পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (প্রথম কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ৷ ১০১ হইয়াছে, এবং সমস্ত বদনে মাতৃস্নেহ সম্পূর্ণ প্রকাশ পাইতেছে । কনিষ্ঠাঙ্গন নানালঙ্কার ভূষিতা, বিচিত্র বস্ত্রান্বিতা, হাস্য বদন,বিবিধ ৰূপ লাবণ্য প্রকাশে অপাঙ্গ ভঙ্গিক্রমে ইতস্ততঃ দৃষ্টি করত আগমন করিতেছে । স্বভাবতঃ চাঞ্চল্য বশতঃ দ্রুতগতি দ্বারা প্রথমাঙ্গনাকে পশ্চাৎ রাখিয়া শৌনককে সম্বোধন করিয়া কহিতেছে, যে ক্ষে প্রিয় শেনিক, এতাবৎকাল পর্য্যন্ত কেন চিন্তু সাগরে মগ্ন কইয়া দুঃখিত হইতেছ? চিন্তু ও শোচনা প্রভতিকে দূরে রাখিয়া আমার এই পথে তা গমন কর, যে পথ কেবল মুগন্ধি পুষ্প দ্বারা বিস্তৃত ও নিবিড় বৃক্ষের ছায়াতে আবৃত আছে, এবং সেই সকল বৃক্ষে পক্ষিগণ মধুরস্বরে সৰ্ব্বদা কলরব করিতেছে ! এ পথের পথিকের কখন পথ শ্রান্তি নাই, কেবল অপার স্বখেতে মগ্ন থাকে ৷ এই সকল মোহ জনক বাক্য শুনিয়! শৌনক আশ্চৰ্য্যান্তঃকরণে জিজ্ঞাসা করিলেন ষে কে তুমি ! তোমার নাম কি ? অামার নাম প্রেয়, ও আমার আনুগত ব্যক্তির সৰ্ব্বদাই মুখে কাল যাপন করেন • অরি আমার পশ্চাৎ যিনি আসিতেছেন, তাহার : নাম শ্রেয়, ইষ্ঠার পরামর্শ যে কোন দুর্ভাগ্য ব্যক্তি গ্রহণ করে, তাছার আর দুঃখের সীমা থাকেন। এই কালে ঐ প্রথম যুবতী স্বভাবতঃ মৃদুগমনে সমীপে আসিয়া শেমককে কহিতেছেন, ষে হে শৌনক, তোমার শ্রদ্ধাদি নানা গুণে আকৃষ্ট প্রযুক্ত তোমার মঙ্গলাধিনী হইয় আগমন করিলাম । তুমি প্রেয় অঙ্গনার বাক্যেতে অবিজ্ঞ ব্যক্তিদিগের ন্যায় মুগ্ধ না হইয়া আমার অনুগামী হও আ মার এ পথ অবলম্বন করিলে প্রথমতঃ কিঞ্চিৎ ক্লেশ বোধ হয়, ইহা যথার্থ বটে, কিন্তু এই পথে যত প্রবিষ্ট হইবে, তত মুখের বৃদ্ধি হইৰে ; ক্রমে ইহার শেষ ভাগে উপস্থিত হইলে অনিৰ্ব্বচনীয় নিত্য সুখে সুখী হইবে । কিন্তু আমার এই এক কঠিন প্রতিজ্ঞা আছে, যে প্রেয় অঙ্গনার কাম ক্ৰোধ লোভ প্রভৃতি সৈন্যগণকে যুদ্ধেতে পরাজয় মা করিলে আমি তাঙ্কণকে আমার সমভিব্যাঙ্কারি করি না । তুমি বুদ্ধিমান, বিবেচনা করিয়া কৰ্ত্তব্য কৰ্ম্ম করিতে প্রবৃত্ত চও । প্রেয় এই সকল বাক্য শ্রবণ করিয়৷ হাস্য পূর্বক কহিতেছে, যে হে শৌনক শুনিতেছ, যে শ্রেয় কি কি কঠিন ও দুঃখ দায়ক কৰ্ম্মের সাধন করিতে তোমাকে কহিতেছেন,ইহাতে কোন কালে কি অপ্রত্যক্ষ অনিৰ্ব্বচনীয় নিত্য সুখ হইবে, তাহা উনিষ্ট জানেন । ইনি তোমার মঙ্গলাথিনী হইলে আমার অধীন কাম ক্রোধ লোভ প্রভতির সহিত যুদ্ধ করিতে কখন আদেশ করিতেন না । হা, কি আশ্চৰ্য্য ! যদি কামাদির সচিত প্রণয় থাকিলে সম্পূর্ণ মুখ প্রাপ্তি হয়, তবে কোন স্থবোধ ব্যক্তি ইহারদিগের সহিত নানা প্রকার ক্লেশ দায়ক যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইয়া দূরস্ত দুখকে আহবান করে । বৃদ্ধিমান ব্যক্তিদিগের নিকটে এতদ্রুপ দুৰূহ ও দুঃখ সাধক বাক্য কোন মতেই গ্রন্থ ক্ষয় না । অপ্রত্যক্ষ সুখ শ্বাসে প্রত্যক্ষ মুখ পারত্যাগ করা কি মূখ লোকের কৰ্ম্ম! হে প্রিয় শোনক, তুমি আমার যখন সঙ্গী হইবে, میی তখন মণিমুক্ত বিরচিত স্বর্ণময় প্রাসাদে নানা বিধ সুগন্ধি পুষ্প বিরাজিত বিচিত্রিত প র্যাঙ্কে অবস্থান করিয়া কি মুখযুক্ত হইবে । স্বয়ং বসন্তু কাল সৰ্ব্বদ মলয় মারুত প্রভৃতি নিজ অমাত্য দল লইয়। তোমার সম্মুখে দণ্ডায়মান থাকিবে, তাহাতে মলয় মারুতের মন্দমন্দাভিগমনে ও কোকিলাদি বিবিধ বিচিত্রিত পক্ষিগণের কলরব শ্রবণে কি উল্লাসিত হইবে ! স্থখ সেব্য উত্তমোত্তম মধুর ফল রসাস্বাদনে ও মুবাসিত স্থশীতল জল পানে স্নিগ্ধ হইয়া কি পরিতট চইবে } চতুর্দিকে বিবিধ বিদ্যাধরী পরমাম্বন্দরী অপসরা গণের নানা বিধ স্থস্বরে প্রকাশিত রাগ রাগিণী দ্বারা কি মোহিত হইবে । এই প্রকার নানা বিধ সুখকে পরিত্যাগ করিয়া এই দুঃখিনী দুঃখদায়িনী শ্রেয়ের পথাবলম্বন কোন্‌স্থবোধ ব্যক্তি করিয়া থাকে? এই প্রকার কনিষ্ঠাঙ্গনা শৌনককে স্বীয়