অনেকক্ষণ ধ’রে তর্কবিতর্ক চলে, কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত হয় না—আমরা কোনও মতে তাঁর কথা স্বীকার করতে পারিনি। শেষে তিনি বলেন, “এটা আমার আদেশ—পালন করতে হবে।” তারপর প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা সে আদেশ শিরোধার্য্য করলুম।
তাঁর জ্যেষ্ঠা কন্যা বিবাহিতা—তাঁর উপর তাঁর অধিকার বা দাবী নাই, সেইজন্য তাঁকে পাঠাতে পারলেন না। কনিষ্ঠা কন্যা তখন বাগ্দত্তা—তাঁকে পাঠান উচিত কি না—সে বিষয়ে ভীষণ তর্ক হ’ল। তিনি পাঠাতে চান—কন্যারও যাবার অত্যন্ত ইচ্ছা; কিন্তু অন্যান্য সকলের মত—তাঁকে পাঠান উচিত নয়। কারণ একেই তিনি অসুস্থ, তারপর আবার বাগ্দত্তা—শীঘ্রই বিবাহ হবার কথা। এ ক্ষেত্রে দেশবন্ধু সাধারণের মত স্বীকার করতে বাধ্য হলেন। শেষে সিদ্ধান্ত হ’ল সর্ব্বপ্রথমে ভোম্বল যাবে—তারপর বাসন্তী দেবী ও উর্ম্মিলা দেবী যাবেন—এবং তাঁর ডাক যে-মুহূর্ত্তে আসবে তখনই যাবার জন্য তিনি প্রস্তুত থাকবেন।
বাহিরের ঘটনা সকলেই জানে। কিন্তু এই ঘটনার মুলে—লোকচক্ষুর অন্তরালে যে ভাব, যে আদর্শ যে প্রেরণা নিহিত রয়েছে—তার সন্ধান কয়জন রাখে? তাঁর সাধনা শুধু নিজেকে নিয়ে নয়—তাঁর সাধনা তাঁর সমস্ত পরিবারকে নিয়ে।
আমার মনে হয় যে, মহাপুরুষের মহত্ব বড় বড় ঘটনার চেয়ে ছোট ছোট ঘটনার ভিতর দিয়েই বেশী ফুটে উঠে। আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের ‘বসুমতী’তে আমি দেশবন্ধুর সহকর্ম্মী ও অনুগত কর্ম্মীদের লেখা সযত্নে পড়লুম। অধিকাংশ লেখাই ভাসা ভাসা রকমের এবং কতকগুলো বাঁধা শব্দের পুনরুক্তিতেই পরিপূর্ণ, কেবল আপনি একা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনার