পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গোড়ার কথা
২১

কোনও দিকেই প্রকৃত মানুষের অভাব কখনও হয় না। বাঙ্গলার সাধনা এখনও পূর্ণাবয়ব ও সর্ব্বাঙ্গসুন্দর হয় নাই—সেইজন্য মনীষী বা নায়কের প্রস্থানের পর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আসন অধিকৃত হয় না!

 সর্ব্বাঙ্গসম্পন্ন জাতিকে চোখের সামনে রেখে জাতীয় সাধনায় প্রবৃত্ত না হলে—সে সাধনা কখনও জয়যুক্ত ও সাফল্যমণ্ডিত হবে না। জাতীয় জীবনের বহুদিক আছে—সব দিক দিয়েই জাতিকে গড়ে তুলতে হবে। প্রাণের বন্যা যখন জাতির শরীরে প্রবেশ করবে তখন সব দিক দিয়েই তার বিকাশ হওয়া চাই। তা না হলে যে বস্তুর সৃষ্টি হবে তা কখনও সর্ব্বাঙ্গসুন্দর হতে পারে না।

 তরুণ বাঙ্গলাকে আত্মস্থ হতে হবে। বাহ্য শক্তির উপর নির্ভর না করে তাকে স্বাবলম্বী হতে হবে। নূতন জাতি সৃষ্টির দায়িত্ব আজ তরুণ সম্প্রদায়ের উপর ন্যস্ত। এত বড় দায়িত্বপূর্ণ কর্ত্তব্য সম্পাদন করতে হলে জীবন পণ করে সাধনায় প্রবৃত্ত হতে হবে। আশার কথা এই যে, চারিদিকে এই সাধনার বিপুল আয়োজন চলছে। এই বিরাট যজ্ঞে শুধু আমরাই নিশ্চেষ্ট হয়ে থাকব? তা হতেই পারে না; তাই বলি—হে আমার তরুণ জীবনের দল! এসো, আমরাও এই বাণী উচ্চারণ করে বেদীর সম্মুখে উপস্থিত হই—

“মন্ত্রং বা সাধয়েয়ম্‌ শরীরং বা পাতয়েয়ম্‌"

আশ্বিন, ১৩৩৩।