পাতা:তারাচরিত.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
১৩

নাম পৃথ্বীরাজ। তৃতীয়ের নাম জয়মল। অসীম শৌর্য্যশালী পৃথ্বীরাজের সহিত সর্ব্বজ্যেষ্ঠ মহাবীর সংগ্রামসিংহের বিবাদ বিতণ্ডা ও সংগ্রাম হয়। সেই অনৈসর্গিক দ্বন্দ যুদ্ধে সংগ্রামসিংহ বিকলাঙ্গ হইয়া স্বদেশ পরিত্যাগপূর্বক কিছুকাল অজ্ঞাতবাস অবলম্বন করেন। মহারাজ রায়মল এই সকল বৃত্তান্ত অবগত হইয়া যারপর নাই অসন্তুষ্ট হন। তিনি পৃথ্বীকে ডাকাইয়া বলিলেন, “বাপু হে তোমার বিস্তর বাহুবল আছে, যুবরাজ তোমার অসীম বীরত্ব প্রভাবে মাতৃভূমি পরিত্যাগ করিয়া অজ্ঞাতবাস স্বীকার করিয়াছেন। অধিক আর কি বলিব তোমার যথায় ইচ্ছা গমন কর। এখানে কষ্ট সহিয়া থাকিবার কোন প্রয়োজন নাই। স্বীয় বীরত্ব ও বাহুবল প্রভাবে অনায়াসে কালাতিপাত করিতে পারিবে”। কুমার পৃথ্বীরাজ মহারাজের এই হৃদয়ভেদী মর্ম্মপীড়ক বচনাবলি শ্রবণ করিয়া ক্ষণেক অচল প্রায় হইয়া ভাবিতে লাগিলেন, যেমন অনুচিত কাজ করিয়াছি তাহার উপযুক্ত প্রতিফল অদ্য বিধাতা আমাকে দিলেন। যাহা হউক পিতৃআজ্ঞা শিরোধার্য্য। গমন করাই উচিত হইতেছে। রাজআজ্ঞাও অবশ্য পালনীয়া। এই ভাবিয়া পৃথ্বীরাজ রাজবাটী পরিত্যাগ করিলেন। সেই অবধি জয়মল কনিষ্ঠ পুত্র হইয়াও যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হইয়াছিলেন। এক্ষণে তাহার মৃত্যুর পর বৃদ্ধ বিচক্ষণ সদ্বিবেচক সচিবগণের সুপরামর্শে মহারাজ পৃথ্বীরাজকে দেশে আনাইলেন। তিনি যে সকল বীরপুরুষোচিত কীর্ত্তিকলাপ দ্বারা দিগন্তব্যাপিনী প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছেন