তামাকের বিষ পুরুষানুক্রমে আমাদের শরীরকে রুগ্ন, হীনবল ও অল্পায়ু করিয়া আনিতেছে, তাহার আর সন্দেহ নাই। আশু সুখাভিলাষী বঙ্গসন্তান স্থির করিয়াছেন যে, পিতার বয়স অপেক্ষা পুত্রের বয়স বিধাতা অল্প করিয়া দিয়াছেন। পিতা যত দিবস ইহলোকের মুখ ভোগ করিয়া পরলোকে গমন করিবেন; সন্তান অন্ততঃ তাহার একদিনও অল্প ভোগ করিবেন।
কি আশ্চর্য্য! পূর্ব্বেই বলিয়ছি, আমরা অমায়িক। কিছুতেই আমাদের পক্ষাঘাতগ্রস্ত শরীরে বেদনা বোধ হয় না। আমরা রোগী হইয়াও যোগীর ন্যায় বসিয়া আছি। দেখ মুসলমান বিজয়ের পূর্ব্বে বাঙ্গাল অন্ততঃ দুই তিন বার ভিন্ন জাতি, ভিন্ন ধর্ম্মী কর্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল। ইহারা সকলেই স্বীয় স্বীয় নিশান বঙ্গবাসীর অন্তর বাহিরে রাখিয়া গিয়াছে। আমরা অদ্যাপি সেই সকল কলঙ্ক-তিলক সর্ব্বাঙ্গে ধারণ করিয়া আছি। বৌদ্ধেরা আসিয়া মঠমন্দির নির্ম্মাণ করিল, আমরা ভাঙ্গি নাই। সন্তাল আসিয়া বাঙ্গালার সর্বাঙ্গে কালি ঢালিয়া দিল, এখনও ঘুচে নাই; বক্ষে রক্ত ছিটাইয়া দিল, আমরা তাহা এখনও মুছি নাই। সেনবংশ কুল-ধ্বজা প্রোথিত করিয়াছেন, গৃহে গৃহে এখনও উড়িতেছে। মুসলমান আগুন লাগাইয়া দিয়া চলিয়া গিয়াছে, বাঙ্গালা এখনও পুড়িতেছে। দেখিতে দেখিতে বঙ্গবাসী যে প্রকার রুগ্ন, ভীনবল ও অল্পায়ু হইলেন এত আর কুত্রাপি দেখা যায় না। উপর্য্যুক্ত শোচনীয় দশা উপস্থিত হইবার যতগুলি