি সেই সভাস্থ সম্বাদ পত্ৰখানি যত্ন পুৰ্ব্বক দর্শন করিলাম ; কিন্তু তাহাতে উক্ত সম্বাদের বাপমাত্রও দেখিতে না পাইয়া আমার মনে এমনি বিজাতীয় যন্ত্রণা উপস্থিত হইল, ষে আমি এক কালে লোক সঙ্গ পরিত্যাগে কৃতাঙ্কপে হইলাম। কোথায় ভদ্র ও কৃতবিদ লোকের সহবাসে সুনীতি শিক্ষা করিবার মানসে ঐ সমস্ত লোকের সঙ্গে উদ্যানে গমন করিলাম, ন ত্ব;হার পরিবর্তে কোথায় উহাদিগের পশু অপেক্ষা অধম চরিত্র দেখিয়া অামাকে মনস্তাপ পাইতে হইল! কি আশ্চর্য্য ! পরের গ্লানি চচায় ঐ সমস্ত লোকেল এমনি আনন্দ দেখিলাম, যে তাছাতে ত৷-, a *দিগ বিদিক কিছুমাত্র বোধ প্রকাশ পাইল না । যত লোকের নাম উপস্থিত হইল এবং যত কৰ্ম্মের প্রসঙ্গ হইল, তাহাদিগের মুখে তৎ সমুদায়েরই নিন্দ শ্রবণ করিলাম। তাহাদিগের অনুপম অদ্ভুত বিবেচনায় কোন কৰ্ম্ম যে আদরণীয় ও কোন ব্যক্তি যে প্রশংসা ভাজন, তাহ কিছুই বুঝিতে পারিলাম না । ষে সকল কৰ্ম্ম য: থার্থত: নিন্দনীয় বলিয়। অবধারিত আছে এবং যে সকল লোকে বস্তুতঃ অপযশের পাত্র হইলেও হইতে পারে, উক্ত মহাশয়ের সে সকল কার্য্য ও সে সমস্ত লোকের নিন্দ করিয়া ক্ষান্ত ধাকিলে এক প্রক্লার দুষ্ট দমন হইত কিন্তু তাহার বিপরীতে যে সমস্ত মহৎ লোক জন সমাজে অতি ভদ্র বলিয়া প্রসিদ্ধ আছে, তাহাদিগের মুখে তৎ সমুদায়েরও বিজাতীয় গ্লানি শুনিয়া বিস্ময়াপন্ন হইলাম । বিশেষতঃ প্রধান"প্রধান লোক ও প্রধান প্রধান কার্য্যই তাহাদিহের নিন্দার প্রধান বিষয় বলিয়া (ఫె র্তাহারা এক এক ব্যক্তি আপনার হৃদয় বন্ধু বলিয়া পরিচয় দিয়াছেন ও যাহাদিগের নিকট হইতে এক এক জন অপরিশোধনীয় উপকার প্রাপ্ত হইয়াছেন, সকলেই মুক্ত কণ্ঠে সেই সকল লোকের সহস্র প্রকার অপযশঃ কীৰ্ত্তন করিলেন। তাহার কস্মিনকালে যে কখন আত্ম স্বভাবের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন, এমন কোন অংশেই বোধ হইল না, আপনাদিগকে যে র্তাহার কদের পর্য্যন্ত নির্দোষ মনে করিয়া রাখিয়াছেন, তাহা বুঝিতে পারলাম না । কিন্তু তাহাদিগের পরস্পরের মুখেই পরস্পরের সমস্ত পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া গেল । তাহারা যে সমস্ত লোকে একত্রিত হইয়। অন্যের নিন্দাবাদ করলেন, পুনর্বর তাহাদিগের মধ্যে এক এক জন এক এক জনের আসাক্ষাতে তাহার সমস্ত গুণাগুণ বণন করিলেন । হায় হায় পরনিন্দ মনুষোর কি প্রিয় ! ভাই তুমি যথার্থ বলতেছ, অনেকেরি এই প্রকার কুস্বভাব দেখিতে পাওয়া যায়, কিন্তু সকল মনুষ্য এৰূপ নহে | নিন্দক এক জাতি স্বতন্ত্র, তাহাদিগের নিকট ধৰ্ম্মধর্মের বিচার নাই, সত্য মিথ্যার বিশেষ নাই, আঅপর জ্ঞান নাই এবং সম্ভব অসম্ভবের প্রতি ও দৃষ্টিপাত নাই। যে কোন প্রকার হউক, পরের যশোলোপ করতে পারলেই তাহাদিগের মহা আনন্দ অনুভূত হয়। কাহারও চরিত্র শোধন ও দোষ নিরীকরণের জন্য সাধুব্যক্তিকে যদিও কখন কাহারও যথার্থ দোষ উল্লেখ করিতে হয়, তথাচ তাহাতে র্তাহাদিগের মনে বেদন বোধ ও বিশেষ ক্ষোভ উপস্থিত হইয়া থাকে; কিন্তু নিন্দাশীল লোকে অনেক সময় অনেক লোকের প্রতি মিথ্যা দোষ আরোপ করিয়াই আনন্দিত হয় । অপরের নিন্দাতে তাহাদিগের যে প্রকার আহলাদ দেখিতে পাওয়া যায়, বোধ হয় সহস্ৰ স্বর্ণ মুদ্রা লাভেও তাহাদিগের তাদৃশ আহলাদ জন্মে না। পর দ্বেষী নিন্দক লোকের কোন বিষ য়ের নিন্দ করিতেছে, কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধাচরণ করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছে এবং কি প্রকার স্থানে কথা কহিতেছে, এসক বোধ হইল। কি বলিব ! সাক্ষাতে যে সকল মনুষ্যকে তাহাদিগকে বারম্বার প্রশংসা করিতে শুনিয়াছি এবং যে সমস্ত লোককে