পাতা:তারাচরিত.pdf/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৩১

 এদিকে নগরী উৎসবান্বিত হইতে লাগিল। অসংখ্য লোক ক্রমে ক্রমে দিগদিগন্তর হইতে আসিল। সকলেই তারার বিবাহের প্রতীক্ষা করিতে লাগিল। কেহ বলিতেছে যেমন উপযুক্ত পাত্র তেমনি আমাদের রাজকুমারী; আহা বিধাতা কি অপূর্ব্ব নয়ন রঞ্জনই মিলন করিয়াছিলেন; এমন না হইলে কি শোভা পাইত। আর কেহ বলিতেছে যে ওহে ভাই এমন অযুক্ত কথা গুলা কেন প্রয়োগ করিতেছ, করি মস্তকেই গজমুক্তার শোভা হইয়া থাকে, মুক্তার মালা কখন ক্রীড়াশীল বানরের গলায় শোভা পায় না; আর দেখ প্রফুল্প শতদল কথন শুষ্ক সরোবরের শোভা সম্পাদন করে না; নক্ষত্র বেষ্টিত না হইলে কি চন্দ্রমার শোভা হয়, তাহা আবার বলিতেছ কি। এইরূপে কোথাও হাস্য, কোথাও পরিহাস, কোথাও বাকবিতণ্ডা হইতে লাগিল। ক্রমে ক্রমে রাজকুমারীর বিবাহের দিন নিকটবর্ত্তী হইতে লাগিল। রাও সুরতন একবারে অপত্য মায়ায় বশীভূত হইতে লাগিলেন। ভাবিলেন কেমন করিয়া আমি তারাকে শ্বশুরগৃহে প্রেরণ করিব; আহা তারা যে আমার হৃদয়ালোক, কেমন করিয়া আমি অন্ধকারে থাকিব; আমার প্রফুল্ল কমলিনী কোথায় পাঠাইব; আমি তারাধনে না দেখিতে পাইয়া কেমন করিয়া নয়নতারা মুদ্রিত করিব। এই রকমে মহারাজ মায়ায় মুগ্ধ হইয়া অপত্য স্নেহে কতই কি হৃদয় মধ্যে আন্দোলন করিতে লাগিলেন। এদিকে তারার বিবাহের দিন উপস্থিত হইল। নগরী আলোকাকীর্ণ হইল। পথ ঘাট সকল পরি