পাতা:তারাচরিত.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।

সুরতন এইরূপ দুর্দ্দশাপন্ন হইয়া অরবলী পর্ব্বতের পাদদেশে মিওরার রাজ্যের অন্তর্গত বেডনোর নগরে আসিয়া বাস করিলেন। সেই সময়ট যে তাঁহার পক্ষে কি দুঃসময় তাহা মনে করিলে ব্যক্তিমাত্রেরই অনিবার্য্য শোকের উদ্রেক হইয়। থাকে। অসীম রাজ্যাধিকারী যে এমন করিয়া দুর্দ্দশাপন্ন হইবেন তাহা মনুষ্যের বুদ্ধির অগোচর। কিন্তু জগতে কাহার ভাগ্য সকল সময়ে সমান থাকে না। তিনি এত দুঃখে পড়িলেও পরমেশ্বর তাঁহাকে নিতান্ত নিরাশ করিলেন না। তিনি বেডনোর প্রদেশের সর্দারি প্রাপ্ত হইলেন। সুরতনের সহধর্ম্মিণী অতি অল্প কালেই কালের করাল গ্রাসে প্রবেশ করিয়াছিলেন। সুতরাং তাহার সন্তান সন্ততি অধিক হয় নাই, কেবল তিনি তারা নামে এক অসামান্য সুন্দরী কন্যা প্রসব করিয়াছিলেন। তারা মাতৃহীন হইলেও পিতার যত্নে দিন দিন শশি-কলার ন্যায় বাড়িতে লাগিলেন। তারা পিতৃ বংশের পূর্ব্বাবস্থা স্মরণ ও বর্তমান অবস্থা অবলোকন করিয়া বাল্যকাল অবধি অবলারঞ্জন বেশ ভূষা পরিত্যাগ করিয়া যুদ্ধ বিদ্যা শিক্ষা করিতে লাগিলেন। তিনি যে কুমারীজনোচিত বেশ ভূষা পরিত্যাগ করিয়াছিলেন তাহাতে তাঁহার রূপ বরং সমধিক উজ্বল ভাবই ধারণ করিয়াছিল। তাঁহাকে যে দেখিত সেই বলিত যে আহা কি মনোহর রূপ! এরূপ মোহিনী মূর্ত্তি কখন কাহার নয়ন দর্পণে প্রতিবিম্বিত হইয়াছে কি না সন্দেহ! সকলেই ভাবিতেন এ রূপ কল্পিত না প্রকৃত তাহা স্থির করা সহজ নহে। তাঁহাকে দেখিলেই