পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (প্রথম কল্প দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৩ দিনমান এবং রাত্রিমাণের সহিত উদ্ভিজ্জের ষে সম্বন্ধ তাহা মধ্যায় কালের সূর্যলোকের ন্যায় স্পষ্ট দেখিতেছি । অনেক বৃত্তান্ত শ্রবণ করা গিয়াছে, এবং অনেক প্রত্যক্ষ প্রমাণ প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে, যে বৃক্ষ গুল্ম লতাদির কতক গুলীন অন্তৰ্ব্বৰ্ত্তি ক্রিয়া প্রতি দিন নিয়ম মত পরিবর্ত হয় । সূৰ্য্যমণি নামক পুষ্প সূর্য্যোদয়ের সঙ্গে প্রফু ল্প হয়, বন্ধুজীব নামক পুষ্প মধ্যায় কালেই প্রস্ফুটিত হয়, শেফালিকা মল্লিকা জুথিকা প্রভাতি সন্ধ্যার পরে প্রকাশিত হয়, এবং কত শত পুষ্প বিদ্যমান আছে যাহারা কেবল রাত্রিকালেই বিকসিত হইয়া থাকে। দিবসের সহিত পদ্মের যে সম্বন্ধ এবং রজনীর সঙ্গিত কুমুদের যে সম্বন্ধ ইহা কাহার না বিদিত আছে ? অতএব জগদীশ্বর বিশেষ বিশেষ বৃক্ষণদিকে বিশেষ বিশেষ নিয়মের অধীন করিয়া তাহারদিগের শরীরকে এৰূপ যন্ত্ৰ ৰূপে রচনা করিয়াছেন যে তাহারদিগের নিয়মিত দৈনিক ক্রিয়া সকল যষ্টি দণ্ড অন্তরে পুনরাবৃত্ত হইয়। যথা উপযুক্ত উপকার করিতেছে । সৰ্ব্বদ সম্মুখস্থ হইলে বস্তুর সৌন্দৰ্য গ্রহণ হয় না, এবং অবিশ্রান্ত আস্বাদিত হইলে তাহার স্বাদুগ্রহণে রসন সমর্থ হয় না । কেবল দূর এবং অভাব দ্বারাই বস্তুর সমাদর হয় । যতক্ষণ আমরা ঈশ্বর দত্ত বৰ্ত্তমান অবস্থায় স্থাপিত রহিয়াছি, ততক্ষণ ইহার মৰ্য্যাদ জানিতে পারি না; কিন্তু বিবেচনা কর, দিবারাত্রির এই পরিমাণ রক্ষা করিয়া তিনি বৃক্ষলতাদির প্রাত্যহিক ক্রিয়ার পরিবর্তন কাল যদি ৪০ দণ্ড মাত্র করিতেন, তবে কি এপৃথিবীতে মুখ থাকিত । ইহাতে স্বভাবতঃ মধ্যাকু কালে যে পুষ্পজাতি একবার প্রস্ফুটিত হইয়াছে, তাহার র প্রকাশ কালীন রাত্রি থাকিলে মধ্যাহ্নের সূৰ্য্য কিরণ অভাবে সে কি প্রকাশ হইতে পারিত ? স্বভাবতঃ স্বশীতল নিশা মধ্যে যে পুষ্প জাতি একবার প্রকাশ হইয়াছে, তাহার দ্বিতীয়বার প্রকাশের সময়ে মধ্যায়ুকাল প্রাপ্ত হইলে শিশির অভাবে সে কি প্রফুল হইতে পারিত । এইৰূপে তাহারদিগের | | i তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ৷ স্বভাব বিরুতি হইতে থাকিলে কে নিবারণ করিতে সমর্থ হইত ? কিন্তু অনন্ত জ্ঞান পরমেশ্বর এই সকল দুর্ঘটনার সম্ভাবন পর্যন্ত দূর করিয়াছেন। তিনি বৃক্ষ গুল্ম লতাদির স্বভাব সৃষ্টি করিয়৷ তদুপযুক্ত দিবারাত্রির পরিমাণ করিয়াছেন,এবং দিবারাত্রির দীর্ঘত অনুসারে বৃক্ষাদির দৈনিক ক্রিয়াকাল পরিমাণ করিয়াছেন, যাহাতে পৃথিবীর মঙ্গল প্রচুর কপে বিস্তীর্ণ হইতেছে। । জন্তুরও এই প্রকার অনেক দৈনিক স্বভাব আছে । আহার, নিদ্র প্রভতি সামান্যতঃ সমুদয় জন্তুর আবশ্যক এবং পরমেশ্বর দিবারাত্রির পরিমাণের সক্তিত উক্ত সকল শারীরিক কার্য্যের এ প্রকার সম্বন্ধ রচনা করিয়াছেন যে তাছারা ঐ নির্দিষ্ট কালের মধ্যে সম্পন্ন হইলে স্থস্থতা দায়ক, এবং সম্যক স্বর্থের কারণ হয় । সকল জন্তুরই এই ৰূপ দেহের অবস্থা যে তাঙ্গার। ষষ্টি দণ্ড কালের মধ্যে আহার নিদ্রাদি স ম্পন্ন করিতে সময় প্রাপ্ত হয়, তন্মধ্যে তানেক প্রাণি জাতি দিবা ভাগে আচারাদি করে, এবং বাদুড় ও পেচক প্রভৃতি কতক গুলীন রাত্রিকালে অভ্যাহারাদি করে । যাহারণ দিবাচর তাহারা রজনীতে নিদ্রা যায়, এবং যাহারা রাত্রিচর তাহারা দিবসে নিদ্রিত থাকে । কিন্তু জন্তুদিগের ব্যবহার সহঅপ্রকার হউক,তথাপি পৃথিবীর একবার আঙ্গিক গতির মধ্যে – দিবস যামিনীর একবার পরিবর্তনের মধ্যে, তাচারদিগের আহারাদি সমুদয় কাৰ্য সম্পন্ন হইবে । க মনুষ্যের প্রকৃতিও এই পরিমিত সময়ের সম্বন্ধ হইতে অতিরিক্ত নহে । মনুষ্য উত্তমাধম সমুদয় ব্যাপার স্পষ্ট ৰূপে দর্শন করিয়া সংসার নির্বাহে নিযুক্ত থাকিবেন এই জন্য জগদীশ্বর আলোকযুক্ত দিব মাণ করিয়া দিয়াছেন । সমস্ত দিবসের পরিশ্রমে ক্লিষ্ট হইলে তিনি কিয়ৎকাল বিশ্রান্ত হইবেন এই নিমিত্তে তাহার স্বভাব যোগ্য রজনীর সৃষ্টি ও পরিমাণ করিয়াছেন যে তখন লোকালয় সকল ৰিষয়