পাতা:তামাকের দোষ গুণ ও ইতিহাস.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তামাকের দোষ গুণ ও ইতিহাস।
২৯

ভ্রম হইয়াছে। ডাক্তার অন্নদাচরণ কাস্তগিরি বলেন, যে ব্যক্তির ৮০ বৎসর বাঁচিবার সম্ভাবনা সে যদি তামাক সেবন অভ্যাস করে তাহা হইলে তাহার ৬০ বৎসরের মধ্যে মৃত্যু হইবার সম্ভাবনা। প্রিয় পাঠক! ইহা যে, কেবল কাস্তগিরি মহাশয়ের স্বকপোলকল্পিত তাহা মনে করিবেন না। ঘোরান্ধকার তমোময়ী নিশার প্রদীপ্ত নক্ষত্র সদৃশ উনবিংশ শতাব্দী সমুদ্ভুত ইউরোপীয় ভিষককুল-রত্বগণ একবাক্যে কহেন যে, তামাকে জীবনী শক্তির হ্রাস হয়।

 বহুকাল হইতে তাম্রকূট ব্যবহার করাতে ইহার বীর্ষ্যাংশ (নিকোটাইন্) আমাদের শোণিতে পুরুষানুক্রমে চালিত হইয়া আসিতেছে। সেই জন্য আমরা এক্ষণে আর উহার তত উগ্র মাদকতাশক্তি অনুভব করিতে পারি না। যেমন গাঁজা কিম্বা অহিফেনের আরক কিম্বা মলম যে সকল পীড়ায় ব্যবহার করিলে উপকার হয় দেখিতে পাওয়া যায়, সেই পীড়াক্রান্ত ব্যক্তির যদি উপর্যুক্ত মাদক সেবন অভ্যাস থাকে, তাহা হইলে উহার দ্বারা সে উপকার লাভ হয় না। এমন কি চিকিৎসকেরা ধনুষ্টঙ্কার রোগে, ইউরোপীয়দিগকে গাঁজার সার ব্যবস্থা করাইয়া যে প্রকার সুফল লাভ করেন, ভারতবর্ষীয়দিগকে ঐ ঔষধ ব্যবহার করাইয়া সে প্রকার ফল লাভ করেন না। তাঁহারা উহার কারণ এই প্রকার বলেন যে, ইউরোপ অপেক্ষা ভারতবর্ষীয়গণ অধিক পরিমাণে গাঁজা ব্যবহার করেন। হায়! কি পরিতাপের বিষয়!