পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (প্রথম কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা। করিয়া আমারদিগের মধ্যে কলহের অঙ্কুর রোপণ করিতে চেষ্টিত আছেন, অতএব সাবধান, তাহারদিগের বাক্য কৌশলে যেন কাহারও চিত্তে মালিন্য না হয় । বিপক্ষের সহিত বৃথা বিতর্কের ও প্রয়োজন নাই। শত্রুর ক্ৰোধ ধৈর্য্য দ্বারা শান্ত কর, এবং বাক্যের বিবাদ কায্যের দ্বারা খণ্ডন কর । যত ক্ষণ অতীষ্ট সিদ্ধ না হয়, তত ক্ষণ পৰ্য্যন্ত যেন যত্নের বিশ্রাম হয় না। নাবিক তাহার নির্দিষ্ট s দেশে উৰ্ত্তীর্ণ না হতীয়া কি ক্ষান্ত হয় ? ক্লষক । তাহার সস্য সকল পরিপকু না দেখিয়া কি যত্ন করিতে নিরস্ত হয় । অতএব প্রতিজ্ঞাকে আশ্রয় করিয়া কাৰ্য্য কর । কি জানি তোমারদিগের প্রতিজ্ঞা রক্ষা ন হয় এ নিমিত্তে কেহ কেহ এ বিষয়ের উদ্যোগ হইতে দূরস্থ থাকিতে পারে, এবং তোমারদিগকে অসম সাহসিক কৰ্ম্মে যত্নবান দেখিয়া উপহু!স করিতে পারে, কিন্তু পরের দ্বেষেতে, কুৎসাতে, বা বিক্রপে উচিত কৰ্ম্মের অনুষ্ঠান হইতে কি নিবৃত্ত হইবে । তাহারদিগের দ্বেষের ফলে তাহারাই যন্ত্রণ পাইবে । তোমারদিগের কৰ্ত্তব্য,যে ঐক্যকে বন্ধন কর, কৰ্ম্মের সোপান নিবদ্ধ কর, এবং নিন্দ প্রশংসাকে তুচ্ছ করিয়া কাৰ্য্য সাধনে অনুরক্ত থাক । এইৰূপে যখন কৃতকাৰ্য্য হইবে, তখন সকল পরিহাস নিরস্ত হইবে, বিপক্ষের বল জীর্ণ হইবে, জয়ধুনি বিস্তৃত হইবে, বান্ধবমণ্ডলী বৃদ্ধি হইবে, এবং এইক্ষণে যাহারা দূর হইতে কটাক্ষ করিতেছেন,তখন তাহারা মিশ্রিত হইতে ব্যগ্র হইবেন । -eleeli:lolole - শীলবাবুর অবৈতনিক বিদ্যালয় । পরমাঙ্কাদিত হইয় প্রকাশ করিতেছি, যে গত ২১ জ্যৈষ্ঠ সোমবারে ক্রযুক্ত বাব মতিলালশীল শিমুলিয়াতে এক অবৈতনিক বি দ্যালয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন । এই বিদ্যালয়ে >bo‘l সহস্র বালক অধ্যয়ন করিবেক। শীলবাবুকে এবিষয়ে অত্যন্ত ধন্যবাদ করিতে হয় । সাধারণের আনুকূল্য দ্বারা হিন্দু হিতাথি বিদ্যালয় স্থাপনের বিলম্ব আছে, এজন্য তিনি স্বীয় উদেষাগে স্বীয় ব্যয় দ্বার। উক্ত বিদ্যালয় স্থাপন করিলেন—হিন্দুদিগের লজ্জারক্ষা করিলেন। এমত নিঃস্বার্থ বিষয়ে এমত দাতব্যতা এদেশ মধ্যে অতি অল্প দৃষ্ট হইয়াছে। প্রতি মাসে প্রায় সহস্র মুদ্র দান! এদেশের অধিক লোক এইক্ষণে প্রায় দুই কারণে সাধারণ বিষয়ে দান করেন : এক, হাস্য আমোদাদি ইন্দ্রিয় মুখ, দ্বিতীয়, রাজবংশ ইংলণ্ডীয় লোকের নিকটে মুখ্যাতির অভিলাষ । কিন্তু এই উপস্থিত কাৰ্য্য ইন্দ্রিয় মুখের কারণ নহে, এবং ইহাতে ইংরাজদিগের নিকটে প্রতিপত্তির সম্ভাবনা দূরে থাকুক, বরঞ্চ এবিষয় খ্রীষ্টধৰ্ম্মবিস্তারের প্রতিবন্ধক প্রমুক্ত তাহার বিরক্তই থাকিতে পারেন । এইক্ষণে অামর। তাহার নিকটে এই প্রার্থনা করি, যে তিনি যেৰূপ উৎসাহ দ্বারা তাহার বিদ্যালয়ের অঙ্কুর রোপণ করিলেন, সেই ৰূপ তাহার বৃদ্ধি এবং স্থায়িত্বের প্রতি সংশয় দূর করিবার জন্য ব্যয় নিৰ্ব্বাহ যোগ্য মূলধন তদধ্যক্ষদিগের হস্তে সমর্পণ করুন । ইহ। হইলে তাহার পুণ্য প্রচুর হইবেক, এবং তাহার কীৰ্ত্তি চিরকাল দেদীপ্যমান থাকিবেক । যেমন ধনের সংস্থান করিবেন, সেইৰূপ অন্য এক বিষয়ে তাহার সাবধান হওয়া আবশ্যক । যে সকল বালক বেতন প্রদান করিতে সমর্থ হয়, তাহারদিগকে তাহার বিদ্যালয়ে যেন গ্রহণ না করেন, যেহেতু যদি তাহারদিগের দ্বারাই পাঠশালা পূর্ণ হইবে, তবে দরিদ্র সন্তানেরা কোথায় স্থান প্রাপ্ত হইবে, এবং তবে মতিলাল বাবুর অভি লাষই কি প্রকারে সিদ্ধ হইবে ? বিশেষতঃ পুত্রের বিদ্যা শিক্ষার জন্য যাহারা বেতন দিতে সমর্থ হয়েন, তাহারা ঐ দুঃখিদিগের হিতার্থ পাঠশালাতে আপন পুত্রদিগকে প্রেরণ করিতে কি লজ্জিত হয়েন না ? দরিদ্র পথিকের হিতার্থি অতিথিশালাতে ভোজন করিতে ধনি ব্যক্তি কি ঘূর্ণ বোধ করেন না ?