পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিক ৩৩ মুরাগ, তাহদের ঈশ্বরে বিরাঙ্গ—যাহাঁদের মোক্ষের সেতু হইয়া ঈশ্বরের নিকটে লষ্টয় ঈশ্বরে অনুরাগ, তাহদের সংসারে বিরাগ । গৃহত্যাগী হইয়। অরণ্যে বাস করাতেই যে বৈরাগ্য হয়, তাহারহে। ঈশ্বরে অনুরাগই যথার্থ বৈরাগ্য পৃথ। ধৰ্ম্মই সেই পথের পথ-প্রদর্শক। আমরা কুপ্রবৃত্তির উপরে ধৰ্ম্মকে যতবার জয়ী হইতে দিই— ধৰ্ম্মের স্বতীব্র ভৎসনাতে স্বার্থ-পরতার কুটিল মন্ত্রণাকে যত বার নিরস্ত করি ততই আমরা বল পাই, ততই আমাদের শিক্ষা হয়-বিষয়ের প্রতিশ্রোতে যাইবার জন্য ততই প্রস্তুত হই। বিষয়-বন্ধন হইতে মুক্ত হওয়াই আমাদের মুক্তি | পাপ হইতে দূরে থাকিবার যে চেষ্টা, সেই চেষ্টাই আমাদের উৎকৃষ্ট শিক্ষা । ঈশ্বরে যে অটল অনুরাগ, সেই অনুরাগই আমাদের প্রকৃত বৈরাগ্য । ঈশ্বরানুরাগের যে প্রকার স্বৰ্গীয় ভাব,— ধৰ্ম্মের যে প্রকার মাহাত্ম্য, তাহাতেই সুস্পষ্ট গ্র ভীতি হয় যে তাহ। কেবল ইহ লোকের জন্য নহে। গৰ্বস্থিত বালকের সুচারু অঙ্গসে ঠব ও কৰ্ম্মক্ষম ইন্দ্রিয় সকল দেখিলে যেমন তাঙ্কাকে চিরকাল গৰ্বে থাকিবারই উপযুক্ত বোধ হয় না,কিন্তু এই কৰ্ম্মক্ষেত্র পৃথিবীর উপযুক্ত বলিয়া মনে হয় ; সেই ৰূপ মনুষ্যের নিষ্কাম ধর্মের অনুষ্ঠান— ঈশ্বরে নিঃস্বার্থ অনুরাগ দেখিয় তাহাকে ভাবিকালের মহত্তর উচ্চতর অবস্থার উপযুক্ত বোধ হয়। এই সকল ভাব পৃথিবীর ভাব হইতে এত উচ্চ ভর, যে এখানে তাহাদের সম্যক চরিতার্থতা কখনই হয় না। বিষয় সুখ অকাতরে বিসর্জন দেওয়া –পৃথিবীর খ্যাতি প্রতিপত্তিকে তুচ্ছ কর!—কেবল এই পৃথিবীর জীবের পক্ষে কখনই সম্ভব হয় না। যাহার কেবল বিষয় সুখের প্রতি লক্ষ্য করিয়া স্বৰ্গীয় ধৰ্ম্মকে প্রার্থনা করে, তাছাদের অতি নীচ লক্ষ্য । স্বোপার্জিত দুল্লভ ধৰ্ম্ম রত্বের বিনিময়ে ক্ষুদ্র বিষয় মুখ কদাপি প্রার্থনীয় হইতে পারে না। ধর্মের উপযুক্ত লক্ষ্য, ধর্মের যোগ্য পুরস্কার, কেবল সেই ধৰ্ম্মাবহ একমাত্র পরমেশ্বর । ধৰ্ম্মপথ মধ্য পথ। ধৰ্ম্ম সংসার-বন্ধন রক্ষা করেন, ধৰ্ম্ম যান। বিষয়-সুখ-ভোগের জন্য যে ধৰ্ম্ম,তাহ্ন। অতি নিকৃষ্ট—ঈশ্বরের জন্য যে ধৰ্ম্ম,ভাস্কাচ উৎকৃষ্ট ধৰ্ম্ম। আমরা প্রাণ পর্য্যন্ত পঞ্চকরিয়া যে ধৰ্ম্মকে উপাজন ও রক্ষা করি ; পার্থিব কোন বস্তু তাহার সমাক লক্ষ্য কখনই চই- . তে পারে না । বিষয় সুখের জন্য কে প্রাণ দিতে পারে ? কিন্তু ধৰ্ম্মের জন্যই প্রাণ দেওয়া যায়। বিষয় সুখকে যদি ধৰ্ম্মের পুরস্কার মনে করা যায়-স্বশর্থপরতার চরিত্যাগত - যদি ধৰ্ম্ম সাধনের উদ্দেশ্বা হয় ; তবে সে । ধৰ্ম্ম রক্ষা করা বিষম দায় । বহু জায়াসে, বন্ধ দিবসে, বহু কষ্টে, যদি সে ধৰ্ম্ম কিছু , রক্ষা হয় ; তবে পরম সৌভাগ্য ! ধৰ্ম্মকে যাহার কেবল বিষয় উপভোগের উপায় করে, তাহঁদের নিকটে ধৰ্ম্ম রক্ষর কত বাঘাত, কত প্রতিবন্ধক। যখন ধৰ্ম্মের সঙ্গে সুখের সঙ্গে বিরোধ উপস্থিত হয় ; তখন সেই সুখ বিসর্জনে তাছাদের কি কষ্ট । ধৰ্ম্ম যখন গম্ভীর স্বরে ত্যাগের আ দেশ প্রদান করে ; তখন বিষয় ত্যাগ তা হাদের কি তিক্ত বোধ হয় । তাঁহাদের লক্ষ্য কেবল সুখ, ধৰ্ম্ম কেবল তাহদের উপায় মাত্র ; এইহেতু ধৰ্ম্ম রক্ষ। তাহণদের অতীব কষ্টদায়ক। ধর্মের মূৰ্ত্তি তাহাদের নিকটে কখনই সৌন্দর্য্যময়ী হয় না, কিন্তু সৰ্ব্বদাই বিরস দেখায়। ধৰ্ম্মের পথ তাহারণ " কখনই সরল জ্ঞান করে না, কিন্তু কণ্টকা-গ বৃতই বোধ করিয়৷ থাকে। এই জন্য ধর্মের প্রাণ ঈশ্বরে অনুরাগ। ঈশ্বরলাভের জন্যই ধৰ্ম্ম শ্রেষ্ঠ উপায়; বিষয় সুখের জন্য জাহ অতি কনিষ্ঠ উপায়। ঈশ্বর যিনি মহীয়ান, তাহাকৈ পাইবার জন্যই ধৰ্ম্ম আমাদের সহায় ; বিষয় মুখ যে কণীয়ান, ধৰ্ম্ম তাহার যোগ্য বস্তু হইতে পারে না । একদিকে সংসার, একদিকে ঈশ্বর, মধ্যে ধৰ্ম্ম । এদিকের মঙ্গলের জন্যও ধৰ্ম্ম অাৰশ্বক ; ঈশ্বরের দিকে যাইবার জন্যও ধর্শ সহায় । ষােহাঁর ধৰ্ম্মকে পরিত্যাগ করিয়া সাংসারিক সুখ ভোগে রত থাকে; এখানে তাহাদের কথা হইতেছে না। এখানে মনু ষ্যের বিষয়ে বলা যাইতেছে ; পশুতুল্য