পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե8 এই প্রকার কর্তৃত্ব জ্ঞান এবং কৰ্ত্তব্য জ্ঞান ধর্মের এক প্রধান পুরস্কার এবং পরকালের প্রধান প্রমাণ স্থল। একবার কুপ্রবৃত্তির প্রতিস্রোতে গিয়া কে না আপনার স্বাধীনতা উপলব্ধি করিয়াছে ? স্বার্থপরতাকে বিসজ্জন দিয়া কে ম আপনাকে এ পৃথিবীর অনুপযুক্ত এবং শ্রেষ্ঠ লোকের উপযুক্ত বোধ করিয়াছে ? একটি স্বাধীন স্বতন্ত্র কার্য্য আপনার কর্তৃত্ব ও স্বাধীনতাকে যেমন ব্যক্ত করে, শত শত যুক্তিতে তেমন করিতে পারে না । একটি কষ্টসাধ্য ধৰ্ম্মকাৰ্য্য বিপক্ষবাদাদিগের যুক্তি খণ্ডনের অতি তীক্ষ অস্ত্র । আমরা এখানে পরকালের আভাস কিছু মাত্র না পাইলে আর তাহাতে দৃঢ় বিশ্বাস হইত না । আমরা এখানেই মুক্ত ভাব উপলব্ধি না করলে মুক্তর বিষয় কিছুই বুঝতে পারতাম না। এখানে আমরা বিযয়াকর্ষণকে যতবার নিরস্ত কারৰ ; মুক্ত ভাব যত উপলব্ধি করব ; পরকাল ততই মনে জাগ্রত হইয়। উঠিবে। যখন দেখিতে পাই— fবষয় স্রোতের প্রতিস্রোতই অনেক সময় গমন কারতে হয়-- ইন্দ্রিয় সুখকে বিদজন দিতে কয়--ত;াগ স্বীকার করতে হয় ; প্রবৃত্তির সহিত সংগ্রাম করতে হয় অথচ সেই সকল কার্যের পৃথিবীর সঙ্গে তাদৃশ যোগ নাই— তাছাতে সংসারেরও উন্নতি হয় না—ধনমানও উপার্জন হয় না – স্বার্থপরতাও তৃপ্ত হয় না ; তখন ইহাই প্রতীতি হয় যে আমি কেবল এই পৃথিবী লোকেরই জীব নীহ, শ্রেষ্ঠ লোকের উপযুক্ত ; জ্ঞান ও ধৰ্ম্ম শিক্ষার জন্য এই পৃথিবীতে কিছুকাল অবস্থিতি করতেছি। পশুদিগের তো এমন একটি অঙ্গ নাই, এমন একটি প্রবৃত্তি নাই, এমন কিছুই নাই, যাহা ইহ কালের সম্যক উপযোগী ন হইয়াছে ? মনুষেরই এৰূপ কেন ? জন সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষার নিমিত্তে আরো মান উপায় হইতে পারিত—পরমেশ্বর মনুষ্যকে পশুদিগের ন্যায় কেবল প্রবৃত্তির বশীভুত করিতে পারিতেন ; তিনি তাহার স্বার্থপরতাকে আরো ছুয়দশী ক তত্ত্ববোধিনী পত্রিক্ষণ রিয়া জন-সমাজের মৰ্য্যাদা রক্ষা করিতে পারিতেম। কিন্তু মনুষ্য কেবল ইহ ক্ষণলের জীব নহে বলিয়া জগদীশ্বর এন্ধপ বিধান করেন নাই । ধর্মের নিঃস্বার্থ ভাব পৃথিবীর ভাব হইতে অতি উচ্চ-সংসারের ক্ষুদ্র বিষয় সকলের একান্ত অনুপযোগী। মনুষ্য ধর্মের সহিত নিষ্কাম মিত্রতা বন্ধন করিলে আপনার বৈষয়িক ক্ষতিবৃদ্ধির আশাভয়ে বিশেষ ব্যাকুল হয়েন না, ধৰ্ম্মানুষ্ঠানেই আপনাকে পবিত্র করিয়া পৃথিবী হইতে উচ্চতর ধামের উপযুক্ত করেন । এখান হইতেই আমরা পরকালের আভাস প্রাপ্ত হইতেছি । আমরা জীবদ্দশাতেই মুক্তি লাভ করিয়া মুক্তাবস্থা কতক উপলব্ধি করিতে পারতেছি । ঈশ্বরের সহিত এখানে আমাদেব যোগ কইলে পরকালের বিশ্বাস আরো অটল হয়। ঈশ্বরের সঙ্গে এখানে একবার মন্বন্ধ নিবদ্ধ করিলে আর কেহই সে বিশ্বাসকে খণ্ডন করি ে পারেন না । এই আখ ও বিশ্বাসের উপরে নির্ভর করিয়াই প্রাচীন ঋষির বলয়া গিয়াছেন, ‘ ঘএতদ্বিস্তুরস্কৃত স্তে ডবন্তি’ “যাহার। ইহাকে জামেল, ভঁ।ঙ্গর অমর হয়েন”। ঈশ্বরের সাহিত আমাদের চিরন্তন সম্বন্ধ-মে সম্বন্ধ একবার নিবদ্ধ হইলে আর কোন কালেই তাহ নিরাকৃত হইবার নহে । জামরা ঈশ্বরের আশ্রয়ে চিরকালই অবস্থিতি করিব ; এই দৃঢ় বিশ্বাস অপেক্ষ। পরকালের দৃঢ়তর প্রমাণ আর কিছুই নাই। শুদ্ধ তর্কের তরঙ্গের উপরে পরকালের বিশ্বাস নিৰ্ম্মাণ করা কোন কার্যেরই নহে । বিপক্ষের। তকের বলে ইহা কদাপি প্রমাণ করিতে পারেন মা, যে জীবাত্মার বিনাশ বা ভঙ্গ হইবে । আমরা বরং উপমিতি দ্বারা প্রাপ্ত হইতেছি, যে জীবাত্মার বিনাশও নাই ভঙ্গও নাই । কিন্তু এই সকল তর্কের আড়ম্বরীতে আপনার বুদ্ধিকেই চরিতার্থ করা হয়। আত্ম-প্রত্যয়ে মির্জর ব্যতীত কেবল বুদ্ধির সিদ্ধান্তে মঙ্গের নিষ্ঠ হয় না। আপনাকে ভুলিয়া বিষয় স্রোতেই ভাসমান থাকিলে সে প্রত্যয়টি উৎপন্ন হইতে পারে মা ; ধৰ্ম্ম ও ঈশ্বরের গতি স্বাগ ন হইলে সে