পাতা:তারাচরিত.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
তারাচরিত।

আমি কেমন করিয়া বিস্মৃত হইব! আমার নিমিত্ত তুমি যে কত কষ্ট স্বীকার করিয়াছ তাহা এক মুখে বলিতে পালি না। সজনি তোমাকে আমি ভুলিতে পারিব না, কিন্তু সখি তুমি আমাকে ভুলিয়া যাইবে, কারণ আমা হইতে তোমার কোন উপকার হইল না, কেবল আমি তোমাকে আমার বিপদের ভাগীই করিলাম। এই বলিতে বলিতে তারার নয়ন যুগল হইতে দরদরিত অশ্রুধারা পড়িতে লাগিল। পরিশেষে তারা অতি কষ্টে রোদনের বেগ সম্বরণ করিয়া মালতীর হাত ধরিয়া বলিলেন সখি আমার একটা শেষ অনুরোধ রক্ষা করিতে হইবে; সখি আমি অদ্য হইতে তোমার নিকট পিতাকে সমর্পণ করিলাম, যে পর্য্যন্ত আমি প্রত্যাগমন না করি সেই পর্যন্ত তুমি আমার স্থানীয় হইয়া পিতার পরিচর্যা কর। এই কথা শুনিবামাত্র মালতীর কোমল গণ্ডস্থল বহিয়া অশ্রুধারা পড়িতে লাগিল। তিনি বলিলেন সখি আমাকে পরিত্যাগ করিয়া কোথায় যাইবে! আমি কেমন করিয়া তোমার বিচ্ছেদে প্রাণ ধারণ করিব! তোমার শারদীয় চন্দ্রসম বদন শোভা আমি যে এক ক্ষণ না দেখিয়া থাকিতে পারি না। উঃ! সখিরে আমি কেমন করিয়া প্রাণ থাকিতে তোমার বিচ্ছেদ সহ্য করিব বল। সজনি আমি যে কোনরূপ মনঃকষ্ট পাইলে তোমার নিকট জুড়াইতাম, অদ্য আমি যেই বিশ্রাম স্থল কোথায় করিব। তোমার নিমিত্ত রাজবাড়ী অন্ধকার হইবে। তোমার স্নেহ বিগলিত বচন আমি শুনিয়া যে কর্ণকুহর পরিতৃপ্ত করিতাম; হায় অদ্য আর সেই