পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিক রুণাপুৰ্ণ জগদীশ্বর যে প্রকার আশ্চৰ্য্য কোশলে প্রতিনিয়ত অসংখ্য অসংখ্য জীৱকে অন্ন পান পরিবেসন করিতেছেন, তাহার প্রতি একবার মনোযোগ করলে অতি স্থদলশী লোকের হৃদয়েও তাছার পূর্ণ মঙ্গল ভাব প্রজ্বলিত হইয় উঠে। s' দ্বিতীয়তঃ করুণাপূর্ণ জগদীশ্বর আমাদিগের দৃষ্টি ক্রিয় ও শ্রবণ ক্রিয়াদির সহিত যে সকল অনুপম সুখের সংযোগ করিয়াদিয়াছেন, ঐ সকল সুখের সংযোগ ব্যতিরেকেও অনায়াসে আমরা দর্শন শ্রবণাদি ক্রিয় সম্পন্ন করিতে সমর্থ হইতাম, অথবা সুখের পরিবর্তে সহস্ৰ সহস্র প্রকার দুঃখ ভোগের সহিতও উল্লিখিত ইন্দ্রিয়াদির কার্য্য সম্পাদিত হইতে পারিত। তামর। এক্ষণে চক্ষু শ্রোত্রাদি ইন্দ্রিয় দ্বারা যে সকল সুখ ভোগ করিয়া থাকি, তামাদিগের দশন শ্রবণাদি ক্রিয়। নির্বাহিত হইবার জন্য তাহার কিছুমাত্র প্রয়োজন ছিল না, করুণাপূর্ণ জগদীশ্বর কেবল আমাদিগের মুখ সী ধন উদ্দেশে দৃষ্টি শ্রুতি প্রভৃতি ক্রিয়ার সহিত ঐ সফল সুখের সংযোগ করিয়াছেন, তিনি যদি করুণাপূর্ণ ন হইতেন, তাহা তইলে আমাদিগের দর্শন শ্রবণাদি ক্রিয়ার সহিত সঙ্গত্র প্রকার দুঃখের সংযোগ করিয়াদিতেন । আমরা চক্ষু কর্ণাদি ইন্দ্রির সঞ্চালন করিলে অশেষ প্রকার দুঃখ প্রাপ্ত হইতাম, অথচ সেই দুঃখের সহিতই আমাদিগের দর্শনাদি ক্রিয় সম্পন্ন হইত। আমরা এক্ষণে কোন হরিত বর্ণ শস্য ক্ষেত্র, কি কোন রমণীয় পুষ্প কানন, অথবা কোন উন্নত মহীরুহ,কি স্বনিৰ্ম্মল পুর্ণচন্দ্র,অথবা কোন বিকশিত পক্ষ কানন প্রভৃতির সৌন্দর্য্য সন্দশন করিয়া যে প্রকার মুখ ভোগ করি এবং বেমু বীণ ও বিহঙ্গাদির সুস্বর শ্রবণ করিয়া ষে প্রকার অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দ অনুভব করিয়া খাকি, তাহ না করিয়া কেবল দুঃখই প্রাপ্ত হইতাম। আমাদিগের কোমল নেত্র ক্ষেত্রে কঠিন কৰুর পৃষ্ট হইলে যে একার ক্লেশ জন্মে, সৰ্ব্ব প্রকার পদার্থের দর্শনেই তজপ দুঃখের অনুভব হইত এবং সমস্ত স্থম্বরকেই কঠোর বক্স নাদের ন্যার বোধ ছ ११ ইত এবং অতি সুকোমল সুখ-স্পর্শ পদার্থ স্পর্শ করিলেও সুতীক্ষ কণ্টক বেধের ন্যায় পীড়া জন্মিত। তিনি পুর্ণমঙ্গল স্বৰূপ ন হইলে আমরা অতি উপাদেয় দ্রব্যের স্বাদ গ্রহণ করিলেও অতি তিক্ত দুঃসেব্য দ্রব্য ভক্ষণের তুল্য যন্ত্রণ ভোগ করিতাম । আমরা লায় কোন প্রকারেই সুখী হইতে পারিতাম না, প্রত্যেক কাৰ্য্য সাধনে আমাদিগকে কেৰল সহস্র প্রকার ক্লেশ ভোগ করিতে হইত। অতএব যখন র্তাহার সমুদায় কৌশলের মধ্যে কেবলই আমাদিগের সুখোদেশ দেখিতে পাওয়া যায় তখন তাহাকে করুণাপূর্ণ মঙ্গল স্বৰূপ ভিন্ন আর আমরা কি বলিতে পারি। সাগর গর্ক্সে তাঙ্কার মঙ্গল ভবি ব্যক্ত রছিয়াছে, নক্ষত্র মণ্ডলে তাহার মঙ্গলময় মুর্তি প্রকাশ পাইতেছে, শস্য ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় মঙ্গল ভাব বিস্তার করিয়াছেন, এবং পর্বত শিখরেও র্তাঙ্গর করুণা দেদীপ্যমান প্রকাশিত রহিয়াছে। পুষ্প কাননে তাহার করুণা ব্যক্ত রহিয়াছে এবং মনুষ্য মনে তাহার দয়। বিরাজ করিতেছে, অতি স্থ কম কীটপুও উহার কৰুণ অবলম্বন করিয়া জীবন যাপন করিতেছে . এবং প্রকা গু মাতঙ্গও তাহার করুণীর আশ্রয়ে জীবিত রহিয়াছে । যে করুণাময় পরম পিতা জীব গণের রক্ষার জন্য শুষ্ক মরুভূমিতে বারিদ বৃক্ষের স্বাক্ট করিয়া পানীয় প্রাপ্তির উপায় বিধান করিয়াছেন, এবং তুষারাবৃত লাপলাও দেশেও মৃগ বিশেষের স্বষ্টি করিয়া তথাকার লোক দিগকে রক্ষা করিতে ছেন, যাহার কৃপায় গর্ভস্থ সস্তানও জরায়ু মধ্যে কালযাপন করিয়া অপনার জীবিক প্রাপ্ত হইতেছে এবং ভূমিষ্ঠ শিশুও মাতৃস্তন্য পান করিয়া সুখী হইতেছে, যিনি কেবল আমাদিগের সুখের উদেশ করিয়া সমস্ত চরাচর স্বষ্টি করিয়াছেন, তুহিকে পুর্ণ মঙ্গল করুণাময় পুরুষ বলিতে যঁনের কিছুমাত্র সংকোচ হয় না।