পাতা:তারাচরিত.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৪৩

ছেন। হায় যে দিনে অকস্মাৎ এই সুখের সাগর একবারে শুষ্ক হইবে, যে দিনে বিধাতার লিখনানুসারে এক অশনিপাতে দুই জনের প্রাণ যাইবে, সেই দুর্দিন প্রভাত হইতে চলিল। সেই উপস্থিত ভয়ঙ্কর ঘটনা আমি কেমন করিয়া বলিব। রে বিধাতঃ! তোমার মনে কি এতই ছিল! হায় কেমন করিয়া এই নবীন দম্পতী কুসুমকে অকালে হরণ করিবি! হায়, তোমার নিকট, কি ধনবান কি নির্ধন, কি শৌর্য্যবীর্য্যশালী পুরুষ কি নির্ব্বল কিছুরই বিচার নাই। রে কাল! তোমার কঠিন দন্তে সকলই চূর্ণ হইতেছে। তোমার মায়া নাই, দয়া নাই। তোমার হৃদয় কি পাষাণে নির্ম্মিত যে কাহার উপর দৃষ্টিপাত কর না? তুমি রাজা দেখিয়াও ভয় পাও না, তুমি গরিব দেখিয়াও দয়া কর না। তোমার কি একই গতি। তোমার কি কিছুই বিবেচনা নাই! তোমাকে বিনয় করি আর কাহাকেও এই রূপ করিও না। মনুয্যের সাধ্য কি যে তোমার গতি নিরোধ করে। তোমার সাহায্যেই সকল হইতেছে, অথবা, তুমিই সকল করিতেছ, কেবল মনুষ্য নিয়তির ভাগী হইয়া দুর্নামগ্রস্ত হইতেছে। যাহা হউক তোমাকে ধন্য! যে তোমার করাল কবলে একবার পড়িয়াছে তাহার আর নিস্তার নাই। উঃ তুমি কি কঠিন হৃদয়! এই অপরিসীম রূপ রাসি দেখিয়া কি তোমার হৃদয়ে দয়া হইতেছে না!