পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৮৮

হইয়া গিয়াছে। সে কাঁধের গামছা তুলিয়া নিয়া দুই চোখে চাপা দিয়াছে।

 তাহাদিগকে আর চেনা যায় না। কিশোরের নৌকার একটি নারী-হৃদয়ের তখন সকল বাঁধ ভাঙ্গিয়া কান্নার প্লাবন ছুটিয়াছে।


 সারা বেলা নৌকা বাহিয়া, বিকাল পড়িলে তিলকের মাথায় এক সমস্যা আসিয়া ঢুকিল। খানিক ভাবিয়া নিয়া, নিজেনিজেই সেই সমস্যার সমাধান করিয়া বলিল, ‘ডাকাইতের মুল্লুক দিয়া নাও চালামু, তার মধ্যে আবার মাইয়ালোক। আমি কই, কিশোর, তুমি একখান কাম কর। পাটাতনের তলে বিছ্‌না পাত। কেউ যেমুন না দেখে, না জানে।’

 কিশোর নৌকার তলায় কাঁথা বালিশ দিয়া বধূর প্রবাসজীবনের স্থায়ী শয্যা রচনা করিল।

 রাত্রি হইলে এক স্থানে নৌকা বাঁধিয়া রান্না-খাওয়া সারিল, বৌকে তুলিয়া খাওয়াইল, আবার সেইখানেই লুকাইয়া রাখিল।

 শুইবার সময় কিশোরের হাবভাব লক্ষ্য করিতে করিতে তিলক এক ধমক দিয়া বলিল, ‘আমি বুড়া-মাইন্‌ষে একখান কথা কইয়া থুই কিশোর, নাওয়ের ডরার ভিত্‌রে নজর লাগাইও না কিন্তুক্।’

 লজ্জা পাইয়া কিশোর সুবলকে লইয়া এক বিছানায় শুইয়া পড়িল।

 পরের দিন আবার আঁধার থাকিতে নাও খুলিয়া দিল।