তিলকের এমনই কড়া শাসন যে, তাহাকে স্পর্শ করাত দূরের কথা তাহাকে চোখে দেখার পর্যন্ত উপায় নাই। খাওয়ানো-শোওয়ানোর ভার পড়িয়াছে সুবলের উপর। কিশোর নিজে নৌকার মালিক হইয়াও এ বিষয়ে তিলকের আইন মানিয়া লইতে বাধ্য হইল।
নৌকার পাছায় কোড়া টানিতে টানিতে সুবল জিজ্ঞাসা করিল, ‘অ দাদা, বৌ তুমি মনের মতন পাইছ ত?’
কিশোর সলজ্জভাবে হাসিয়া বলিল, ‘কি কইরা কইরে ভাই। ভাল কইরা দেখলাম না, জানলাম না। কোন্ দিন দেখছিলাম, মনেঅ নাই। বিস্মরণ হইয়া গেছে। অখন আর চেহারা-নবুনা মনেই পড়ে না। কেউ বদলাইয়া দিয়া গেলেও চিন্তে পারুম না।’
চৈত্রমাস গিয়াছে। গ্রীষ্মের বৈশাখেই এ নদীতে জল বাড়িতে থাকে আর উজানি স্রোত বহিতে শুরু করে। নদীর তীরে ধান ক্ষেত, পাট ক্ষেত। তার সরু আল অবধি জল লুটাইয়া পরিয়াছে। গুণের কাঠি হাতে লইয়া কিশোর লাফ দিয়া তীরে নামিল।
কিশোর অমানুষিক শক্তিতে গুণ টানে আর নৌকা সাপের মত সাঁতার দিয়া স্রোত ঠেলিয়া চলে। লম্বা গুণ। অনেক দূরে থাকিয়া টানিতেছে। সুবল হাল ঠিক রাখিয়া তাহার দিকে চাহিয়া চাহিয়া দেখিতেছে। তাহাকে ছোট দেখাইতেছে। একটি জায়গা হইতে নদীর পার ডুবিতে